Advertisement

বাবা-মায়ের সম্পত্তিতে অধিকার থাকবে না সন্তানের! না, সুপ্রিম কোর্ট এমন কোনও নির্দেশ দেয়নি

শেষ বয়সে বাবা-মায়ের বৃদ্ধাশ্রম যাওয়া রুখতে এ বার সন্তানদের সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করল সুপ্রিম কোর্ট! সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল দাবি

সন্তানকে কি তবে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করল সুপ্রিম কোর্ট? জানুন সত্যিটাসন্তানকে কি তবে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করল সুপ্রিম কোর্ট? জানুন সত্যিটা
ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 14 Oct 2021,
  • अपडेटेड 8:37 PM IST

বাবা-মায়ের বাড়ির উপর আইনগত কোনও অধিকার থাকবে না সন্তান-সন্ততির! ইদানীং সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই দাবি-সহ বেশ কিছু পোস্টকার্ড ঘোরাফেরা করছে। যেখানে বলা হয়েছে, শেষ বয়সে যাতে বাবা-মায়ের ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম না হয়, সেই জন্য এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দেশের শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে। যা বিপুল পরিমাণে শেয়ারও হয়েছে ফেসবুক বাদেও নানা ধরনের গণমাধ্যমে। অনেকেই শীর্ষ আদালতের এই 'সিদ্ধান্ত'কে 'ঐতিহাসিক' আখ্যা দিয়ে কুর্নিশ জানিয়ে তা শেয়ার করেছেন।




একই দাবি সহ পোস্টগুলোর আর্কাইভ দেখতে পাবেন এখানে, এখানে, এখানেএখানে


ইন্ডিয়া-টুডের অ্যান্টি-ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) তদন্তে নেমে দেখতে পায়, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা যে ধরনের দাবি এই পোস্টকার্ডের মাধ্যমে করছেন, তা বিভ্রান্তিকর এবং অসত্য।

আইন কী বলছে?

ভাইরাল দাবির নেপথ্যে সত্যতা যাচাই করতে আমরা প্রথমেই "সম্পত্তির অধিকার আইনে" সুপ্রিম কোর্টের কী বক্তব্য তা একাধিক কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করে দেখি। যেখানে এই দাবির সঙ্গে কোনও সাযুজ্য মেলে না। বরং ২০০৫ সালেই হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংশোধনীর মাধ্যমে স্পষ্ট করা হয়, হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের ছয় নম্বর ধারা অনুযায়ী মেয়েদের সম্পত্তির উপর সমানাধিকার আছে। সেই অধিকার থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা যাবে না।


এই মামলার উদাহরণ টেনেই বছরখানেক আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চ একটি রায় দেয়। আদালত আবারও জানিয়ে দেয়, ২০০৫ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের ছয় নম্বর ধারা অনুযায়ী, (ছেলেদের ন্যায়ে) মেয়েদেরও পৈতৃক সম্পত্তির উপর সমানাধিকার আছে। সেই অধিকার থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা যাবে না। অর্থাৎ, যে ধরনের দাবি ভাইরাল পোস্টের মাধ্যমে নেটিজেনরা করেছেন, তা যে সত্যি নয়, সেটা প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে।  

কী বলছে আইনজীবী মহল?

আরও নিশ্চিত হতে আমরা কথা বলেছিলাম কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী অর্ণব সাহার সঙ্গে। তিনি স্পষ্টতই জানালেন, দু-একটি মামলায় পরিস্থিতির বিচারে কোনও কোনও সময় যে কোনও আদালতই ব্যতিক্রমী মন্তব্য করতে পারে। কিন্তু, ভারতে সম্পত্তির অধিকার কার হবে তা পুরোপুরি ঠিক হয় মূলত দুই ধরনের উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী। দেশের শীর্ষ আদালতও যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, তা এই আইনের আওতায় থেকেই নেয়। সুপ্রিম কোর্টও এই আইনের বাইরে নয়।

অর্ণববাবুর কথায়, "কোনও একক ব্যক্তি যে সম্পত্তির মালিক, তাঁর জীবদ্দশায় সেই সম্পত্তি আদৌ সন্তানরা পাবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন ওই ব্যক্তি নিজেই। যতক্ষণ না তিনি নিজে আইনগতভাবে ঘোষণা করছেন, ততক্ষণ সেই সম্পত্তিতে সন্তানদের আইনত কোনও অধিকার হয় না। আমৃত্যু তিনিই ওই সম্পত্তির মালিকানা ভোগ করবেন। যদি মৃত্যুর আগে উইলের মাধ্যমে তিনি ওই সম্পত্তির মালিকানা অন্য কাউকে হস্তান্তর করে যান, তবে 'ভারতীয় উত্তাধিকার আইন' অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ করা করা হয়। মৃত্যুর যাওয়ার আগে ওই ব্যক্তি যদি কোনও উইল না করেন, তবে 'হিন্দু উত্তরাধিকার আইন' অনুযায়ী সম্পত্তির হস্তান্তর হবে।"


তিনি আরও বলেন 'হিন্দু উত্তরাধিকার আইন' অনুসারে, উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির বর্তমান মালিক যদি কোনও উইলের মাধ্যমে উত্তরাধিকার ঘোষণা না করেন, তবে তার মালিকানা ওই ব্যক্তির স্ত্রী/পুত্র/কন্যাদের কাছেই থাকবে। কিন্তু তিনি যদি উইলের মাধম্যে ওই সম্পত্তির মালিকানা কোনও তৃতীয় ব্যক্তি/পক্ষ/সংগঠনকে দিয়ে যান, তবে তাঁর বাকি পরিবারের সদস্যদের ওই সম্পত্তির উপর কোনও রকম অধিকার থাকবে না, এবং ওই উইলকেও চ্যালেঞ্জ করা যাবে না।

সুতরাং, এটা বলাই যায় যে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ধরনের দাবি ভাইরাল হয়েছে, তার কোনও সত্যতা নেই, এবং তা বিভ্রান্তিমূলক।

 

Advertisement

আরও পড়ুন

Fact Check

Claim

বাবা-মায়ের সম্পত্তিতে সন্তানদের অধিকার থাকবে না, নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট

Conclusion

বিভ্রান্তিকর দাবি, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই ধরনের কোনও নির্দেশ কখনই দেয়নি। কোনও সম্পত্তির বাঁটোয়ারা কী ভাবে হবে, সেই সিদ্ধান্ত 'ভারতীয় উত্তাধিকার আইন' এবং 'হিন্দু উত্তরাধিকার আইন' অনুসারেই নেওয়া হয়। যেখানে এমন কোনও সংশোধনী আনা হয়নি।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement