সমস্ত জল্পনার অবসান। শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের ফিরলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসেই তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ ভৌমিকের মতো নেতারা।
যোগদানের পর অর্জুন সিং বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ভারতীয় জনতা পার্টি ছেড়ে তৃণমূলে, মানে যে ঘড়ের ছেলে ছিলাম সেখানেই ফিরে এসেছি। মাঝে কিছু ভুল বোঝাবুঝির জন্য বিজেপিতে গিয়েছিলাম। এয়ার কন্ডিশান ঘরে থেকে, ফেসবুকে বাংলায় রাজনীতি করা যায় না।"
অর্জুন সিং আরও বলেন, "খুব শীঘ্রই ভারতবর্ষের রাজনীতিতে একটা বড় লড়াই হতে চলেছে। যার নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস। একইসঙ্গে সাংসদ পদে পদত্যাগ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তৃণমূলের প্রতীক নিয়ে আরও ২ জন সাংসদ বিজেপিতে আছেন। আগে তাঁরা ছেড়ে দিন। তাহলে আমিও ছেড়ে দেব।"
জুট তথা চটকল প্রসঙ্গে এদিন কেন্দ্রকে বিঁধে অর্জুন সিং বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে অবহেলা করছে। বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি চটকল। আমি লড়াই করছিলাম এবং বিজেপির মন্ত্রীকে কয়েকবার বলেছি। পাট সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী। চিঠিটা দেখার সঙ্গে সঙ্গে আমিও লড়াই শুরু করলাম। মুখ্যমন্ত্রীকে এই লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে নাহলে বাংলা আরও হেরে যাবে।"
অর্জুন সিং তৃণমূলে ফিরতে পারেন, এই জল্পনা বিগত কিছুদিন ধরেই ঘুরপাক খাচ্ছিল বঙ্গ রাজনীতির অলিন্দে। কিছুদিন আগে জুটের দামের ঊর্ধ্বসীমা নিয়ে প্রকাশ্যেই কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন অর্জুন সিং। প্রয়োজনে আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। এমনকি এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও যৌথ আন্দোলনে এগিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ।
এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠকও হয় অর্জুন সিংয়ের। তবে বৈঠকের পরেও দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ব্যারকপুরের সাংসদ। পরে অবশ্য ২০ মে থেকে কাঁচা পাটের দামের ওপরে উর্ধ্বসীমা তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রকারন্তরে এটিকে অর্জুনের জয় হিসেবেই দেখে রাজনৈতিকমহলের একাংশ।
কিন্তু তারপরেও অর্জুনের তৃণমূলের 'ঘর ওয়াপসি'র জল্পনার নিরশন হয়নি। বরং শনিবার কাঁচরাপাড়া, জগদ্দল, শ্যামনগরের মতো জায়গায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অর্জুন সিংয়ের পোস্টার দেখা যায়। যাকে ঘিরে আরও জোড়ালো হয় জল্পনা। আর তারপর রবিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে পৌঁছলেন অর্জুন সিং।
আরও পড়ুন - কুতুব মিনারের ইতিহাস জানতে খনন হবে? যা জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী