Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: বাংলাদেশের MP আনওয়ারুলের মৃতদেহ দাবি করে ভাইরাল ভুয়ো ছবি

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে কাফন পরিহিত একটি মৃতদেহের ছবি। দাবি করা হচ্ছে, সেটি সদ্য কলকাতায় খুন হওয়া বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমের দেহ।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 25 May 2024,
  • अपडेटेड 2:52 PM IST

গত ১২ মে ভারতে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিম। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না। গত ২২ মে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, কলকাতায় পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে আনওয়ারুলকে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডির সঙ্গে যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশের পুলিশ।

তবে এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে আনওয়ারুলের মৃত্যু সংক্রান্ত বেশ কিছু পোস্ট। সেখানে আনওয়ারুলের ছবির সঙ্গে একটি কাফন পরিহিত মৃতদেহের ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, সেটি সদ্য কলকাতায় খুন হওয়া বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুলের দেহ।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ছবিটি পোস্ট করে লিখেছেন, “কলকাতার নিউটাউন থেকে, ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি, আনোয়ারুল আজীম আনারের "লা'শ" উদ্ধার।” (ক্যাপশনের সব বানান অপরিবর্তিত।) একই দাবি-সহ আরও পোস্ট দেখতে এখানে ক্লিক করুন। এমনই একটি পোস্টের আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে।

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল মৃতদেহের ছবিটি বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমের নয়। বরং সেটি অন্য এক ব্যক্তির। আনওয়ারুলের দেহ এখনও উদ্ধার হয়নি।

 কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল পোস্টের মৃতদের ছবিটি আসলেই বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমের কিনা সেই সংক্রন্ত তথ্য জানতে আমরা ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তখন আমরা দেখতে পাই গত ২২ মে সকাল ৭টা ৯ মিনিটে জাভেদ ইকবাল জর্ডান নামক এক ফেসবুক ব্যবহারকারীর তরফে এই একই ছবি পোস্ট করা হয়েছে। 

ছবিটি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, “২১/০৫/২০২৪ আমার বড় বোনের একমাত্র ছেলে আসিফ পারভেজ আনুমানিক ৯/৩০ ঘটিকার সময় স্টক জনিত কারণে ইন্তেকাল করেছে, ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৩৩ বছর, ঝিনাইদহ হামদহ খন্ধকার পাড়া।” (ক্যাপশনের সব বানান অপরিবর্তিত।)

Advertisement

এর পাশাপাশি আমরা গত ২৩ মে জাভেদ ইকবাল জর্ডানের ফেসবুক প্রোফাইলে এই সংক্রান্ত অপর একটি পোস্ট দেখতে পাই। যেখানে তিনি তার বোনের ছেলের মৃতদেহকে সাংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমের দেহ বলে দাবি করার প্রতিবাদ করেছেন। পাশাপাশি তিনি যারা এই সংক্রান্ত পোস্ট করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।

এমনই একটি দাবি সংক্রান্ত পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, “এই ছবিতে যে লাশ টা দেখতে পাচ্ছেন এই লাশের ছবিটা হল আমার ভাগ্নের  মারা গেছে ২১-৫-২০২৪ তারিখে রাত্রি 9 টার সময় আমি ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম আমার ভাগ্নেকে নিয়ে আমার ভাগিনার এই ছবির কাটপিস করে আনারুল এমপি সাহেবের লাশের ছবি হিসাবে ব্যবহার করেছেন আমি এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আইন অনুব্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাচ্ছি।” (ক্যাপশনের সব বানান অপরিবর্তিত।)

এরপর আমরা একাধিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যে জানার চেষ্টা করি যে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমের মৃতদেহ এখনও পর্যন্ত পাওয়া গেছে কিনা। তখন আমরা গত ২৪ মে এবিপি আনন্দের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “আনওয়ারুলকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। তারপর তার গোটা শরীরের চামড়া ছাড়ানো হয় এবং মাংস ও সমস্ত হাড় কুচি কুচি করে কেটে প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে নিয়ে বেরিয়ে যায় আততায়ীরা।”

পাশপাশি সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে সেই মাংস, হাড় ফেলে দেওয়া হয় কলকাতার বিভিন্ন এলাকায়। ইতিমধ্যেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে বনগাঁ থেকে জুবের ওরফে জিহাদ নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডির। একই সঙ্গে দেহাংশের খোঁজে তল্লাশি চালানো হয় হচ্ছে। কিন্তু জানা যাচ্ছে এখনও পর্যন্ত  কিছুই পাওয়া যায়নি।”

উপরে উক্ত তথ্য থেকে এটা স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমের মৃ্ত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে গত ২২ মে। অন্যদিকে তাঁর মৃতদেহ দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবিটি ভাইরাল করা হচ্ছে, সেটি বাংলাদেশের ঝিনাইদহের অন্য এক ব্যক্তির মৃতদেহের ছবি। যিনি গত ২১ মে স্ট্রোক জনিত কারণে মারা গিয়েছেন।

ফ্যাক্ট চেক

দাবি

বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমের দেহ উদ্ধার।

ফলাফল

ভাইরাল মৃতদেহের ছবিটি বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমের নয়। বরং সেটি অন্য এক ব্যক্তির। আনওয়ারুলের দেহ এখনও উদ্ধার হয়নি।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের नंबर 73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement