রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের দাবিতে রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখানে আছেন অন্যান্য তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ এবং নেতা–মন্ত্রীরা। রাতেই ওই মঞ্চে এসেছিলেন অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। একটা সাদা এসইউভি-তে চড়ে এসেছিলেন তিনি। খানিকক্ষণ থেকেই যদিও তিনি ফিরে যান।
মঙ্গলবার ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির সাক্ষাৎ করার কথা ছিল অভিষেক-সহ তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের। জানা গিয়েছে, মন্ত্রী সন্ধ্যা সাড়ে ছটায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়েছিলেন। যদিও তিনি দেখা করেননি। তার পরেই টিএমসি প্রতিনিধিদল ধরনায় বসে পড়ে। মন্ত্রী দেখা না করা পর্যন্ত কৃষি ভবনেই বসে থাকার সিদ্ধান্ত নেন অভিষেক ও তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে ধরনা বেশিক্ষণ চলেনি। পুলিশ বলপ্রয়োগ করে তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের বের করে দেয় এবং আটক করে পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ৩ ঘণ্টা পর ছাড়া পান অভিষেকরা। এরপরই অভিষেক দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতায় 'রাজভবন চলো' মিছিলের ডাক দেন।
সেই মতোই বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোর পরে রবীন্দ্র সদন থেকে শুরু হয় মিছিল। যোগ দেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দলের প্রায় প্রথম সারির সমস্ত সাংসদ, বিধায়করাও ছিলেন। তবে রাজ্যপালের দেখা মেলেনি। অভিষেক অভিযোগ করেন, 'রাজ্যপাল আমাদের বিক্ষোভ আন্দোলনে ভয় পেয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। যেমনভাবে গিরিরাজ সিং, সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতিরা।' রাজভবনের সামনে দাঁড়িয়ে সাড়ে সাতটা নাগাদ তিনি জানান, প্রতিনিধিদলের সঙ্গে রাজ্যপাল সাক্ষাৎ না করা পর্যন্ত ধরনামঞ্চ ছাড়বেন না'
গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল রাজভবনের গেটে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়ে এসেছেন। এদিকে, রাজ্যপাল কবে কলকাতা ফিরবেন তা এখনও জানা যায়নি। উত্তরবঙ্গের দুর্যোগ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তিনি আবারও দিল্লি ফিরে গিয়েছেন। আজ তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করবেন বলে সূত্রের খবর। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন অভিষেক। গতকাল তিনি বলেন, জমিদারি প্রথা চালাচ্ছেন রাজ্যপাল।
পাল্টা জবাব এসেছে রাজ্য়পালের তরফেও। রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্যপাল বলেছেন, 'মাটির কাছাকাছি পৌঁছনো জমিদারি নয়। জমিতে না নেমে শহরের বিলাসবহুল আস্তানায় বসে কৃষকদের নিয়ন্ত্রণ করা হল নব্যজমিদারি। রাজ্যপালের কাছে এই বাংলার মাটি এবং তার মানুষ পবিত্র। তৃণমূল কি নিজেদের জমিদারি হারানোর ভয় পাচ্ছে? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনা নিয়ে বলেন, 'ঘেরাও নয়, ঘরে এসো।'