এবার এলপিজি সিলিন্ডারের মেয়াদ উত্তীর্ন নিয়ে একটি পোস্ট ভাইরাল হল ফেসবুকে।
'হরেন পাতার' নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী একটি পোস্ট করে দাবি করেছেন, "আমাদের মধ্যে ৯৯% লোকই এটি জানে না যে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের গায়ে মেয়াদ উত্তীর্ণের দিন লেখা থাকে। তাই দুর্ভাগ্যবশত এটাই কারণ হয়ে দাঁড়ায় কোনো দুর্ঘটনার।
এর পরে মেয়াদ উত্তীর্ন দিন কীভাবে বোঝা যাবে তারও একটি বিবরণ দেওয়া হয়েছে এই পোস্টে।
তদন্তে নেমে আমরা রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েলের ওয়েবসাইটে গিয়ে খোঁজ শুরু করি। সেখানে গ্রাহকদের জন্য নির্দিষ্ঠ ম্যানুয়ালের একটি পাতায় বলা হয়েছে যে এলপিজি সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে কোনও মেয়াদ উত্তীর্ন দিন হয়ে না। সিলিন্ডারের গায়ে যে সঙ্কেতটি দেওয়া থাকে তা থেকে সিলিন্ডারটিকে ফের কবে পরীক্ষা করা হবে তার একটি আভাস পাওয়া যায় মাত্র।
এই সঙ্কেতের প্রথমেই ইংরেজি হরফের এ, বি সি ও ডি-র মধ্যে একটি অক্ষর থাকবে। এই অক্ষরগুলো কোন ত্রৈমাসিকে সিলিন্ডারটি পুনরায় ;পরীক্ষা করতে হবে তা চিহ্নিত করে। এর পরে আরও দুটি সংখ্যা থাকে যা বছরকে চিহ্নিত করে। ধরুন যদি সিলিন্ডারের গায়ে এ-২১ লেখা থাকে, তার মানে ২০২১ সালের জানুয়ারী থেকে মার্চ মাসের মধ্যে এই সিলিন্ডারটির পরীক্ষা করাতে হবে।
এই ম্যানুয়ালটিতে পরিষ্কার লেখা রয়েছে যে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও ঘটনা চোখে পড়েনি যেখানে পরীক্ষার মেয়াদ উত্তীর্ন হয়ে গিয়েছে এমন সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ ঘটেছে। এর কারণ, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলোর প্ল্যান্টগুলোতে রীতিমত অঙ্ক কষে একটি প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়। এই প্রক্রিয়াতে যে সিলিন্ডারগুলোর পরিক্ষার দিন এগিয়ে আসে সেগুলোকে সময়ে থাকতে থাকতে সরিয়ে ফেলা হয়, যাতে সেগুলো কোনওভাবেই বাজারে না পৌঁছাতে পারে।
ইন্ডিয়ান অয়েলের এলপিজি বিভাগের একজন উচ্চপদস্থ অফিসার আজতককে জানিয়েছেন, "পরীক্ষার দিন উত্তীর্ন হওয়া মানেই যে এলপিজি সিলিন্ডারের মেয়াদ উত্তীর্ন হল এমনটা নয়। দ্বিতীয়ত, শুধুমাত্র যদি কারুর বাড়িতে এলপিজি সিলিন্ডার অন্তত এক বছরের বেশি সময়ে ধরে পরে থাকে তবেই পরীক্ষার দিন পেরিয়ে যাওয়া সিলিন্ডারের খোঁজ মেলার কথা। যে প্রক্রিয়াতে পরীক্ষা হতে চলা সিলিন্ডারগুলোকে আলাদা করে দেওয়া হয় তাতে কোনও মতেই পরিক্ষার দিন পেরিয়ে যাওয়া সিলিন্ডার বাজারে পৌঁছাতে পারে না।
সুতরাং, এই পোস্টের দাবি যে বিভ্রান্তিকর তা বলাইবাহুল্য।
রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের গায়ে মেয়াদ উত্তীর্ণের দিন লেখা থাকে। মেয়াদ উত্তীর্ন সিলিন্ডার ব্যবহারের জন্যই দুর্ঘটনা ঘটে।
রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের মেয়াদ উত্তীর্ণের দিন থাকে না। সিলিন্ডারের গায়ে খোদাই করে যে সূত্রটি লেখা থাকে তা থেকে গ্যাসের পরবর্তী পরীক্ষার দিনের একটি আভাস পাওয়া যায়। তবে যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করে পরীক্ষা হতে চলা সিলিন্ডারগুলোকে প্ল্যান্টে আলাদা করে দেওয়া হয়, তাতে সেই সিলিন্ডারগুলো কোনওভাবেই বাজারে পৌঁছাতে পারে না।