Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: হিন্দু নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরান পড়ে পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যাপক একজন মুসলিম

এই ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন হিন্দু অধ্যাপকের পদত্যাগ এইভাবে নিয়েছে জামাতে ইসলামী ছাত্র সংগঠন।"

ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 21 Aug 2024,
  • अपडेटेड 11:55 AM IST

বাংলাদেশে পালাবদলের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া ছয়লাপ নানা ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনার দাবিতে। এই ধারা অব্যাহত রেখে এ বার আরেকটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেশ ভাইরাল হয়েছে। এই পোস্টে দাবি করা হচ্ছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হিন্দু অধ্যাপককে কোরান পাঠ শুনিয়ে তারপর পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। 

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, জনাকয়েক যুবক এক ব্যক্তিকে ঘিরে রেখে কোরান পাঠ করছেন। ওই কক্ষে আরও অনেকে উপস্থিত রয়েছেন। কেউ কেউ আবার মোবাইলে ভিডিওটি ধারণ করছেন। এই ভিডিওটি শেয়ার করে উক্ত দাবিটি করা হয়েছে। 

এই ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন হিন্দু অধ্যাপকের পদত্যাগ এইভাবে নিয়েছে জামাতে ইসলামী ছাত্র সংগঠন। প্রথমে হিন্দু অধ্যাপক কে কুরআনের আয়াত পাঠ করে শোনানো হয়েছে তারপর উনার পদত্যাগ নেওয়া হয়েছে।( উনাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে)।" 

জিতেন্দ্র প্রতাপ সিং নামে এক ব্যক্তি এক্স হ্যান্ডেলেও এই পোস্ট করে একই দাবি করেছেন। 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই দাবিটি সঠিক নয়। চাপের মুখে পদত্যাগ করা ওই অধ্যাপক একজন মুসলিম ব্যক্তি, হিন্দু নয়। 

কীভাবে জানা গেল সত্যি

ভাইরাল ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করতে আমরা এই একই ভিডিও একাধিক ইউটিউব চ্যানেলে দেখতে পাই। উদাহরণস্বরূপ, একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে বিবরণে লেখা হয়, "কুরআন তেলোয়াতে বাধাদানকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিনকে পদত্যাগ করিয়ে তার কক্ষেই কুরআন তেলওয়াত।"

যদিও এই ভিডিওতে ওই ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে এর থেকে একটা বিষয় অনুমান করে যায় যে এই ভিডিওটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও অধ্যাপকের হলেও হতে পারে। এই সূত্র ধরে কিওয়ার্ড সার্চ করে একই ভিডিও-র স্ক্রিনশট-সহ বাংলাদেশি সংবাদ মাধ্যম সময় নিউজের একটি খবর আমরা পাই। 

Advertisement

১৯ অগস্ট প্রকাশিত সময় নিউজের এই খবরে বলা হয় যে পদত্যাগে বাধ্য করা এই অধ্যাপকের নাম ড. আব্দুল বাছির। তিনি কলা (আর্টস) বিভাগের ডিন ছিলেন। খবর অনুযায়ী, রমজান উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় কোরান পাঠের অনুষ্ঠান নিয়ে তিনি আপত্তি তুলেছিলেন। তাই এবার তাঁরই কক্ষে কোরান পাঠের মধ্যে দিয়ে তাঁকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। এই ছবিতে ওই অধ্যাপককে দু হাত সামনে এনে দোয়া করতেও দেখা যাচ্ছে। এই বিষয়গুলি থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায় যে পদত্যাগে বাধ্য করা ওই ব্যক্তি হিন্দু নন, বরং মুসলিম। 

প্রথম আলোর পক্ষ থেকেও ১৯ অগস্ট এই নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে লেখা হয়, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল বাছির শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিজ হাতে পদত্যাগপত্র লিখে তাতে স্বাক্ষর করেন। পদত্যাগপত্রে অধ্যাপক বাছির লেখেন, ‘আমি কলা অনুষদের ডিন পদ থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাধিত করবেন।’ তবে প্রথম আলোর প্রতিবেদন মতে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকায় তাঁদের পদত্যাগ এ মুহূর্তেই কার্যকর হচ্ছে না৷

ভাইরাল ভিডিওতে মাছরাঙা টিভির একটি লোগো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। সেই মতো মাছরাঙা টিভির ইউটিউব চ্যানেলেও আমরা আসল ভিডিওটি খুঁজে পাই। সেখানে লেখা হয়, "ইফতার মাহফিলে বাধা দেয়া কলা অনুষদের ডিনকে পদত্যাগে বাধ্য করে তার কামরাতেই কোরআন তেলাওয়াত ও মোনাজাত।"

অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘটনাকে কীভাবে সাম্প্রদায়িক রং লাগিয়ে বিভ্রান্তিকর দাবিতে শেয়ার করা হচ্ছে। 

 

ফ্যাক্ট চেক

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হিন্দু অধ্যাপককে কোরান পাঠ করে পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। 

ফলাফল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক হিন্দু নন, তিনি মুসলিম। তাঁর নাম ড. আব্দুল বাছির। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের नंबर 73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement