ক্লাবে তাঁরা সতীর্থ। কিন্তু গতকাল কাতারের লুসেল স্টেডিয়ামে তাঁরাই একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হয়েছিলেন। দু'জনেই রীতিমতো জ্বলে ওঠেন। দু'জনেই নিজের নিজের দলের পারফর্মেন্সের কারিগর হিসেবে প্রমাণ করেন নিজেদের। কথা হচ্ছে লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপেকে নিয়ে। আর ফাইনাল ম্যাচের পর তাঁদেরই আরেক ক্লাব সতীর্থ নেইমারের একটি ভিডিয়ো সোশ্য়াল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিয়োটিতে নেইমারকে টিভিতে কোনও একটি ফুটবল ম্যাচ দেখতে দেখা যাচ্ছে। পর মুহূর্তেই স্ক্রিনে দেখা যাচ্ছে মেসিকে ফাইনাল ম্যাচের প্রথম পেনাল্টি গোলটি করতে। আর তারপরই নেইমারকে আনন্দে লাফিয়ে পাশের জনের কোলে উঠে পড়তে দেখা যাচ্ছে।
নেটিজেনদের একাংশ ভিডিয়োটি শেয়ার করে বলছেন যে মেসির গোল দেখে আনন্দে লাফিয়ে উঠেছেন নেইমার। লেখা হয়েছে, "একজন মেসি জিতলে জিতে যাই প্রাণের প্রিয় বন্ধু নেইমার বন্ধুর হয়ে জবাবটা তাহলে দিয়েই দিলো # Neymar Jr. # Leo Messi." উল্লেখ্য, মেসি, নেইমার ও এমবাপে তিনজনেই ফ্রান্সের প্যারিস সাঁ জা ক্লাবে খেলেন।
ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল পুরনো এবং সম্পাদিত। আসলে নেইমার এমবাপের একটি গোলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন।
আফয়া অনুসন্ধান
নেইমারের এহেন উদযাপনের বিষয়ে বিশদে কিওয়ার্ড সার্চ করতেই আমরা এই একই ভিডিয়ো খুঁজে পাই ফান চ্যানেল নামের একটি ভ্য়ারিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে। এই ভিডিয়োটি রিল আকারে প্রায় সাত মাস আগে ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছিল। যা থেকে একটি বিষয়ে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায় যে ভিডিয়োটির সঙ্গে গতকালকের ফাইনাল ম্যাচের কোনও যোগসূত্র থাকতে পারে না।
সেই ভিডিয়োতে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছিল যে নেইমারের সামনে থাকা টিভিতে ম্যাচের স্কোরকার্ডে দুই দলের নামের জায়গায় MU অর্থাৎ ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, ও PAR অর্থাৎ প্যারিস সাঁ জা লেখা দেখা যাচ্ছিল।
এরপর আমরা আসল ভিডিয়োটি খুঁজে বের করার চেষ্টায় ভাইরাল ভিডিয়োটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তখন ২৫ সেকেন্ডে আসল ভিডিয়োটি ইএসপিএন-র ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে খুঁজে পাই যা ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপলোড করা হয়েছিল।
ভিডিয়োটি আপলোড করে সেটি ম্যাঞ্চেসটার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে করা কিলিয়ান এমবাপের গোল বলে উল্লেখ করা হয়।
ইএসপিএন-এর ওয়েবসাইটে এই ম্যাচটির বিশদ তথ্য় আমরা দেখতে পাই। যেখানে উল্লেখ করা হয় যে চ্য়াম্পিয়ন্স লিগের রাউন্ড অফ ১৬-তে এই গোলটি হয়েছিল। ৬০ মিনিটের মাথায় এমবাপে পিএসজি-র হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন।
সুতরাং, ভাইরাল ভিডিয়োটি যে মিথ্যে দাবির সঙ্গে শেয়ার করা হচ্ছে তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে বিশ্বকাপ ফাইনালে মেসির গোলের পর নেইমার কীভাবে আনন্দে ফেটে পড়ছেন।
ভাইরাল ভিডিয়োটি ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে এমবাপের গোলে পর নেইমার এভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন।