দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় রাজ্য জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনায় সক্রিয় হয়েছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)। তদন্তের গতি বাড়াতে ইতিমধ্যে SIT-র সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে ৯ জন করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের মোবাইল, পোশাক, সিসিটিভি ফুটেজ এবং ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা নমুনা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্তদের পোশাক ও মোবাইল পরীক্ষা
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূল অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্র ও অন্য দুই অভিযুক্তের ঘরে হানা দিয়ে তাদের অপরাধের সময় পরা পোশাক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, ধর্ষণের মতো ঘটনায় অভিযুক্তদের পোশাকে স্পার্ম, চুল, বা রক্তের চিহ্ন পাওয়া গেলে, তা ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে
কলেজের নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষে ঘটেছিল এই নারকীয় ঘটনা। শুক্রবার সন্ধ্যায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল ওই স্থান পরিদর্শন করে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের মোবাইলও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ঘটনার সময় অভিযুক্তরা ভিডিও ও ছবি তোলে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা সেই ভিডিও উদ্ধার করে মামলার প্রমাণ জোরালো করতে কাজ শুরু করেছেন।
সিসিটিভি ফুটেজ হয়ে উঠতে পারে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ
ঘটনাস্থল সরাসরি সিসিটিভির আওতায় না থাকলেও কলেজ ক্যাম্পাসে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের চলাফেরার স্পষ্ট ছবি ফুটেছে ফুটেজে। পুলিশ ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসে আরও চারটি নতুন ক্যামেরা বসিয়েছে, আগের তিনটি-সহ এখন মোট সাতটি ক্যামেরায় ক্যাম্পাস পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।
আদালতে জবানবন্দি ও মেডিকেল রিপোর্ট
ভুক্তভোগী ছাত্রীর আলিপুর আদালতে গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময় তিনি নিজেই পুলিশকে কলেজের গার্ডরুম দেখিয়ে দেন। পাশাপাশি, তার ও অভিযুক্তদের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মানসিক সহায়তার জন্য তাঁকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
SIT-এর সামনে বারবার মত পাল্টাচ্ছে অভিযুক্তরা
এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। SIT জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে তারা একাধিকবার বক্তব্য পাল্টেছে, যা তদন্তে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। তাই এবার অভিযুক্তদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হবে।
সাক্ষ্যগ্রহণে প্রস্তুতি
বুধবারের ঘটনার সময় কলেজে থাকা ছাত্রছাত্রীদের তালিকা সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সেই অনুযায়ী প্রত্যেককে ডেকে সাক্ষ্য নেওয়া হবে।