পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার জবাবে ভারতের অপারেশন সিঁদুর-এ পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের মোট ৯টি জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে একাধিক ফেসবুক প্রোফাইল ও পেজে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভারতের এক পাইলট পাকিস্তানে ধরা পড়েছে।
এই ভিডিওতে কিছু ব্যক্তির জটলাকে ভারতীয় বায়ুসেনার এক পাইলটকে মাটি থেকে তুলতে দেখা যাচ্ছে। পাশেই এক যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে রয়েছে যেখানে আগুন জ্বলছে।
ভিডিওটি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে এই ভারতীয় পাইলট নাকি পাকিস্তানে ধরা পড়েছেন। ভিডিও-র ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "ভারতীয় পাইলট পাকিস্তানের কাছে ধরা খেয়েছে।"
সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে
ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে তার রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খোঁজা হলে ওই একই ভিডিও মিডিয়া প্রাইম নামের একটি ফেসবুক পেজে পাওয়া যায় যা গত ফেব্রুয়ারি মাসের ৬ তারিখ পোস্ট করা হয়েছিল। এর থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের না।
ভাইরাল ভিডিওটিতে আজতকের লোগো দেখা যাচ্ছে। যা থেকে অনুমান করা যায় আসল ভিডিওটি আজতক দ্বারা আপলোড করা হয়েছিল। কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ওই ভিডিওটি আজতকের ফেসবুক পেজে পাওয়া যায় যা ৬ ফেব্রুয়ারি পোস্ট করা হয়।
ভিডিওটির সঙ্গে থাকা হিন্দি ক্যাপশনে যা লেখা হয় তার অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, "মধ্যপ্রদেশের শিবপুরী জেলার বাহরেতা সানি গ্রামের কাছে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান (মিরাজ-২০০০) বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আরেকটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। এই দুর্ঘটনায় বিমানটি সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পাইলট তাঁর সতর্ক বুদ্ধির কারণে নিরাপদে বেঁচে যান। দুর্ঘটনার পর গ্রামবাসীরা কীভাবে পাইলটের যত্ন নিয়েছিল এই ভিডিওতে দেখুন। মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ এখনও জানা যায়নি।"
এই বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করে দ্য হিন্দু ও এনডিটিভি-র একাধিক খবর পাওয়া যায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত। সেখানে উল্লেখ করা হয় যে বিমানটিতে দু'জন পাইলট ছিলেন এবং দুজনেই নিরাপদ রয়েছেন। বিমানে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। মধ্য প্রদেশের গোয়ালিওর এয়ারবেস থেকে উড়ে নিয়মিত অনুশীলন চলাকালীন এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এই বিষয়ে ভারতীয় বায়ুসেনার এক্স হ্যান্ডেলেও একটি বিবৃতি দেওয়া হয় যা নীচে দেখা যাবে।
অর্থাৎ সবমিলিয়ে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে একটি পুরনো এবং অসম্পর্কিত ভিডিও ছড়িয়ে তাকে পাকিস্তানের হাতে ধরা পড়া ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট বলে দাবি করা হচ্ছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কীভাবে ভারতীয় পাইলট পাকিস্তানে ধরা পড়েছে।
ভিডিওটি পাকিস্তানের নয় বরং ভারতের মধ্য প্রদেশের। গত ফেব্রুয়ারি মাসে একটি মিরাজ যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়েছিল, ভিডিওটি সেই সময়ের।