বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রবিবার ব্রিগেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হল 'পাঁচ লক্ষ কন্ঠে গীতা পাঠ'। এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’।
ব্রিগেডে গীতাপাঠে যোগ দিতে কাতারে কাতারে মানুষ আসেন শহর কলকাতায়। দুপুর ২ টো পর্যন্ত ব্রিগেডে গীতাপাঠ চলে।
গত বছর, লোকসভা ভোটের আগেও, ব্রিগেডেই হয়েছিল লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ। আর কয়েক মাস পরে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রবিবার সেই ব্রিগেডেই '৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠে'র আয়োজন করে সনাতন সংস্কৃতি সংসদ।
৩টি ভাগে ভাগ করে তৈরি করা হয়েছিল মঞ্চ। মূল মঞ্চের নাম দেওয়া হয় পার্থসারথি মঞ্চ। এখানেই বসেন দেড়শো জন সাধু সন্ত। মূল মঞ্চের বাঁদিকের মঞ্চের নাম ছিল চৈতন্য মহাপ্রভু মঞ্চ। আর ডানদিকে ছিল শঙ্করাচার্য মঞ্চ। অনুষ্ঠানস্থলে ঢোকা ও বেরনোর জন্য ২৫টি গেট তৈরি করা হয়।
উদ্যোক্তাদের দাবি, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও নেপাল থেকেও অনেকে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। আমন্ত্রিত ছিলেন মতুয়া-সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা।
গীতা পাঠে যোগ দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই কর্মসূচিতে যোগ দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, দলের প্রাক্তন দুই সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দিলীপ ঘোষও। উপস্থিত হন বিজেপির আরও দুই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় এবং রাহুল সিনহা। ছিলেন বিজেপির আরও অনেক নেতা-নেত্রী।
গীতা পাঠে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন সাধুসন্তরা। উপস্থিত ছিলেন স্বামী জ্ঞানানন্দ, স্বামী ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রী এবং সাধ্বী ঋতম্ভরা। রাজ্যের বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরাও ছিলেন মঞ্চে। কর্মসূচিতে যোগ দেন মতুয়াদের একাংশ।
গীতাপাঠের আগে বেদপাঠ এবং কীর্তনের অনুষ্ঠান হয়। ১২টা নাগাদ গীতাপাঠ শুরু হয়। গীতার প্রথম, নবম এবং অষ্টাদশ অধ্যায় পাঠ করা হয়।
৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে গীতা থেকে মহাভারতের কথা শোনান রাজ্যপাল। ভ্রষ্টাচারের বিরুদ্ধে চড়ালেন সুর। ফের মনে করে করালেন শ্রীকৃষ্ণ-অর্জুনের সমীকরণের কথা। কীভাবে মহাভারতের সেই ভয়ঙ্কর যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণ কৃষ্ণকে সঠিক পথ দেখিয়েছিলেন সেই গল্পও শোনালেন। বললেন, 'শ্রীকৃষ্ণ বারবার অর্জুনকে বলেছিলেন কর্ম করে যাও অর্জুন। আর আজ বাংলা কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।'
ব্রিগেডমুখী সনাতনীদের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করেছিল পূর্ব রেল। শিয়ালদা ও হাওড়া শাখায় চলে বিশেষ ট্রেন।
কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, বনগাঁ, হাসনাবাদ থেকে চলে বিশেষ ট্রেন। লক্ষ্মীকান্তপুর, ডায়মন্ড হারবার ও ক্যানিং থেকেও চালান হয় বিশেষ ট্রেন।