৫০ বছর আগে কংগ্রেস সরকার দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল যে দিন, সেই ২৫ জুন তারিখটিকে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ হিসাবে পালন করবে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এই নিয়ে কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রকের প্রধান সচিব রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে যে তাঁর আপত্তি রয়েছে, এদিন নবান্নে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'জরুরি অবস্থার ৫০ বছর উপলক্ষ্যে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্র, ২৫ জুন সবজায়গায় পালন করার কথা বলা হয়েছে। মুখ্য সচিবের কাছে কেন্দ্র এই নিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে, আমি এই আইডিয়ার নিন্দা করছি। প্রতিদিন ওরা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে, এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে, নিজেদের পরিকল্পিত নকল ধর্ম মানুষের ওপর চাপিয়ে নিজেদের এজেন্ডা পূরণ করছে, সব রাজ্যের গণতন্ত্র ভেঙ্গে দিচ্ছেন আপনারা, অধিকার ক্ষুণ্ণ করছেন, রোজ রোজ সংবিধান বদলাচ্ছে, মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব করছে।'
নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলনে, ‘দেশে তো প্রতি দিন গণতন্ত্র হত্যা করা হচ্ছে। প্রতি দিনই এই দিবস পালিত হওয়া উচিত। সংবিধান রোজ বদলানো হচ্ছে। পরিকল্পিত ধর্ম চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারা সংবিধানের সম্মানের কথা বলছেন? যাঁরা সংবিধানকে সম্মানই করে না।’ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, ২৫ জুন এরকম কোনও দিবস রাজ্যে পালন করা হবে না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নোটবন্দির সময়েই গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে। কত মানুষকে কত দিন ধরে লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে নোট বদলানোর জন্য। কত মানুষ মারা গিয়েছেন! সেই দিনটাকে কেন ‘ব্ল্যাক মানি ডে’ বলে পালন করা হবে না? পহেলগাঁও হামলার পর পার্লামেন্টে বিশেষ অধিবেশনের দাবি জানানো হয়েছিল। আমাদের দল থেকে পাঁচটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। একটাও উত্তর আসেনি। সন্ত্রাসবিরোধী দিবস একটাও পালন করেছেন আজ পর্যন্ত? এত তো হামলা হয়েছে।’
এরপরেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ নিয়ে স্পষ্ট করে দেন, ‘ওরা ওদের মতো পালন করুক। আমরা এই দিবস পালন করছি না। কারণ, তাহলে আমাদের রোজই এই দিবস পালন করতে হবে। প্রতি দিন এই দিবস পালিত হওয়া উচিত।’ জরুরি অবস্থার ৫০ বছর ২০২৪ সালে পেরিয়ে গিয়েছে। ২০২৫ সালে কেন সেই দিবস পালন করা হচ্ছে? সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার কথায়, 'দেশে তো প্রতিদিন গণতন্ত্র হত্যা করা হচ্ছে। প্রতিদিনই এই দিবস পালিত হওয়া উচিত। সংবিধান রোজ বদলানো হচ্ছে। পরিকল্পিত ধর্ম চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।'