সোমবার মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অনুষ্ঠিত হল ২৬তম তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশ। সেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর ঠিক একদিন আগেই উত্তর চব্বিশ পরগনার দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যাতে বিরোধীরা তৃণমূল যোগের অভিযোগও তুলেছেন। দত্তপুকুরের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর মমতা সেই ঘটনা নিয়ে কী বলেন, সে দিকে নজর ছিল সকলেরই। মেয়ো রোডের মঞ্চ থেকে এদিন তৃণমূল নেত্রী সবুজ বাজি তৈরির পরামর্শ দেন।
সবুজ বাজি তৈরি করুন: মমতা
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশ থেকে রাজ্যে কর্মসংস্থানের ব্যাপক আয়োজন বার্তা দেন তৃণমূলনেত্রী। এই প্রসঙ্গেই সবুজ বাজি কারখানার কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, 'আমরা সবুজ বাজি কারখানা তৈরি করে দিচ্ছি। কারণ তাতে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ইট-ভাটার কোনও আইন ছিল না। আমরা করেছি।'মেয়ো রোড থেকে রাজ্যের বাজি শ্রমিকদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ, ‘সবুজ বাজি তৈরি করুন। তাতে টাকা কিছুটা কম হবে। কিন্তু জীবন তো বাঁচবে।’ টাকার লোভে না ছুটে নিজের জীবন বাঁচান। সবুজ বাজি তৈরি করতে এভাবেই রাজ্যে বাজি শিল্পীদের কাছে অনুরোধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সবুজ বাজি তৈরি করার ব্যাপারে আইন আনছে রাজ্য।
প্রসঙ্গত, এই বাজি কারখানার ব্যবসা নিয়ে বার বার বিতর্কে জড়িয়েছে শাসকদল। বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, বেআইনি বাজি কারখানার আড়ালে রমরমিয়ে অন্য ব্যবসা চলে। দত্তপুকুরের ঘটনার পর সেই অভিযোগে আরও সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা। দত্তপুকুরের ঘটনায় ইতিমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের জালে ধরা পড়েছে বাজি কারখানার মালিক কেরামতের এক সঙ্গী। এদিন সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহের কাজ করছেন ফরেন্সিক দলের সদস্যরা। প্রাথমিক ভাবে দাবি করা হয়েছে, বাজির মশলায় এমন সব রাসয়নিকের প্রয়োগ করা হয়েছে, তা বোমা তৈরির মশলায় ব্যবহার করা হয়।
অবৈধ বাজি বন্ধ করার ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না রাজ্য সরকার। এই অভিযোগ তুলে এদিন বিধান সভাতেও সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার নেতৃত্বে বিধানসভা থেকে ওয়াক আউটও করে বিজেপি। বাইরে বেরিয়ে এসে চলে সরকার বিরোধী স্লোগান-বিক্ষোভ। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই ঘটনায় আরডিএক্স ব্যবহার করা হয়েছে।” বাজি কারখানা বিস্ফোরণে এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। এই ঘটনার সঙ্গে জঙ্গি-যোগের সম্ভাবনা রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।