ওয়েডিং ডেস্টিনেশনের নানা রকম কলকাতা আগেই দেখেছে। তবে ট্রামে সম্পূর্ণ বিয়ের আয়োজন বোধহয় এর আগে দেখা হয়নি। যে ট্রাম নিয়ে এত আলোচনা, তার তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত, ফের জনতার দাবিতে একটি ট্রামকে রেখে দেওয়া এসব চলছে, তার মধ্যে এই ঘটনা দারুণ সাড়া ফেলে দিয়েছে।
কলকাতার শাহরুখ ১০৪ বছর পুরনো ট্রামে তাঁর বিয়ের অনুষ্ঠান সেলিব্রেট করে স্ত্রীকে তো চমকে দিলেনই, সেই সঙ্গে গোটা শহর এমনকী সোস্যাল মিডিয়ার নজর কেড়ে নিলেন।
কলকাতার অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী ট্রাম এখন সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যেতে চলেছে সিটি অব জয় থেকে। কলকাতা শহরের প্রাচীন এই ঐতিহ্যকে বাঁচাতে একাংশ মানুষ আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সেই সময়ে ট্রামকে তাদের জীবনে স্মরণীয় করে রাখতে এক অভিনব উদ্যোগ নিলেন এক নব দম্পতি। বলা ভাল বর ও তাঁর পরিবারের লোকজন অভিনব ওয়েডিং ডেস্টিনেশন বেছে নিয়েছিলেন।
আহমেদ হুসেন ওরফে শাহরুখ বিয়ের দিনই তার স্ত্রীকে সারপ্রাইজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তারা ওয়েডিং ডেস্টিনেশন হিসেবে একটি ট্রামে বিয়ের অনুষ্ঠান উদযাপনের পরিকল্পনা করেন।
শাহরুখের বড় ভাই আবদুল রাজ্জাক গত ৩০ বছর ধরে কলকাতা ট্রাম কোম্পানিতে কাজ করছেন। তারা "বলাকা" নামে ১০৪ বছর পুরানো একটি ট্রাম বুক করেছিলেন।
১৪ ডিসেম্বর শনিবার বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। কনে শ্বেতারানী রাই ওরফে আয়েশা খাতুনের জন্য পুরো পরিকল্পনায় ছিল চমক।
যখন সে তার বাড়ি থেকে নেমে আসে, লাল গালিচায় হাঁটার পর, হঠাৎই সে লক্ষ্য করে তার বাড়ির সামনের রাস্তায় একটি সুসজ্জিত ট্রাম দাঁড়িয়ে আছে।
পুরো ট্রামটি ফুল এবং মালা দিয়ে সজ্জিত ছিল। ঠিক যেভাবে গাড়িগুলি বিয়েতে সজ্জিত হয়। ট্রামের সামনে ফুল দিয়ে লেখা ছিল ‘শুধু বিয়ে’। এরপর দুই পরিবারের আত্মীয়দের সঙ্গে ট্রামে করে বিয়ে করতে যান শাহরুখ ও আয়েশা।
বরের দাদা আবদুর রাজ্জাক ইন্ডিয়া টুডেকে জানান, "সিটি অব জয় কলকাতা আগে কখনো ট্রামে বিয়ের অনুষ্ঠান দেখেনি। আমাদের ভাইয়ের বিয়েকে সারা জীবনের জন্য স্মরণীয় করে রাখতে আমরা এই অনন্য পরিকল্পনা করেছি"।
আহমেদ হোসেন ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, "আমি আমার স্ত্রীকে চমকে দিতে চেয়েছিলাম। এটা সত্যিই আমাদের দুজনের জন্যই একটি দারুণ মুহূর্ত ছিল।
মাঝে মাঝে আমি খবরে দেখি যে কলকাতা শহর থেকে ট্রাম সরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু ট্রাম আমাদের হেরিটেজ ঐতিহ্য। শহর থেকে ট্রাম সরিয়ে নেওয়ার পর আমরা এটিকে স্মরণীয় করে রাখার পরিকল্পনা করেছি।"