দীর্ঘ জট কাটিয়ে অবশেষে বরাহনগর থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত ১৩ কিমির মেট্রো প্রকল্পে ফের গতি আনার তৎপরতা শুরু হয়েছে। কামারহাটি, সোদপুর, খড়দা, টিটাগড়-সহ মোট ১০টি স্টেশন থাকছে এই রুটে। দীর্ঘদিন ধরে দুটি পুরনো পাইপলাইন না সরানোয় প্রকল্প থমকে রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক একাধিক বৈঠক ও কেন্দ্রীয় তৎপরতায় প্রকল্পটি আবার জোর পেতে শুরু করেছে বলে রেলসূত্রে খবর।
২০৬৯ কোটি বরাদ্দ, কিন্তু থমকে প্রকল্প
২০১০ সালে বি.টি. রোড ধরে বরাহনগর থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো লাইন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের জন্য ২০৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও, শতাব্দী প্রাচীন টালা ট্যাঙ্কের দুটি পুরনো পাইপলাইন না সরানোর কারণে কাজ শুরু হয়নি। এই পাইপলাইন সরিয়ে নতুন ৬৪ ইঞ্চির পাইপ বসানোর দায়িত্ব ছিল কলকাতা পুরসভা ও রেল বিকাশ নিগম (RVNL)-এর মধ্যে চুক্তির অংশ হিসেবে।
রেল বোর্ডের পক্ষ থেকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও কাজ না হওয়ায় সম্প্রতি রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এই প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছিলেন, বলে রেল সূত্রে খবর।
কোন কোন স্টেশন থাকছে এই রুটে?
প্রায় ১৩ কিমি দীর্ঘ এই মেট্রো রুটে থাকবে মোট ১০টি স্টেশন: কামারহাটি, আগরপাড়া, সোদপুর, পানিহাটি, সুভাষনগর, খড়দা, টাটা গেট, টিটাগড়, তালপুকুর, ব্যারাকপুর
সমস্যা কোথায়?
কলকাতা পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা জানান, বি টি রোডের নীচে টালা-পলতার ছ’টি জলের পাইপলাইন রয়েছে। সেগুলির সুরক্ষাও জরুরি, পাশাপাশি মেট্রো প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার। ফলে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে খনন ও সংরক্ষণ করতে হবে, যা তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল।
প্রশাসনিক বৈঠক ও ভবিষ্যৎ উদ্যোগ
সম্প্রতি পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বৈঠক করেছেন বিষয়টি নিয়ে। পরিবহণ দফতর, পুরসভা ও রেল বোর্ড মিলে যৌথভাবে সমস্যার সমাধানসূত্র খুঁজছে। খরচ বেশি হলেও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে রাস্তা না খুঁড়েই কাজ চালানোর পদ্ধতি খোঁজা হচ্ছে।
উপকৃত হবেন লক্ষাধিক যাত্রী
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে উত্তর শহরতলি ও কলকাতার মধ্যে যাতায়াত দ্রুত, আরামদায়ক ও পরিবেশবান্ধব হবে। রেল সূত্রের দাবি, প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী উপকৃত হবেন এই নতুন মেট্রো রুট চালু হলে।