খুব বেশিদিন না, গত নভেম্বর মাসের একটি ঘটনা। রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। বাম জমানায় পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়ে বসুন্ধরা গোস্বামী কলকাতা পুর এলাকার ৯৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। মেয়ে প্রার্থী হতেই পারেন, সেটা নতুন কোনও ব্যাপার নয়, তবে খবরটা হল বাম নেতার মেয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন তৃণমূলের। তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রথমবার ভোটে লড়াই করে জয়ীও হন বসুন্ধরা। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র জাগো বাংলায় লিখতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এই ঘটনা সেই সময় রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। এবার আরও এক বাম নেতার মেয়ে সিপিএম ছাড়লেন বলেই খবর। অনিল বিশ্বাসের মেয়ে অজন্তা বিশ্বাস নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দলের সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করেননি বলেই সিপিএম সূত্রে খবর।
সিপিএমের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন অজন্তা?
অতীতে তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় উত্তর সম্পাদকীয় লেখার জেরে অনিল-কন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে সাসপেন্ড করেছিল সিপিএম। তারআগে অজন্তাকে শোকজ করা হয়। তারপর থেকেই অজন্তার সঙ্গে দলের সম্পর্ক প্রায় ছিন্নই হয়েছিল বলা যায়। জানা যাচ্ছে এ বছর নতুন করে তাঁর সদস্যপদ নবীকরণ করেননি অজন্তা। ফলে দলের সঙ্গে তিনি সম্পর্কচ্ছেদ করলেন, সেরকমটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ সিপিআইএমের কলকাতা জেলার অধ্যাপক শাখার সদস্য ছিলেন অজন্তা । ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই একথা বলাই যায় তিনি আর রাজ্যের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চান না ।
এমনিতেই তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র 'জাগো বাংলা'য় কলম ধরার জন্য সিপিএম তথা আলিমুদ্দিনের নেতাদের রোষে পড়েছিলেন অজন্তা । তাঁকে নিয়ে দলের মধ্যে কম জলঘোলা হয়নি । 'জাগো বাংলা'য় লেখার জন্য তাঁকে সাসপেন্ড পর্যন্ত করা হয় । সেই সাসপেনশন মিটে গেলেও অজন্তা আর সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করেননি । তিনি এই মুহূর্তে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা । প্রায় ২০ বছর ধরে দলের সদস্য ছিলেন অজন্তা । সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ না করায় তাঁর সঙ্গে সিপিআইএমের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিন্ন হল বলেই মনে করা হচ্ছে । তবে দলের তরফ থেকে এমনটাও জানানো হয়েছে আগামী দিনে চাইলে অজন্তা বিশ্বাস আবার দলের সদস্য পদ নিতেই পারেন । এই বিষয়ে অনিল বিশ্বাসের কন্যার কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি । তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য জাগো বাংলায় লেখার কারণে দল যেভাবে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল এতেই বীতশ্রদ্ধ হয়ে আজন্তা নতুন করে তাঁর সদস্যপদ নবীকরণ করাননি । ফলে সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের পরিবারের সঙ্গেও একরকমভাবে সিপিএমের সম্পর্ক ছিন্ন হল বলেই মনে করা হচ্ছে ।