২১ জুলাইয়ের আগের সন্ধ্যাতেই ধর্মতলায় শহিদ সভাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে তাঁকে পুলিশ আটকে দেয় বলে অভিযোগ। দেখা করতে পারেনি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
প্রতিবারের মতো এবারও সমাবেশের চূড়ান্ত প্রস্তুতি দেখতে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই খবর পেয়ে আগাম তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে রবিবার সন্ধ্যায় পৌঁছে গিয়েছিলেন কেষ্টও। কিন্তু মূল মঞ্চের কাছে যাওয়ার অনুমতি মেলেনি তাঁর।
জানা গিয়েছে, মূল সভামঞ্চের ভিতরে ঢুকতে গেলে পুলিশের অস্থায়ী ব্যারিকেডের সামনেই কলকাতা পুলিশের কর্মীরা তাঁকে আটকে দেন। পরে কয়েকটি চেয়ার এনে অস্থায়ী মিডিয়া সেন্টারের নীচে বসতে দেন। ১০ মিনিট অপেক্ষার পর পুলিশ কর্মীদের কাছে অনুরোধ করে অনুব্রত জানান, তাঁর শরীর খারাপ লাগছে। তাই তাঁকে যাওয়ার রাস্তা দেওয়া হোক। এতক্ষণ মূল মঞ্চের দিকে যাওয়ার যে রাস্তার তাঁর জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, সেই রাস্তা দিয়েই তাঁকে বেরিয়ে যেতে বলেন পুলিশ কর্মীরা। তাদের কথা মতো, সেই পথ দিয়েই আর কারও সঙ্গে কথা না বলে বেরিয়ে যান তিনি।
ঘনিষ্ঠেরা জানান, কেষ্টদা অসুস্থতার কারণে দিদির সঙ্গে সাক্ষাৎ না করেই ফিরে এসেছেন। সভাস্থল থেকে চলে যাওয়ার প্রায় ৫৫ মিনিট পর সেখানে পৌঁছন মমতা। মানবপ্রাচীর তৈরি করে দাঁড়ান কলকাতা পুলিশের কর্মীরা।
পুলিশের তরফে অবশ্য অনুব্রত মণ্ডলের পাশাপাশি বজবজের প্রবীণ বিধায়ক অশোক দেব, প্রাক্তন সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী, প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জমান, বিধায়ক ইমানী বিশ্বাসের মতো নেতাদেরও আটকে দেওয়া হয়। যদিও পরবর্তীতে বজবজের বিধায়ক অশোক এবং কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ বর্মা বাসুনিয়েকে ঘুরপথে মমতার কাছে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে কেষ্টর সঙ্গে দিদির সাক্ষাৎ না হওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। যে স্থান থেকে কেষ্টকে আর ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি, সেখান থেকেই ভিতরে ঢুকতে দেখা গিয়েছে কলকাতার পুরসভার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা তৃণমূলনেত্রীর ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে, ফোনে বোলপুর থানার আধিকারিক লিটন হালদারকে গালিগালাজ করে তাঁর মা ও স্ত্রীর প্রসঙ্গে কটু কথা বলেছিলেন অনুব্রত। যে কারণে তাঁর উপরে রুষ্ট মমতা। এ জন্যই কি তিনি কেষ্টর সঙ্গে সাক্ষাৎ এড়িয়ে গেলেন? রবিবার মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে যখন তাঁকে আটকে দেওয়া হয়, তথনই অস্বস্তিতে পড়ে যান তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা। তাই আধঘণ্টা পরেই পরিস্থিতি বুঝে সভাস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। এমন ব্যাখ্যাই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।