Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: অবৈধভাবে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার নিশীথ প্রামাণিক?

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের বাংলাদেশে পালানোর দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। বরং তাঁর ভাইরাল ছবিটি ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর আরজি কর ধর্ষণ কাণ্ডের প্রতিবাদে কোচবিহারের জেলা শাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় তোলা হয়েছিল।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 06 Nov 2025,
  • अपडेटेड 10:00 AM IST

মঙ্গলবার থেকে পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর প্রক্রিয়া। আর পরিস্থিতির মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিকের একটি ছবি। যেখানে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ঘিরে বা আটক করে রেখেছেন বেশকিছু পুলিশ কর্মী। ছবিটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, SIR আবহে রাতের অন্ধকারে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টার অভিযোগে বিজেপি নেতা তথা কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে গ্রেফতার করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন, “শুভ রাত্রি বলার আগে একটু স্বস্তি অনুভব করুন। এমন দৃশ্য আরো বেশি বেশি দেখতে পাবো অশা করি, এরা বিজেপি নেতা মন্ত্রী সাংসদ কিন্তু ভারতের নাগরিক নয়, এটাই বিজেপি।” পাশাপাশি, ছবির ফ্রেমের উপর তিনি লিখেছেন, “BREAKING NEWS রাতের অন্ধকারে কাঁটাতার টপকাতে গিয়ে পুলিশের জালে বিজেপি নেতা।” (সব বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের বাংলাদেশে পালানোর দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। বরং তাঁর ভাইরাল ছবিটি ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর আরজি কর ধর্ষণ কাণ্ডের প্রতিবাদে কোচবিহারের জেলা শাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় তোলা হয়েছিল।

আরও পড়ুন

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

প্রথমত, ভাইরাল ছবি এবং দাবিটি সন্দেহজনক। কারণ নিশীথ প্রামাণিক একজন প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি লুকিয়ে রাতের অন্ধকারে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করবেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। আর তাছাড়া তিনি যদি সত্যিই এহেন কাজ করে থাকতেন, তাহলে সেই সংক্রান্ত খবর অবশ্যই প্রথম শ্রেণির সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতো। কিন্তু আমাদের অনুসন্ধানে এমন কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য বা প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি যা থেকে এর সত্যতা প্রমাণ হয়। 

তাই এরপর ভাইরাল ছবির সত্যাতা জানতে সেটি নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর সিএন তথা ক্যালকাটা টেলিভিশন নেটওয়ার্কে এই একই ছবি-সহ একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “বিজেপির জেলাশাসক অভিযানে উত্তেজনা, গ্রেফতার ২২ বিজেপি নেতাকর্মী। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে জেলাশাসকের কর্মসূচি ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। আন্দোলনে নেমে মিছিল থেকেই গ্রেফতার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক।”

Advertisement

এরপর উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে পরবর্তী অনুন্ধান চালালে ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর সংবাদ প্রাতিদিনের ওয়েবসাইটেও এই একই ছবি-সহ এই সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “আরজি কর ধর্ষণ কাণ্ডের প্রতিবাদে কোচবিহারে জেলা শাসকের কার্যালয়ে বিজেপির তরফে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। নিশীথ প্রামাণিকের নেতৃত্বে আয়োজিত সেই কর্মসূচিতে প্রাক্তন কোচবিহারের সাংসদ-সহ বিজেপি কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করেছিল পুলিশ। পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে বিজেপি কর্মীরা। আর এই সার্বিক পরিস্থিতির জন্য নিশীথ প্রামাণিক-সহ কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।” নিউজ ১৮ বাংলার ইউটিউব চ্যানেলেও বিজেপির সেই কর্মসূচির ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

এখানে উল্লেখ্য, ২০২১ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকে বাংলাদেশের নাগরিক বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রিপুন বোরা। আর সেই চিঠি হাতিয়ার করে সেই সময় তৃণমূলও নিশীথের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল। যদি নিশীথ বরাবরই নিজেকে ভারতের নাগরিক বলেই দাবি করে এসেছেন।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, অবৈধভাবে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিক দাবিতে ছড়ানো হচ্ছে তাঁর পুরনো এবং অসম্পর্কিত ছবি।

Fact Check

Claim

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, SIR-র আবহে রাতের অন্ধকারে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টার অভিযোগে বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  

Conclusion

নিশীথ প্রামাণিকের ভাইরাল ছবিটি ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে কোচবিহারের জেলা শাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় তোলা হয়েছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement