Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: উত্তর প্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতনের মিথ্যে অভিযোগ তুলে প্রচার আগ্রার অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিও’র ব্যক্তির হাত-পা ও মুখ বেঁধে গাড়ির ডিকিতে করে নিয়ে যায়নি উত্তর প্রদেশ পুলিশ। বরং চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর হরদেব সিং নামক ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ তুলে তার নিজের ছেলে ও শ্যালক তাকে অপহরণ করে উত্তর প্রদেশের আগ্রার খান্ডৌলি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 06 Oct 2025,
  • अपडेटेड 4:22 PM IST

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি মর্মান্তিক ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে একটি গাড়ির ডিকির ভিতর থেকে হাতা-পা ও মুখ বাধা এক ব্যক্তিকে বের করতে দেখা যাচ্ছে কয়েকজন পুলিশ কর্মীকে। অন্যদিকে পুরো ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করার পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করার জন্য পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়াতে দেখা যাচ্ছে সেখানে উপস্থিত উত্তেজিত জনতাকে।

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব সীমা ছাড়িয়ে একজন অসহায় ব্যক্তির হাত-পা ও মুখ বেঁধে গাড়ির ডিকিতে করে নিয়ে এসেছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের মানবাধিকার লংঙ্ঘনের নির্লজ্জ রূপ দেশের সামনে! উত্তপ্রদেশের পুলিশের এমন বর্বর অমানবিকতায়  ক্ষোভে ফুঁসছে সারা দেশ!” (সব বানান অপরিবর্তিত) 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিও’র ব্যক্তির হাত-পা ও মুখ বেঁধে গাড়ির ডিকিতে করে নিয়ে যায়নি উত্তর প্রদেশ পুলিশ। বরং চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর হরদেব সিং নামক ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ তুলে তার নিজের ছেলে ও শ্যালক তাকে অপহরণ করে উত্তর প্রদেশের আগ্রার খান্ডৌলি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।

আরও পড়ুন

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল ভিডিও এবং দাবির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম সংগ্রহ করে সেগুলি গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর একটি ইউটিউব চ্যানেলে এই একই ভিডিও’র একটি বর্ধিত সংস্করণ পাওয়া যায়। ভিডিও’র শিরোনামে উল্লেখ করা হয়েছে, “আগ্রায় কৃষক অপহৃত, গাড়ির ডিকি থেকে উদ্ধার, স্ত্রী ও ভাইদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ।” 


এরপর উক্ত সূত্র ধরে পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে ভাইরাল ভিডিও এবং এর স্ক্রিনশট-সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই সব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভাইরাল ভিডিওটি চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর উত্তর প্রদেশের আগ্রা জেলার খান্ডৌলি পুলিশ ফাঁড়ির সামনে তোলা হয়েছিল। পাশাপাশি ভিডিওতে গাড়ির ডিকির ভিতরে হাত-পা ও মুখ বাধা অবস্থায় যে ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে তার নাম হরদেব সিং। পারিবারিক বিবাদের জেরে স্থানীয় খেদিয়া গ্রামের বাসিন্দা হরদেব তার স্ত্রী লক্ষ্মী দেবীকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। তখন মাকে মারধরের ঘটনায় তাদের ছেলে নিখিল সিং বাবা হরদেবের বিরুদ্ধে তার মামা তথা হরদেবের শ্যালক রাজপালের কাছে অভিযোগ জানায়।

Advertisement

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, এরপর রাজপাল তার কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে ৪ সেপ্টেম্বর সকালে খেদিয়া গ্রামে আসে। সেখানে নিখিলের সঙ্গে মিলে তারা হরদেবকে প্রথমে মারধর করে এবং পরবর্তীতে তার হাত-পা ও মুখ বেঁধে গাড়ির ডিকিতে করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এমতো অবস্থায় গ্রামবাসীরা তাদেরকে ধাওয়া করলে তারা স্থানীয় খান্ডৌলি পুলিশ ফাঁড়িতে গাড়িটি থামায় এবং পুলিশকে ঘটনাটি সম্পর্কে জানায়। তখন পুলিশ হরদেবকে গাড়ির ডিকি থেকে উদ্ধার করে এবং তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এই ঘটনায় হরদেবের  শ্যালক রাজপাল-সহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাশাপাশি অপহরণে ব্যবহৃত গাড়িটিও আটক করা হয়। 

অন্যদিকে, গত ৪ সেপ্টেম্বর আগ্রা পুলিশ কমিশনারেটের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেল থেকে এই ঘটনা সংক্রান্ত একটি টুইট পাওয়া যায়। সেখানেও এই একই তথ্য উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, “পারিবারিক বিবাদের জেরে স্বামী তার স্ত্রীকে মারধর করে। আক্রান্ত স্ত্রী বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে, মহিলার ছেলে এবং ভাই অভিযুক্ত স্বামীর হাত-পা বেঁধে তাদের গাড়িতে করে থানায় নিয়ে আসে। খান্ডৌলি পুলিশ এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে।”

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, আগ্রায় ছেলে ও শ্যালকের দ্বারা অপহৃত ব্যক্তির ভিডিও উত্তর প্রদেশ পুলিশের নির্যাতনের দৃশ্য দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছে।

Fact Check

Claim

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একজন অসহায় ব্যক্তির হাত-পা ও মুখ বেঁধে গাড়ির ডিকিতে করে নিয়ে এসেছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ।

Conclusion

ভাইরাল ভিডিও’র ব্যক্তির হাত-পা ও মুখ বেঁধে গাড়ির ডিকিতে করে নিয়ে যায়নি উত্তর প্রদেশ পুলিশ। বরং স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে গত ৪ সেপ্টেম্বর ওই ব্যক্তির ছেলে এবং শ্যালক তাকে অপহরণ করে উত্তর প্রদেশের আগ্রার খান্ডৌলি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়েছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement