ফ্যাক্ট চেক: হিন্দু মহিলাকে উত্যক্ত করায় মুসলিম যুবককে মারধর? না, উভয়ই একই সম্প্রদায়ের

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের ছুটমলপুরে এক হিন্দু মহিলাকে লাভ জিহাদের উদ্দেশ্যে উত্যক্ত করায় এক মুসলিম যুবককে আটকে বেধড়ক মারধর করে ওই মহিলা। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “লা*ভ জি*হা*দের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছিল এই লা*ভ জা*হা*দি। কিন্তু এই হিন্দু শেরনী তাকে ধরে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়েছে  উত্তর প্রদেশের ছুটমলপুরের ঘটনা।..” (সব বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি ২০২১ সালের জুলাই মাসে উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরে তোলা হয়। এতে যে মহিলা এবং যুবককে দেখা যাচ্ছে তারা দু’জনেই মুসলিম। এর সঙ্গে হিন্দু মহিলাকে উত্যক্ত বা শ্লীলতাহানি করার কোনও সম্পর্ক নেই।

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল দাবি ও ভিডিওটির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২১ সালের ২৪ জুলাই একটি এক্স হ্যান্ডেলে এই একই ভিডিও পাওয়া যায়। পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভিডিওর মহিলাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ওই যুবককে মারধর করা হয়েছিল।

এরপর এই সংক্রান্ত পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর একটি এক্স হ্যান্ডেলেও এই একই ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানেও ভিডিওটিকে উত্তরপ্রদেশের ছুটমলপুরে এক হিন্দু মহিলাকে উত্যক্ত করার অভিযোগে এক মুসলিম যুবককে মারধর করার দৃশ্য হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ভিডিওর কেমেন্ট সেকশনে আমরা উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর জেলা পুলিশের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি টুইট দেখতে পাই। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “এই ঘটনাটি প্রায় ৩ বছরের পুরনো এবং উভয় পক্ষই একই সম্প্রদায়ের মানুষ। ফতেহপুর থানা ইতিমধ্যে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ নথিভুক্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।”

এরপর এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধান চালালে ২০২১ সালের ২৪ জুলাই একটি এক্স হ্যান্ডেল থেকে পোস্ট করা এই একই ভিডিওর কমেন্ট সেকশনে সাহারানপুর পুলিশের অন্য একটি টুইট পাওয়া যায়। সেখানে সাহারানপুর পুলিশের তরফে ভাইরাল ভিডিওর মহিলাটির একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। মহিলার বিবৃতি অনুযায়ী তিনি এবং ভিডিওর যুবক উভয়ই মুসলিম। ভাইরাল ভিডিওর কথা উল্লেখ করে ওই মহিলা জানান, তার নাম তসলিম এবং তার স্বামীর নাম নওশাদ। পাশাপাশি ভিডিওতে যে যুবককে তিনি মারছেন তার নাম সাকিব এবং তার বাবার নাম তাহির। তিনি আরও জানান, অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত বিবাদের জেরে তিনি সাকিবকে মারধর করেছিলেন।

এ থেকে প্রমাণ হয় যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মুসলিম মহিলা ও যুবকের বিবাদের পুরনো ভিডিও মিথ্যে সাম্প্রদায়িক রং লাগিয়ে শেয়ার করা হচ্ছে।