Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অসম্পর্কিত ভিডিও ছড়িয়ে ভারতে বন্ধ্যাত্বকরণের ভুয়ো দাবি

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল ভিডিও-র দাবিটি মিথ্যে। প্রথমত, ভারতের কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বলপূর্বক এই ধরনের ভ্যাকসিন বা টিকা দেওয়ার নজির নেই। দ্বিতীয়, ভিডিওটি ভারতের নয় বরং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের।

ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 15 Oct 2025,
  • अपडेटेड 3:29 PM IST

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে ভারতে ক্যানসারের ভ্যাকসিন দেওয়ার নাম করে নাকি মুসলিম মেয়েদের বন্ধ্যাত্বকরণের টিকা দেওয়া হচ্ছে।

এই ভিডিওতে বেশ কিছু ছাত্রীকে একটি ঘরের মধ্যে বসে কাঁদতে, কাশতে এবং ছটফট করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “ভারতে ব্লাড ক্যান্সারের টিকা বলে স্কুলে মুসলিম মেয়েদের দেওয়া হচ্ছে বন্ধা বানানোর ইঞ্জেকশন!”

ক্যাপশনের পরবর্তী অংশে আরও লেখা হয়, “এসংক্রান্ত কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পরেছে স্যোশালমিডিয়াগুলোতে। বলা হচ্ছে, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের অনেক স্কুলে মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের জন্য ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে, বিশেষ করে মুসলিম মেয়েদেরকে। তারা আপত্তি করলে জোড় করেই দেওয়া হচ্ছে এসব ইনজেকশন। এতে অনেক মেয়েই স্কুলেই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। একজন ভিডিও পোস্ট করে লিখেছে, তোমাদের মেয়েদের স্কুলে দেওয়া ইনজেকশন নিতে নিষেধ করো, এমনকি যদি তাদের উপর জোর করা হয়, মেয়েদের একসাথে প্রতিবাদ করা উচিত, আমি টিমের কাছ থেকে এই বার্তাটি পেয়েছি, গবেষণার মাধ্যমে এর পূর্ণ প্রমাণ পাওয়া গেছে, আমার এক বোন যিনি নিজেই এই সব দেখেছেন, তিনি নিজের পরীক্ষা করিয়েছেন, এটি ব্লাড ক্যান্সার বলে দেওয়া হচ্ছে, আল্লাহর দোহাই, মেয়েদের সাবধান করুন! ৮ থেকে ১৫ বছর বয়সী মেয়েদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে, বিশেষ করে মুসলিম মেয়েদের। ঐ ব্যক্তি আরও লিখেন যে, #বিঃদ্রঃ আমার তালিকার সকল ভাই ও বোনদের কাছে অনুরোধ করছি আমার এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য, অন্যথায় আগামী প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে।মেয়েদের রক্ষায় এগিয়ে আসুন আমাদের আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করুন।” (ক্যাপশনের সকল বানান অপরিবর্তিত)

আরও পড়ুন

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল ভিডিও-র দাবিটি মিথ্যে। প্রথমত, ভারতের কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বলপূর্বক এই ধরনের ভ্যাকসিন বা টিকা দেওয়ার নজির নেই। দ্বিতীয়, ভিডিওটি ভারতের নয় বরং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের।

Advertisement

সত্য উন্মোচন

ভাইরাল ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে ওই একই ভিডিও বাশারাত রাজা নামের এক পাকিস্তানি সাংবাদিকের এক্স হ্যান্ডেলে পাওয়া যায়।

২০২৪ সালের ৯ মে ভিডিওটি পোস্ট করে তিনি যে ক্যাপশন উর্দু ভাষায় লেখেন, তার বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, “এটিও দাদিয়ালের একটি দৃশ্য যেখানে পুলিশ এবং বেসামরিক পোশাক পরিহিত অজ্ঞাত ব্যক্তিরা স্কুলে অতিরিক্ত কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে, যার ফলে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী নারী শিক্ষার্থীরা অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন।” প্রসঙ্গত, দাদিয়াল হলো পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মিরপুর জেলার একটি তেহসিল।

এই ঘটনার বিষয়ে সার্চ করা হলে পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম ডন-এর একটি খবর মেলে যা ২০২৪ সালের ১০ মে প্রকাশ পেয়েছিল। খবর অনুযায়ী, উক্ত সময়ে জম্মু কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটির ঘোষিত 'লং মার্চ' ঠেকাতে পুলিশ ৭০ জনেরও বেশি কর্মীকে আটক করে, এবং এই আটকের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা মকবুল বাট শহীদ চকে বিক্ষোভ করার পর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

পরবর্তী সময় এই বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম ডন-এর একটি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন পাওয়া যায় যা গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশ পেয়েছিল। যেখানে এই একই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা হয়েছিল। এবং সেখানে উল্লেখ করা হয় যে ভিডিওটি কোনও টিকাকরণের অংশ নয়। বরং পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাস স্কুলে গিয়ে পড়লে নারী শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই প্রতিবেদনে ওই ঘটনার অপর একটি ভিডিও যোগ করা হয় যা নিচে দেখা যাবে।

অর্থাৎ, বুঝতে বাকি থাকে না যে ২০২৪ সালের মে মাসে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের স্কুলে টিয়ার গ্যাসে ছাত্রীদের অসুস্থ হওয়ার ভিডিও মিথ্যে দাবিতে ছড়ানো হয়েছে।

Fact Check

Claim

ভারতে ক্যানসারের ভ্যাকসিনের নামে মুসলিম ছাত্রীদের বন্ধ্যাত্বকরণের টিকা লাগানো হচ্ছে।

Conclusion

ভিডিওটি পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মিরপুর জেলার দাদিয়াল তেহসিলের। ২০২৪ সালের ৯ মে একটি বিক্ষোভে পুলিশের ছোড়া টিয়ার গ্যাস স্কুলে এসে পড়ায় ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement