Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসে হামলার দৃশ্য দাবিতে ছড়াচ্ছে অসম্পর্কিত ভিডিও

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, যদিও এটা সত্যি যে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের একাধিক স্থানে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়েছে। তবে ভাইরাল ভিডিওটি সেই সব বিক্ষোভের নয়। বরং সেটি গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহবাগে ৪৭তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভের দৃশ্য।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 20 Dec 2025,
  • अपडेटेड 3:30 PM IST

বাংলাদেশের বিচ্ছনাতাবাদী ছাত্রনেতা ওসমান হাদির হত্যার প্রতিবাদে গত শুক্রবার চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার রাজীব রঞ্জনের বাসভবনে হামলার চেষ্টা করে উগ্র ইসলামি কট্টরপন্থীরা। এমনকি ঢাকা এবং রাজশাহী-সহ একাধিক ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে চলল বিক্ষোভ-পাথরবৃষ্টি। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের পুলিশ কর্মীদের প্রকাশ্য রাস্তার উপরে বেশকিছু যুবকের উপরে লাঠিচার্জ করতে এবং তাদের তাড়িয়ে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, সেটি বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসে সন্ত্রাসীদের হামলার দৃশ্য। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “এই মুহূর্তে মধ্য রাতে ইন্ডিয়ান দূতাবাসে হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা,,হাসনাত আব্দুল্লার উস্কানি মূলক বক্তব্যে র পরেই রাতে ইন্ডিয়ার দূতাবাসে হামলা! সামনে নির্বাচন বন্ধ করতেই পাকিস্তানের মদদে ভারতকে উস্কানি দিচ্ছে এই জঙ্গিরা। দেশের ১৮কোটি মানুষকে বিপদে ফেলে ভারতের সাথে যুদ্ধ বাঁধিয়ে ধংস করে পালাবে এই সুদখোর ইউনুস!” (সব বানান অপরিবর্তিত) 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, যদিও এটা সত্যি যে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের একাধিক স্থানে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়েছে। তবে ভাইরাল ভিডিওটি সেই সব বিক্ষোভের নয়। বরং সেটি গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহবাগে ৪৭তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভের দৃশ্য।

সত্য উন্মোচন

আরও পড়ুন

ভাইরাল ভিডিওটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে সেটির ফ্রেমের উপর ‘bdlive.com24’ নামক একটি সংবাদমাধ্যমের ওয়াটার মার্ক দেখতে পাওয়া যায়। পাশাপাশি, ক্লিপটির ২৮ সেকেন্ডে একজন সংবাদকর্মীকে ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “আবারও সেই শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হন..।” এই দুটি সূত্রের উপর ভিত্তি করে এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ এবং ক্লিপটি থেকে একাধিক কিফ্রেম সংগ্রহ করে সেগুলি গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২৫ সালের ২৫ নভেম্বর ‘bdlive.com24’এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এই একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিও-র ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “বিসিএস শিক্ষার্থীদের দাওয়া দিতে গিয়ে পড়ে গেলেন পুলিশ।”

Advertisement

এর থেকে বোঝায় যায় যে ভাইরাল ক্লিপটির সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অচালাবস্থা এবং ওসমান হাদির মৃত্যুর পরে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভের কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ, চলতি বছরের ১২ ডিসেম্বর, দুপুর ২:২৫ মিনিটে ঢাকার বিজয়নগর এলাকার বক্স কালভার্ট রোডে জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় তিন জন মুখোশধারী হামলাকারী। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। অথচ ভাইরাল ক্লিপটি হাদির উপরে হওয়া হামলার প্রায় ১৭ দিন আগে থেকে ‘bdlive.com24’এর ফেসবুক পেজে রয়েছে।

তবে ভাইরাল ভিডিও ক্লিপটি সম্পর্কে আরও জানতে এরপর উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে, গত ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোতে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৪৭তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস তথা বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার (মেইনস) তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহবাগে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন পরীক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ এতদিন পর্যন্ত বিসিএসে অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীরা লিখিত পরীক্ষার জন্য ৬ মাস থেকে এক বছর সময় পেতেন। কিন্তু এবার সেই সময় পরিবর্তন করে দুই মাসেরও কম করা হয়েছে। এদিন আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনূসের বাসভবন ‘যমুনা’ অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে শাহবাগে পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং তাদের উপরে লাঠিচার্জ করে।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসে হামলার দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে অসম্পর্কিত ভিডিও।

Fact Check

Claim

ভিডিওতে বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসে সন্ত্রাসীদের হামলার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

Conclusion

ভাইরাল ভিডিওটি বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসে হামলার নয়। বরং সেটি চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহবাগে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভের দৃশ্য।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement