Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: ‘অযোগ্য’ শিক্ষকদের তালিকায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী?

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল পোস্টটি বিভ্রান্তিকর। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী কোয়েল মজুমদার ২০১৬-র প্যানেলে নয় বরং ২০০৮ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন। তাই তাঁর চাকরিও হারায়নি। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের সানাপাড়া এস.সি. হাই স্কুলে কর্মরত।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 24 Apr 2025,
  • अपडेटेड 2:13 PM IST

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক। এবার যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) অফিসের সামনে বস্থানে বসেছেন চাকরিহারারা। আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে এই সংক্রান্ত একটি পোস্ট। 

যেখানে দাবি করা হচ্ছে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী ২০১৬-র প্যানেলে ঘুষ দিয়ে শিক্ষিকা হয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর তিনিও তাঁর চাকরি হারিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী নিজের ওয়ালে লিখেছেন, “বিজেপির সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী অযোগ্য শিক্ষকের তালিকায়। এছাড়া, বেশির ভাগ নাম মেদিনীপুরের।” এই একই দাবি-সহ আরও পোস্ট  দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল পোস্টটি বিভ্রান্তিকর। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী কোয়েল মজুমদার ২০১৬-র প্যানেলে নয় বরং ২০০৮ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন। তাই তাঁর চাকরিও হারায়নি।

আরও পড়ুন

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী কোয়েল মজুমদার যদি অন্যান্য শিক্ষকদের মত এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়ে থাকেন, এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনি যদি তাঁর সেই চাকরি হারান, তাহলে সেই সংক্রান্ত খবর অবশ্যই প্রথম শ্রেণির সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতো। কিন্তু আমরা আমাদের অনুসন্ধানে এমন কোনও তথ্য বা প্রতিবেদন খুঁজে পাইনি যা থেকে এর সত্যতা প্রমাণ হয়।

তবে এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চের সময় চলতি বছরের ২২ এপ্রিল সংবাদ প্রতিদিনে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছিলেন, পেশায় স্কুল শিক্ষিকা তাঁর স্ত্রী ২০১৬ সালের আগের ব্য়াচ হওয়া সত্ত্বেও গতমাসে বেতন পাননি। তবে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এটিকে টেকনিক্যাল সমস্যা বলে উল্লেখ করেছেন এবং এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলে জানিয়েছেন। 

Advertisement

এরপর গত ২১ এপ্রিল জি ২৪ ঘন্টার ইউটিউব চ্যানেলে স্ত্রীর বেতন না পাওয়া সংক্রান্ত সুকান্ত মজুমদারের সেই সাক্ষাৎকারটি পাওয়া যায়। সেখানে সুকান্ত মজুমদারকে বলতে শোনা যায়, “কারা যোগ্য কারা অযোগ্য রাজ্য সরকার ঠিক করতে পারছে না। আগে যারা চাকরি পেয়েছে তাদের বেতনও আটকে রেখেছে সরকার। আমার স্ত্রী-ও এই মাসে মাইনে পাননি। সে যোগ্য-অযোগ্য়ের মধ্য়ে পড়ে না। যে ২৬ হাজার স্কুলে শিক্ষক চাকরি হারিয়েছে সে সমস্ত স্কুলে বেতন হচ্ছে না।” সংবাদ প্রতিদেনের তথ্য এবং সুকান্ত মজুমদারের দাবি অনুযায়ী, তাঁর স্ত্রী কোয়েল মজুমদার ২০১৬ সালের প্যানেলে নয় বরং তার আগে চাকরি পেয়েছিলেন। 

তবে বিষয়টি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে এরপর আমরা কোয়েল মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, “বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী হওয়ার কারণে আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। সুকান্ত মজুমদারের। আমি ২০১৬-র প্যানেলে নয় বরং ২০০৮ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলাম। ওই বছর এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তরবঙ্গ বিভাগে আমি দ্বিতীয় ব়্যাঙ্ক করেছিলাম। এবং ২০০৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন হাই স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দিয়েছিলাম। তবে বর্তমানে আমি মিউচুয়াল ট্রান্সফার নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের সানাপাড়া এস.সি. হাই স্কুলে কর্মরত রয়েছি।”

এরপর আমরা বিষয়টি সম্পর্কে জানতে কোয়েল মজুমদারের প্রথম স্কুল অর্থাৎ যেখানে তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন সেই তপন হাই স্কুলে যোগাযোগ করি। তপন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মওদুদ-ও আমাদের এই একই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “আমি ১৯৯৬ সাল থেকে তপন হাই স্কুলে শিক্ষকতা করছি। কোয়েল মজুমদার ২০০৮ সালে আমার সামনে তপন হাই স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে যোগদান করেছিলেন।”  

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, ২০১৬-র প্যানেলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী কোয়েল মজুমদারের চাকরি চলে যাওয়ার দাবিটি মিথ্যে ও বিভ্রান্তিকর।

Fact Check

Claim

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী ২০১৬-র প্যানেলে ঘুষ দিয়ে শিক্ষিকা হয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর তিনিও তাঁর চাকরি হারিয়েছেন।

Conclusion

সুকান্ত মজুমদারের স্ত্রী কোয়েল মজুমদার ২০১৬-র প্যানেলে নয় বরং ২০০৮ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন। তাই তাঁর চাকরিও হারায়নি। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের সানাপাড়া এস.সি. হাই স্কুলে কর্মরত।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement