Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু টানেল নয়, ভাইরাল হওয়া ছবিটি বসনিয়ার একটি টানেলের

২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের চট্টগ্রামে উদ্বোধন হতে চলেছে সে দেশের প্রথম আন্ডারওয়াটার, অর্থাৎ নদীর নীচে নির্মিত টানেল।

ফ্যাক্ট চেক: চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু টানেল নয়, ভাইরাল হওয়া ছবিটি বসনিয়ার একটি টানেলেরফ্যাক্ট চেক: চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু টানেল নয়, ভাইরাল হওয়া ছবিটি বসনিয়ার একটি টানেলের
ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 21 Sep 2023,
  • अपडेटेड 6:50 PM IST

আগামী ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের চট্টগ্রামে উদ্বোধন হতে চলেছে সে দেশের প্রথম আন্ডারওয়াটার, অর্থাৎ নদীর নীচে নির্মিত টানেল। পড়শি দেশের এই পরিকাঠামোগত উন্নয়নের খবর ঘিরে তাই স্বাভাবিকভাবেই বেশ সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। সেই সঙ্গে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি টানেলের ছবি শেয়ার করছেন। এই ছবিটিকেই চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল বলে দাবি করা হচ্ছে। 

উদাহরণস্বরূপ, একটি পোস্টকার্ড একাধিক পেজ থেকে শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে তিনটি ছবির একটি কোলাজ দেখা যাচ্ছে। কোলাজের ডান দিকে আকারে একটি বড় ছবি রয়েছে। বাঁ-দিকে ওপরে ও নীচে আরও দুটি ছবি দেখা যাচ্ছে। পোস্টকার্ডে লেখা হয়েছে, স্মার্ট বাংলাদেশের আরেকটি মাইলফলক। বঙ্গবন্ধু টানেল। উদ্বোধন ২৮ অক্টোবর ২০২৩। 

বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম প্রথম আলো ২০২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তাদের একটি প্রতিবেদনেও (আর্কাইভ) এই ছবিটি প্রকাশ করে এটিকে "চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল" বলে লেখা হয়েছে। যদিও এই প্রতিবেদন ও ছবির কৃতিত্ব 'বাসস', অর্থাৎ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। 

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাও ওয়েবসাইটে নিজেদের প্রতিবেদনে (আর্কাইভ) এই ছবিটি ব্যবহার করেছে। এবং এই ছবিটিকে কোথাও প্রতীকী হিসেবে উল্লেখ করেনি।  

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই ছবিগুলি চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু টানেলের নয়। মূল ছবিটি বসনিয়ার একটি টানেলের। 

কীভাবে জানা গেল সত্যি? 

মূল ছবিটিকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খোঁজার পর ওই এই ছবিটি আমরা বসনিয়ার একটি সংবাদ মাধ্যমে খুঁজে পাই। ২০১৭ সালের ২৭ অগস্ট এই খবরটি বেরিয়েছিল বসনিয়ার ওয়ান মার্ট টানেলে আরোহীদের ওভারস্পিডে গাড়ি চালানোর মামলা নিয়ে। প্রসঙ্গত, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে বলকান উপদ্বীপে অবস্থিত একটি দেশ। 

Advertisement

এরপর আমরা আরেকবার ছবিটি রিভার্স সার্চ করে তা শ্রেডার ডট কম নামের একটি ওয়েবসাইটে দেখতে পাই। এই সংস্থাটি বিভিন্ন বড় প্রজেক্টে আলো লাগানোর সঙ্গে যুক্ত। তারা যে যে প্রজেক্টে কাজ করে, সেই কাজের নমুনা তুলে ধরার জন্য নিজেদের ওয়েবসাইটেও স্যাম্পেল হিসেবে সেই ছবিগুলি ব্যবহার করে। 

তেমনই এই ওয়েবসাইটেও এই ছবিটি ব্যবহার করে লেখা হয়েছিল যে এই টানেলটি বসনিয়ার দুটি মূল অর্থনৈতিক কেন্দ্র জেনিকা ও সারাজেভোকে সংযোগ করতে ব্যবহার করা হয়েছিল। সেখানে আরও লেখা হয়, টানেলটি প্রায় তিন কিলোমিটার লম্বা এবং ২০১৪ সালে উদ্বোধন করা হয়েছিল। 

গুগল মাপে ওই টানেল সংলগ্ন এলাকায় আর্থ ভিউ না থাকায় আমরা ইউটিউবে কোনও ভিডিয়োর সঙ্গে ওই ভাইরাল ছবির টানেলের সাদৃশ্য খোঁজার চেষ্টা করি। ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আপলোড হওয়া ইউটিউবের একটি ভিডিয়োতে আমরা ভাইরাল ছবির টানেলের অন্দরসজ্জার সঙ্গে হুবহু মিলও খুঁজে পাই। যা থেকে মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে যায় যে এই টানেলটি কোনওভাবেই চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু টানেল হওয়া সম্ভব না। 

এরপর ভাইরাল পোস্টকার্ডের বাঁ-দিকের কোণে থাকা ছবিটি খোঁজার জন্য আমরা সেটিকে রিভার্স সার্চ করি। তখন ওই ছবিটি স্টক ফটো ওয়েবসাইট অ্যালামিতে খুঁজে পাই। এই ছবিটি কোথাও তোলা সেই বিষয়ে কিছু লেখা না থাকলেও এটি ২০১৪ সালে তোলা হয়েছিল তা উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণকাজ ২০১৬ সালের পর থেকে শুরু হয়েছিল। যা দেখে পরিষ্কার যায় যে কোনও ভাবেই এটি বঙ্গবন্ধু টানেলের নয়। 

তৃতীয় এবং শেষ ছবিটিও, বলাই বাহুল্য, একটি গ্রাফিক ডিজাইন এবং ভিন্ন-ভিন্ন ক্ষেত্রে এটিকে ব্যবহার করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু টানেলের সঙ্গে এটি সম্পর্কযুক্ত নয়। 

Fact Check

Claim

ছবিতে চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু টানেল দেখা যাচ্ছে যা আগামী ২৮ আগস্ট উদ্বোধন হবে।

Conclusion

এটি বঙ্গবন্ধু টানেল নয়। বরং বসনিয়ার একটি টানেল যা ২০১৪ সালে উদ্বোধন হয়।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement