সম্প্রতি একটি কোনও একটি খবরের কাগজে থাকা একটি খবরের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে। "বিশ্বে দূর্নীতিপরায়ন দলের তালিকায় বিজেপি" শীর্ষক এই খবরের ছবিটি অনেকেই শেয়ার করছেন। খবরটিতে লেখা হয়েছে যে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সিএনএন নাকি একটি সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সেই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে সকল রাজনৈতিক দলগুলি দুর্নীতিতে যুক্ত তাদের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি।
সেই সঙ্গে ওই খবরটিতে লেখা হয়েছে যে রিপোর্ট অনুযায়ী সিএনএন সার্ভের এই তালিকায় প্রথমে রয়েছে পাকিস্তানে নবাব শরীফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ দ্বিতীয় স্থানে উগান্ডার একটি দল এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে কিউবার একটি রাজনৈতিক দল। অনেকেই এই স্ক্রিনশটটি শেয়ার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখছেন যে সিএনএন এমন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই দাবিটি আসলে ভিত্তিহীন। সিএনএন এমন কোন রিপোর্ট প্রকাশ করেনি যেখানে কোন রাজনৈতিক দলগুলিকে তাদের দুর্নীতি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।
আফয়া অনুসন্ধান
সবার প্রথম ওই প্রতিবেদনের যে বিষয়টি দেখে আমাদের খটকা লাগে তা হল, 'দুর্নীতি' এবং 'পরায়ণ' দুটি বানানই শিরোনামে ভুল লেখা হয়েছিল। সাধারণত প্রথম সারির কোনও সংবাদপত্রের শিরোনামে এমন ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক নয়। তাই এই সংবাদ প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রথমেই প্রশ্ন উঠে যায়।
এরপর আমরা কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে খোঁজার চেষ্টা করি যে সিএনএন এরকম কোনও দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক দলের তালিকা প্রকাশ করেছে কিনা। কিন্তু এমন কোনও রিপোর্ট আমারা খুঁজে পাইনি। সেই সঙ্গে সিএনএন-র ওয়েবসাইটেও এই সংক্রান্ত কোনও কিছুই দেখা যায়নি।
সেই সঙ্গে আমরা দৈনিক ভাস্করের আরও একটি রিপোর্ট দেখতে পাই। সেই রিপোর্টে লেখা হয় যে এই সার্ভের বিষয়টি ২০১৭ সাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় রটে আসছে। কিন্তু এই বিষয়ে যখন দৈনিক ভাস্করের পক্ষ থেকে সিএনএন-র দফতরে যোগাযোগ করা হয়, তখন সেখান থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় এটি একটি ভুয়ো দাবি। এমন কোনও সমীক্ষা সিএনএন-র তরফে করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে একবার একই ধরনের দাবি করে বলা হয়েছিল যে বিবিসি নাকি কোনও সমীক্ষায় বিজেপিকে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত পার্টি বলেছে। সেই সময়ও এই দাবি খণ্ডন করেছিল আফয়া।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-র সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে বিজেপি বিশ্বের চতুর্থ দুর্নীতিগ্রস্ত দল।
সিএনএন এমন কোনও দুর্নীতিগ্রস্ত দলের বিষয়ে সমীক্ষা করেনি। এর আগেও বিবিসি-র নামে এমন গুজব রটেছে।