Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: কাতারে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ইরানের হামলা দাবিতে ছড়াল ইরাকে পেট্রোল পাম্পে আগুনের ভিডিও

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি গত রবিবার মধ্যরাতে ইরাকের বসরা শহর সংলগ্ন আল-কুরনা জেলার একটি গ্যাস স্টেশন বা পেট্রোল পাম্পে আগুন লাগার দৃশ্য। এর সঙ্গে কাতারের মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ইরানের হামলার কোনও সম্পর্ক নেই।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 24 Jun 2025,
  • अपडेटेड 3:36 PM IST

গত সপ্তহে রানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল আমেরিকা। আর তারপরেই কড়া জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ইরান। অবশেষে সোমাবর গভীর রাতে কাতার-সহ মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক মার্কিন সেনাঘাঁটি হামলা চালিয়েছে ইরান। আর এই সার্বিক পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে এই সংক্রান্ত তথাকথিত একটি ভিডিও।

যেখানে কোনও একটি স্থানে দাউ-দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে পৌঁছেছে দমকলের একটি গাড়ি। পাশাপাশি ঘটনাস্থলটি ঘিরে রয়েছেন বেশকিছু মানুষ। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, সেটি কাতারের রাজধানী দোহা সংলগ্ন মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দৃশ্য। 

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “Breaking News.. দোহার কাছে কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, এই ঘাঁটিতে ১০,০০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। তাদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।” (সব বানান অপরিবর্তিত)

আরও পড়ুন

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি গত রবিবার মধ্যরাতে ইরাকের বসরা শহর সংলগ্ন আল-কুরনা জেলার একটি গ্যাস স্টেশন বা পেট্রোল পাম্পে আগুন লাগার দৃশ্য। এর সঙ্গে কাতারের মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ইরানের হামলার কোনও সম্পর্ক নেই।

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল দাবি ও ভিডিওটির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২৫ সালের ২৩ জুন ইরাক ভিত্তিক দুটি সংবাদমাধ্যম Alssaa Network-এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “বসরার উত্তরে আল-কুরনা জেলার এক্সপ্রেসওয়ের একটি গ্যাস স্টেশন অর্থাৎ পেট্রোল পাম্পে আগুন লেগেছে।”

এই একই দাবি-সহ একই ভিডিওটি অপর এক ইরাক ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম 964 media-র অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল এবং সৌদি আরব ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া ইরাকের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলেও পাওয়া যায়। এরপর ভাইরাল ভিডিওর সঙ্গে Alssaa Network-সহ বাকি সংবাদমাধ্যমে পাওয়া ভিডিওর ফ্রেমের তুলনা করলে আমরা নিশ্চিত হয় যে দুটি ভিডিওই একই স্থানের। অর্থাৎ সেটি ইরাকের বসরা শহর সংলগ্ন আল-কুরনা জেলার একটি পেট্রোল পাম্পে আগুন লাগার দৃশ্য। নিচে উভয় ভিডিওর তুলনা দেখা যাবে।

Advertisement

এরপর এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে এই সংক্রান্ত পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে চলতি বছরের ২২ জুন ন্যাশনাল ইরাকি নিউজ এজেন্সিতে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রবিবার গভীর রাতে ইরাকের বসরা শহর সংলগ্ন আল-কুরনা জেলায় অবস্থিত আল-আমাল জাতীয় জ্বালানি স্টেশনের ভিতর একটি পেট্রোল বোঝাই ট্যাঙ্কারে আগুন লাগে।

বসরার সিভিল ডিফেন্সের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাজেন মোহাম্মদ লাফতারকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা যথা সময়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছে এবং এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। পাশাপাশি সিভিল ডিফেন্সের ব্রিগেডিয়ার ওই জ্বালানি স্টেশনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা সংক্রান্ত শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। ইরাক ভিত্তিক অপর এক সংবাদমাধ্যম আল মিরবাদেও এই একই তথ্য দেওয়া হয়েছে।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, কাতারের মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ইরানের হামলার দৃশ্য দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা হচ্ছে ইরাকের পেট্রোল পাম্পে আগুন লাগার ভিডিও।

Fact Check

Claim

ভিডিওতে কাতারের রাজধানী দোহা সংলগ্ন মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

Conclusion

ভিডিওটি গত রবিবার রাতে ইরাকের বসরা শহর সংলগ্ন আল-কুরনা জেলার একটি গ্যাস স্টেশন বা পেট্রোল পাম্পে আগুন লাগার দৃশ্য। এর সঙ্গে কাতারের মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ইরানের হামলার কোনও সম্পর্ক নেই।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement