তৃণমূলে 'পরিবারতন্ত্র'এর জয়জয়কার! একুশের বিধানসভা ভোটের ফলাফল তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তৃণমূল একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে বিধানসভা ভোটের টিকিট দিয়েছিল। ভোটের ফলে নিরিখে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা অনেকেই ভাল ফল করেছেন।
কোথাও জয়ী বাবা-মেয়ে। আবার কোথাও স্বামী এবং স্ত্রী জিতে গিয়েছেন। তবে একই পরিবারের সব সদস্য হেরে গিয়েছেন, এমন উদাহরণও রয়েছে। বিধানসভার ফলাফল বিশ্লেষণ করে এমনই সপব তথ্য উঠে আসছে।
অভিযোগ করা হচ্ছে তৃণমূলে পরিবারতন্ত্র প্রাধান্য পাচ্ছে। কোথাও বাবা-মেয়ে, কোথাও স্বামী-স্ত্রী আবার কোথাও বা বাবা এবং ছেলেকে প্রার্থী করা হয়েছিল। বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা এমন বেশ কয়েকটি উদাহরণ ছিল।
যেমন দক্ষিণ ২৪ পরগনা মহেশতলা থেকে দুলালচন্দ্র দাস। ওই আসনে আগের বিধায়ক ছিলেন তার স্ত্রী কস্তুরী দাস। তিনি প্রয়াত হওয়ার পর সেখানে উপনির্বাচনে দুলালবাবু জেতেন।
এবং তিনি সেখানকার বিধায়ক নির্বাচিত হন। এবারও তিনি লড়েছিলেন ওই কেন্দ্র থেকে। এবং জিতেওছেন। আর বেহাল পূর্ব কেন্দ্র থেকে লড়েছিন রত্না চট্টোপাধ্যায়।
এর আগে ওই আসনে তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। যিনি রত্নার স্বামী। কিন্তু শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। রত্না ভোটে জিতেছেন।
হুগলিতেও এমন এক উদাহরণ রয়েছে। সেখানকার সিঙ্গুর আসন থেকে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন বেচারাম মান্না। এই কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূলেরই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তবে এবার তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি।
তিনি যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। ওই আসনেই লড়েছিলেন। তবে লাভের লাভ কিছু হয়নি। মাস্টারমশাই দাগ কাটতে পারেননি। বেচারাম সিঙ্গুর থেকে জিতেছেন।
এদিকে, বেচারাম মান্নার স্ত্রী টিকিট দেওয়া হয়েছে তার আগের আসন হরিপাল থেকে। তাঁর স্ত্রী করবী মান্না হরিপাল থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়ছিলেন। আর বেচারামকে দেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের আসন। করবীও জিতে গিয়েছেন।
এমনই একটি উদাহরণ দেখা যাচ্ছে নদিয়াতে। সেখানে শঙ্কর সিং রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম আসন থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি সেখানকারই বিধায়ক। তবে ২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হয়ে তিনি জিতেছিলেন। পরে যোগ দিয়েছিলন তৃণমূলে।
তাঁর ছেলে শুভঙ্করকে টিকিট দিয়েছে তৃণমূল। তাঁর ডাকনাম জিশু। এবার বিধানসভা তিনি চাকদা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন। চাকদার বিদায়ী বিধায়ক রত্না কর ঘোষকে টিকিট দেওয়া হয়নি।
তিনি রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্প দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তবে ভোটের ফল বলছে বাবা এবং ছেলে- দু'জনেই হেরে গিয়েছেন। পিতা-পুত্র বিজেপি প্রার্থীদের কাছে হেরেছেন।