Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: অর্চনা মুর্মু নামে আদিবাসী মেয়ের মঙ্গলগ্রহের মিশনে থাকার দাবি পুরোপুরি মিথ্যে

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি পুরোপুরি ভুয়ো ও মনগড়া। অর্চনা মুর্মু নামে কোনও ভারতীয় মহাকাশচারীর অস্তিত্ব নেই। মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর কোনও পরিকল্পনাও ভারতের তরফে এখনও ঘোষণা করা হয়নি। 

ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 12 Jul 2025,
  • अपडेटेड 1:41 PM IST

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট বেশ ভাইরাল হয়েছে। সেই পোস্টের দাবি, অর্চনা মুর্মু নামে ঝাড়খন্ডের এক আদিবাসী মেয়ে মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে কোনওদিন ফিরবে না জেনেই এই প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, এবং তাঁর একটি মন্তব্যও সেই পোস্টে লেখা হয়েছে। 

একাধিক ব্যক্তি একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। সেই ফটোকার্ডে লেখা রয়েছে, "মঙ্গল মিশনে অর্চনা মুরমু। সমগ্র ভারতের গর্ব। Congratulations to Archana Murmu।" 

সেই সঙ্গে ভাইরাল পোস্টের ক্যাপশনে যা লেখা হয়েছে তার সারাংশ হলো, অর্চনা মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার মিশনে নির্বাচিত হয়েছেন ফিরবেন না জেনেও। মঙ্গল মানুষের বসবাসের জন্য তৈরি হতে পারে কিনা সেই জন্য নানা ধরনের পরীক্ষা তিনি চালাবেন। অর্চনা নাকি নিজেই বলেছেন যে, "আমার জীবন থেকে আসা প্রজন্ম যদি মঙ্গল গ্রহে প্রাণ থাকতো, তাই আমি এটা ত্যাগ করতে প্রস্তুত।" 

আরও পড়ুন

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি পুরোপুরি ভুয়ো ও মনগড়া। অর্চনা মুর্মু নামে কোনও ভারতীয় মহাকাশচারীর অস্তিত্ব নেই। মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর কোনও পরিকল্পনাও ভারতের তরফে এখনও ঘোষণা করা হয়নি। 

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে 

যদি অর্চনা মুর্মু নামে কোনও ভারতীয় মহাকাশচারী মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার মিশনের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন, তবে সেটা শুধু ভারতের জন্য নয় বরং আন্তর্জাতিক মহলের জন্যও বিরাট বড় খবর হবে। বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের সংবাদ প্রকাশ পাবে। কিন্তু এই ধরনের কোনও খবর কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে পাওয়া যায়নি। এমনকি, অর্চনা মুর্মু নামে কোনও মহাকাশচারী বা বিজ্ঞানীরও খোঁজ মেলেনি। 

এরপর আমরা খোঁজার চেষ্টা করি যে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা ইসরোর মঙ্গলগ্রহের মিশন নিয়ে পরবর্তীতে কি পরিকল্পনা রয়েছে? 

ভারত প্রথমবার ২০১৪ সালে মঙ্গলগ্রহের উদ্দেশে প্রথম মিশন চালিয়েছিল, যার নাম ছিল মঙ্গলযান। তবে এই মিশনের লক্ষ্য মঙ্গলে অবতরণ নয়, বরং মঙ্গলের কাছাকাছি পৌঁছে তাকে প্রদক্ষিণ করে গবেষণা চালানো ছিল। এই মিশনে ইসরো সফল হয়। ২০২৪ সালের মে ও জুন মাসে প্রকাশিত স্পেস ডট কম এবং এনডিটিভি-র একাধিক রিপোর্টে জানা যায়, ইসরো বর্তমানে মঙ্গলযান ২-এর প্রস্তুতি নিচ্ছে। মঙ্গলযান ২ হবে মানবহীন একটি মিশন যার মাধ্যমে প্রথমবার ভারত মঙ্গলগ্রহে সফ্ট ল্যান্ডিং-এর চেষ্টা করবে। তবে এই মিশনের দিনক্ষণ এখনও নির্ধারিত হয়নি। 

Advertisement

প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখা যায়, ভারতীয় মহাকাশ গহবেষণা সংস্থা ইসরো এখনও পর্যন্ত মহাকাশে মানুষ পাঠায়নি। তবে ২০২৭ সালে মিশন 'গগণযান'-এর পরিকল্পনা রয়েছে। যার মাধ্যমে মহাকাশে প্রথমবারের মতো মানুষ পাঠাবে ভারত। ইতিমধ্যেই বালাকৃষ্ণন নায়ার, অজিত কৃষ্ণন, অঙ্গদ প্রতাপ, এবং শুভাংশু শুক্লকে এই মিশনের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে শুভাংশু বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল স্পেশ স্টেশনে অবস্থান করছেন। 

উল্লেখ্য, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসাও এখনও পর্যন্ত মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠায়নি। তবে ২০৩০ সালের প্রথমভাগে নাসা মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে তারা নিজেদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে। কিন্তু এই মিশনে কারা অংশ হবেন সেই বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। 

অন্যদিকে, ভাইরাল ফটোকার্ডের ছবিটি যে এআই দ্বারা নির্মিত, একাধিক টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করলে সেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। 

২০১৮ সাল থেকেই অবশ্য একই ধরনের একটি গুজব সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে এসেছে যে অ্যালিসা কার্সন নামে এক যুবতী ২০৩৩ সালে মঙ্গলগ্রহে যাবেন তিনি কোনওদিন ফিরবেন না জেনেই। এই দাবিটিও একাধিকবার রয়টার্সের মতো নানা আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা খারিজ করে এসেছে। 

সবমিলিয়ে বলাই যায় যে একটি ভিত্তিহীন, মনগড়া কাহিনি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে অর্চনা মুর্মু মঙ্গলগ্রহে যাবেন, যা পুরোপুরি ভুয়ো।

Fact Check

Claim

ঝাড়খন্ডের আদিবাসী মেয়ে অর্চনা মুর্মু কোনওদিন ফিরে আসবে না জেনেও মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

Conclusion

দাবিটি ভুয়ো এবং মনগড়া। পৃথিবীর কোনও মহাকাশ গবেষণা সংস্থাই এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট মহাকাশচারীকে মঙ্গলে পাঠানোর কথা ঘোষণা করেনি। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement