Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তকরণের 'রেট' নির্ধারণ বাংলাদেশে? না, এই ভাইরাল নোটিস জাল

রীতিমতো নোটিস দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানালো বাংলাদেশের ইসলামী সংগঠন? এমনই তাজ্জব করা দাবি-সহ সোশ্য়াল মিডিয়ায় একটি নোটিসের ছবি বেশ ভাইরাল হতে শুরু করেছে। 

ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 15 May 2024,
  • अपडेटेड 2:34 PM IST

হিন্দুদের নানা বর্ণের মেয়েদের, এবং পরিবারকে ধর্মান্তরিত করতে পারলেই মোটা টাকা পুরস্কার! রীতিমতো নোটিস দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানালো বাংলাদেশের ইসলামী সংগঠন? এমনই তাজ্জব করা দাবি-সহ সোশ্য়াল মিডিয়ায় একটি নোটিসের ছবি বেশ ভাইরাল হতে শুরু করেছে। 

এই ছবিতে বাংলাদেশ জমিয়ত আহাল-আল-হাদিত নামের একটি সংগঠনের লেটার প্যাডে একটি বিজ্ঞপ্তি দেখা যাচ্ছে। ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তারিখের এই লেটার প্যাডে যে বক্তব্য রয়েছে তা হুবহু নীচে তুলে ধরা হল। 

"আপনারা যারা দাওয়াতী কাজে অংশগ্রহন করছেন আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আপনাদের উপর আল্লাহতালার রহমত বর্ষিত হোক। আমাদের দলের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকল শিবিরদের জন্য নতুন পুরষ্কার ধার্য করা হয়েছে। তা নিম্নরুপ:

আরও পড়ুন

ব্রাক্ষন মেয়ে: ৩,০০,০০০ টাকা।

ভারতীয় বাঙালী মেয়ে:- ২,০০,০০০ টাকা

নমশুদ্র:- ৫০,০০০ টাকা।

পুরো পরিবার: ৫,০০,০০০ টাকা।"

অর্থাৎ উপরিউক্ত নানা বর্ণের মেয়েদের, বা পুরো পরিবারের ধর্মান্তকরণ করতে পারলে এই অর্থরাশি পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে বলে দাবি করা হয়েছে। 

এই ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশনে অনেকেই লিখেছেন, "হিন্দু মেয়েরা দেখে যাও তোমাদের কার কতো রেট। বাংলাদেশী মাদরাসা থেকে তোমাদের রেট নির্ধারণ হয়েছে। কোনো লুঙ্গি বাহিনী যদি হিন্দু মেয়েকে লাভ জেহাদে ফাসিয়ে বিয়ে করতে পারে তাদের পুরষ্কার দেয়া হবে বলছে।" এই পোস্টের আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে। 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে পেয়েছে যে ভাইরাল এই নোটিসটি জাল। অন্য একটি নোটিসের উপর এই লেখাগুলি ছেপে মিথ্যে রটানো হচ্ছে। 

কীভাবে জানা গেল সত্যি

এই বিষয়ে সার্চ শুরু করে সবার প্রথম আমরা দেখতে পাই যে, গত ২ এপ্রিল Voice Of Bangladeshi Hindus নামে একটি এক্স হ্যান্ডেল থেকে এই ছবি পোস্ট করে দাবি করা হয়েছিল তাদের টিম নাকি হ্যাক করে এই নোটিসের সন্ধান পেয়েছে। 

Advertisement

এরপর আমরা কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে খুঁজে দেখার চেষ্টা করি যে বাংলাদেশের মূল ধারার সংবাদ মাধ্যমে এই সংক্রান্ত কোনও খবর ছাপা হয়েছে কিনা। কিন্তু তেমন কোনও খবর আমাদের নজরে পড়েনি। তবে ভাইরাল নোটিসটি খুব ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করলে সেখানে বেশ কিছু অসঙ্গতি নজরে পড়ে। 

যেমন, এই একটি নোটিসে পৃথক দুটি বাংলা ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। যা কোনও নোটিস লেখার ক্ষেত্রেই করা হয় না। যেমন, তারিখ থেকে শুরু করে "প্রাপক, সভাপতি/সেক্রেটারী...জেলা/মহানগর জমঈয়তে আহলে হাদীস" কথাগুলি, সেই সঙ্গে ধন্যবাদান্তে নাম ও বাকি লেখা গুলি একই ধরনের ফন্টে রয়েছে। 

কিন্তু, "বিশেষ বিজ্ঞপ্তি" এবং "আপনারা যারা দাওয়াতী......পুরো পরিবার: ৫,০০,০০০ টাকা" লেখাগুলির ক্ষেত্রে অন্য ধরনের একটি ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। যে ফন্টগুলি অন্যরকম ও খানিকটা অস্বাভাবিক, সেগুলি উপরে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে দেওয়া হল। 

যেহেতু ভাইরাল নোটিসে এর তারিখ উল্লেখ করা হয়েছিল, তাই আমরা বাংলাদেশের জমিয়ত আহাল-আল-হাদিত নামের এই সংগঠনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে সন্ধান করি এটা জানতে যে উক্ত দিনে এখান থেকে আদৌ এই ধরনের কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল কিনা। 

তখন দেখা যায়, ওই একই তারিখে আসলে অন্য একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দেশব্যাপী মসজিদগুলিতে কুরআন ও সহীহ হাদীসের দারস চালু করার সিদ্ধান্ত আমল করার জন্য সকলকে আহ্বান জানানো হয়েছিল। 

ভাইরাল ও আসল নোটিস দুটি পাশাপাশি রেখে তুলনা করলে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় যা এই নোটিসের কয়েকটি অংশে আলাদাভাবে এডিট করে শব্দ জুড়ে মিথ্যে দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে। 

আসলে ওই ইসলামী সংগঠনটি এই ধরনের কোনও বিজ্ঞপ্তি জারিই করেনি। গত এপ্রিল মাসে প্রথমে ইংরেজিতে এই জাল নোটিসের ছবি-সহ ছবিটি বেশ ভাইরাল হয়েছিল। তখনও ইন্ডিয়া টুডের পক্ষ থেকে এর সত্যতা যাচাই করা হয়েছিল। 

 

Fact Check

Claim

এই নোটিসে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশী ইসলামিক সংগঠন কীভাবে হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তকরণ করার জন্য মোটা টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। 

Conclusion

এই নোটিসটি জাল ও ভুয়ো। আসল নোটিসে কারসাজি করে এই নোটিসটি তৈরি করা হয়েছে। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement