Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: সাম্প্রতিক দাবিতে ছড়াল শান্তনু ঠাকুর ও হিরণের রাজ্য বিজেপি-র WhatsApp গ্রুপ ছাড়ার ২০২২ সালের ভিডিও

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, শান্তনু ঠাকুর এবং হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের রাজ্য বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া সংক্রান্ত নিউজ ১৮ বাংলা ও এবিপি আনন্দের ভিডিও দুটি সাম্প্রতিক কোনও ঘটনার নয়। বরং এগুলি ২০২২ সালের এবং বর্তমানে উভয় নেতাই বিজেপিতেই রয়েছেন।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 03 Nov 2025,
  • अपडेटेड 9:42 AM IST

আগামী ৪ নভেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিমবঙ্গ শুরু হচ্ছে এসআইআর। আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে নিউজ ১৮ বাংলা এবং এবিপি আনন্দের দুটি নিউজ ক্লিপ। ক্লিপ দুটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটের আগে সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন মতুয়া নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এবং খড়গপুর সদরের বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। 

উদাহরণস্বরূপ, নিউজ ১৮ বাংলার নিউজ ক্লিপটি শেয়ার করে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “#BreakingNews  #রাজ্যে BJP-র বড়ো চাপ বিধায়কের পর এবার. #কেন্দ্রীয় মন্ত্রী  #শান্তনু ঠাকুর রাজ্য  সমস্ত Whatsapp  গ্রুপ ছাড়লেন। ভক্তরাও বাজাও তালি  #BJPHataoDeshBachao।” (সব বানান অপরিবর্তিত) এখানে BreakingNews-এর মতো হ্যাশ ট্যাগ ব্যবহারের মাধ্যমে ক্লিপটিকে সাম্প্রতিক হিসাবেই উল্লেখ করা হয়েছে।

অন্যদিকে এবিপি আনন্দের নিউজ ক্লিপটি শেয়ার করে অপর এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “২৬ এর আগে খেলা শুরু হয়ে গেছে। রাজ্য বিজেপির গ্রুপ ছাড়লেন খড়্গপুর টাউন এর বিধায়ক হিরন চট্টোপাধ্যায়।” (সব বানান অপরিবর্তিত) 

আরও পড়ুন

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, শান্তনু ঠাকুর এবং হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের রাজ্য বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া সংক্রান্ত নিউজ ১৮ বাংলা ও এবিপি আনন্দের ভিডিও দুটি সাম্প্রতিক কোনও ঘটনার নয়। বরং এগুলি ২০২২ সালের এবং বর্তমানে উভয় নেতাই বিজেপিতেই রয়েছেন।

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

প্রথম ক্লিপ তথা নিউজ ১৮ বাংলার প্রতিবেদন: বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের রাজ্য বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া সংক্রান্ত ভিডিওটির বিষয়ে একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে নিউজ ১৮ বাংলার অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ওই একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিল ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি। এর থেকেই প্রাথমিকভাবে এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে নিউজ ক্লিপটি সাম্প্রতিক সময়কার নয়। পাশাপাশি, ক্লিপটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “Whatsapp গ্রুপ ছাড়লেন BJP নেতা Shantanu Thakur। রাজ্যের আর প্রয়োজন নেই বলেই মনে করছেন তিনি। তাই আলাদা করে রাজ্য BJP -কেও আর প্রয়োজন নেই বলে জানান তিনি।”



এরপর উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে এই সংক্রান্ত একাধিক প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই সব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে বিজেপির তরফে যে রাজ্য কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটিতেই মতুয়াদের প্রতিনিধিত্ব না থাকার অভিযোগ তুলে ২৪ ডিসেম্বর বিজেপি বিধায়কদের অফিশিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ে বিধায়ক অসীম সরকার, অম্বিকা রায়. সুব্রত ঠাকুর, মুকুটমণি অধিকারী ও অশোক কীর্তনিয়া। এর কয়েকদিন পর অর্থাৎ ৩ জানুয়ারি রাজ্য বিজেপি-র সমস্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান শান্তনু ঠাকুর। পাশাপাশি, সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, 'রাজ্য বিজেপি-র আর আমাদের প্রয়োজন নেই। তাই আমরাও গ্রুপ থেকে বেরিয়ে এসেছি। যেখানে প্রয়োজনীয়তা নেই, সেখানে থেকে কী করব?' 

Advertisement

 

দ্বিতীয় ক্লিপ তথা এবিপি আনন্দের প্রতিবেদন: এরপর খড়গপুর সদরের বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের রাজ্য বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া সংক্রান্ত ভিডিওটির বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ওই একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিল ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি। এর থেকেও স্পষ্ট হয়ে যায় যে হিরণে রাজ্য বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া সংক্রান্ত নিউজ ক্লিপটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

ক্লিপটি শেয়ার করে বিবারণে লেখা হয়েছে, “আরও অস্বস্তিতে বঙ্গ BJP। এবার একাধিক হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন খড়গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক-অভিনেতা হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় (Hiran Chatterjee)। দলের সংগঠনের কাজে লাগানো হয় না, যেখানে উন্নয়ন সেখানে আছি, ক্ষোভ উগড়ে জানালেন হিরণ। দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি।” আনন্দবাজার ডট কম এবং ইটিভি ভারতের প্রতিবেদনেও এই একই তথ্য পাওয়া যায়। উভয় প্রতিবেদনেই উল্লেখ করা হয়েছে, দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ এবং সংগঠনের কাজে লাগানোর অভিযোগ তুলে এই সিদ্ধান্ত নেয় হিরণ। 


তবে এখানে উল্লেখ্য, ২০২২ সালের এই ঘটনার পর রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যস্থতায় দলের সঙ্গে উভয় নেতার সেই বিবাদ মিটে যায়। এবং তাঁরা দুজনেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এর মধ্যে শান্তনু ঠাকুর বনগাঁ লোকসভা থেকে নির্বাচিত হয়ে পুনরায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন। অন্যদিকে হিরণ ঘাটালে অপর অভিনেতা দেবের বিরুদ্ধে বিজেপির টিকিটে লড়াই করে পরাজিত হন।

আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর ঘোষণা হওয়ার পরেই নিজেদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ চলে যেতে পারে বলে এমনই এক উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশের মধ্যে। তাই এসআইআর বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। অন্যদিকে এসআইআর-এর সমর্থন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর জানান, এসআইআর নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। ঠাকুর নগরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক মতুয়া সম্মেলন থেকে তিনি বলেন, “এসআইআর-এর কারণে মতুয়া সম্প্রদায়ের কোনো মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেলেও, সিএএ-এর মাধ্যমে ফের তাঁদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।”

অর্থাৎ এর থেরে বুঝতে বাকি রইল না যে সোশ্যাল মিডিয়াতে সাম্প্রতিক ঘটনা দাবি করে বিভ্রান্তিকরভাবে ছড়ানো ২০২২ সালের দুটি ভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনের ভিডিও।

Fact Check

Claim

নিউজ ক্লিপ দুটিতে দেখা যাচ্ছে, ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটের আগে সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এবং খড়গপুর সদরের বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। 

Conclusion

শান্তনু ঠাকুর এবং হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের রাজ্য বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া সংক্রান্ত নিউজ ১৮ বাংলা ও এবিপি আনন্দের ভিডিও দুটি সাম্প্রতিক কোনও ঘটনার নয়। বরং এগুলি ২০২২ সালের এবং বর্তমানে উভয় নেতাই বিজেপিতেই রয়েছেন।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement