
NDA বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক দল কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের আগে দিল্লিতে রাহুল গান্ধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'দোস্তির' ছবিও দেখেছি দেশবাসী। কিন্তু রাজ্যের বিধানসভা ভোটে সেই ছবি কি দেখা যাবে? তার উত্তর মিলল অবশেষে। তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় সাফ জানালেন, ভোটে জেতার জন্য তাঁদের কংগ্রেসকে প্রয়োজন নেই। পাল্টা দিল কংগ্রেসও। অভিষেকের মন্তব্যকে 'ব্যক্তিগত মতামত' বলে পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। ঝাঁজ বজায় রেখে জানালেন, কংগ্রেস একাই ২৯৪ আসনে প্রার্থী দেবে। অর্থাৎ ছাব্বিশের ভোট প্রচারে রাহুল গান্ধী ও মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে একে অপরের বিপক্ষে বলতেই শোনা যাবে।
বুধবার দিল্লিতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'এই নিয়ে দলের সিদ্ধান্তই শেষ কথা। এখনও পর্যন্ত বাংলায় কংগ্রেসের এমন কিছু নেই যা দেখে আমাদের জোট করতে হবে। এর আগে তাদের লোকসভায় দুটো আসন ছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে আমাদের তরফে একটা আসন ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তারা প্রত্যাখ্য়ান করেছিল। সেই ফলাফল দেখতে পেয়েছেন। দুটো থেকে কমে এখন একটা আসনে তাঁদের সাংসদ। তবে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ই নেবেন।'
অভিষেক আরও বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের জেতার জন্য কংগ্রেসকে দরকার নেই। ২০১৪, ২০১৬, ২০১৯ ও ২০২৪ সালে আমরা নিজেরাই লড়ে জিতেছি। কারও সাহায্যের দরকার পড়েনি। আমাদের লক্ষ্য হল বাংলার রিপোর্ট কার্ড মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া।'
রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, অভিষেকের মন্তব্য থেকেই কার্যত পরিষ্কার, রাজ্যের শাসকদল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নিয়ে এখনই 'সিরিয়াস' নয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হয়তো মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়রা ভাবতে পারেন।
প্রদেশ কংগ্রেস শিবিরও যে জোট করার জন্য মুখিয়ে রয়েছে, এমনটাও নয়। অন্তত তেমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের। তিনি জানান, 'যে কোনও মানুষের বাক স্বাধীনতা রয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও তাই আছে। সেই কারণে তিনি বলেছেন। অনেকেই তো অনেক কথা বলেন।'
শুভঙ্কার সরকার আরও দাবি করেন, বাংলার কংগ্রেস কর্মীরা চাইছেন না তৃণমূলের সঙ্গে জোট। বরং এককভাবে লড়ার পক্ষেই নাকি বেশি মত উঠে আসছে। তিনি বলেন, 'কংগ্রেস রাজ্যের ২৯৪ আসনেই লড়াই করবে। এটা বাংলার মানুষের দাবি। গত ৫০ বছরে বাংলায় কংগ্রেস দল ক্ষমতায় নেই। তবে ২০১১ সালে আমরা তৃণমূলের সঙ্গে জোট করেছিলাম। সেদিন আমরা ছিলাম বলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সরকার তৈরি করতে পেরেছিলেন। তারপর আমরা সরকার থেকে বেরিয়ে আসি। কারণ, আমরা যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা পালন করতে পারিনি। তবে বেরিয়ে আসার সময় শোরগোলও করিনি। তখন সমর্থন করেছিলাম, কারণ মনে হয়েছিল বাংলার মানুষ একটা ভালো সরকার আশা করে। আর কংগ্রেস তো কোনওদিন জোটের দাবি করেনি।'