ইজরায়েল বনাম হামাসের যুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের সিংহভাগ দেশগুলিই গাজা তথা ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়েছে। ব্যতিক্রম নয় ইরানও। ইজরায়েলকে তারা রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে রেখেছে যে প্রয়োজনে সশস্ত্র অভিযান চালাতেও তারা পিছ পা হবে না।
এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো বেশ ভাইরাল হয়েছে। ড্রোন থেকে তোলা সেই ভিডিয়োতে একটি রাস্তার উপর সারি সারি সেনা ও মিসাইল-সম্বৃদ্ধ অত্যাধুনিক গাড়ির বহর দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। ভিডিয়োটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এতে ইরানের সেনাবাহিনীকে দেখা যাচ্ছে যারা ফিলিস্তিনকে যুদ্ধে সাহায্য করতে এগিয়ে যাচ্ছে।
ভিডিয়োটি ফেসবুকে শেয়ার করে লেখা হয়েছে, "নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার ইরানের বাহিনী ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে!"
ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে পেয়েছে যে ভাইরাল ভিডিয়োটি ইরান সেনাবাহিনীর নয়, বরং ফিলিস্তিনের এক অন্য বিদ্রোহী বাহিনীর। ভিডিয়োটিও যুদ্ধ শুরুর আগেকার।
কীভাবে জানা গেল সত্যি
ভাইরাল ভিডিয়ো থেকে স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করতেই আমরা ওই একই ভিডিয়ো চিনের সরকারি সংবাদ মাধ্যম শিনহুয়া নিউজের ফেসবুক পেজে দেখতে পাই। এই ভিডিয়োটি আপলোড করা হয়েছিল গত অক্টোবর মাসের ৫ তারিখ।
ভিডিয়োটিতে যে দীর্ঘ ক্যাপশন লেখা হয়েছিল ইংরাজিতে তার অনুবাদ করলে মোটের উপর দাঁড়ায়, এখানে প্যালেস্তিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ নামের একটি জঙ্গি গোষ্ঠীকে দেখা যাচ্ছে যেটি ফিলিস্তিনের। গত ৪ অক্টোবর গাজাতেই এই গোষ্ঠীর ৩৬তম প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন এই মিলিটারি প্যারেডের আয়োজন করা হয়। তারা সেই প্যারেড থেকে নিজেদের আগ্নেয়াস্ত্র ভাণ্ডারের বিষয়ে জানান দেয়।
সংবাদ সূত্র অনুযায়ী, গাজায় হামাসের পর দ্বিতীয় শক্তিশালী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এই প্যালেস্তিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ বা পিআইজে। অনেক সময়ই তারা হামাসের সঙ্গে জোট বেঁধে ইজরায়েলে হামলা চালিয়েছে।
এ ছাড়াও একাধিক সংবাদ মাধ্যমে আমরা দেখতে পাই এই প্যারেডের ছবি। গত ৫ অক্টোবর প্রকাশিত এমনই একটি খবরে এহেন তথ্যই প্রকাশ করে নিশ্চিত করা হয় যে ভিডিয়োটি কোনও ভাবেই ইরান সেনাবাহিনীর নয় ও সাম্প্রতিক সময়েরও নয়।
অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে দাবিটি ভাইরাল হয়েছে তা সত্য নয়।
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে ইরানের সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনকে সাহায্য করতে গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ভাইরাল ভিডিয়োটি গত ৪ অক্টোবরের ও এখানে গাজার অর্ন্তগত প্যালেস্তিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ নামের এক জঙ্গি গোষ্ঠীর প্যারেড দেখা যাচ্ছে।