বিজয়া দশমীর রেশ এখনও কাটেনি। শুক্রবার কলকাতায় পুজোর কার্নিভাল, আজও বিভিন্ন জেলায় জেলায় রয়েছে কার্নিভাল। এর মাঝেই বৃহস্পতিবার সকালে রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে ইডি তল্লাশির খবর সামনে আসে। এই খবর সামনে আসতেই নতুন করে হইচই শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। আর এই নিয়ে দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যে নেতা-মন্ত্রীদের বাড়ি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হানা থেকে ইন্ডিয়ার নাম বদলে ভারত রাখা, সব বিষয়েই কেন্দ্রকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ইডি হানা নিয়েও কেন্দ্রকে খোঁচা দিতে ভোলেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তার স্ত্রী ও বাবা-মাকে তলব করেছিল। অভিষেকের সম্পত্তির খতিয়ান জানতেও তৎপর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এই নিয়ে আগেই ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, ‘‘অভিষেককে সারাক্ষণ বিরক্ত করা হচ্ছে। অকারণ হেনস্থা করা হচ্ছে ওকে। কোনও প্রমাণ নেই।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘বারবার অভিষেককে নিম্ন আদালত, হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে ছুটতে হচ্ছে বিচারের জন্য! কী হয়নি ওর বিরুদ্ধে?’’ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সামনে ফের একবার অভিষেক প্রসহ্গ তোলেন মমতা। জ্যোতিপ্রিয় মিল্লকের বাড়ি ইডি তল্লাশি নিয়েই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, 'অভিষেকের কাছে ১৯৮১-৮২ সালের তথ্য চাইছে , তখন অভিষেকের জন্মই হয়নি। অভিষেকের জন্ম ১৯৮৭ সালে।' অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের সিবিআই বা ইডি দিয়ে হেনস্থার অভিযোগ তুলে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী তাঁর পরিবারকেও নিশানা করা হচ্ছে বলেও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বললেন, ‘আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে বলছি বলে এক একটা মন্ত্রীর বাড়িতে প্রত্যেকদিন তল্লাশি শুরু করেছে। তাঁদের স্ত্রী, বাচ্চা, বাড়ির লোকদেরও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। এটা কি প্রতিহিংসা নয়? আমি মনে করি এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।’
প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে হানা দিয়েছে ইডি। এখনও তল্লাশি জারি রয়েছে। এই প্রসঙ্গেই বৃহস্পতিবার দুপুরে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। সোচ্চার হলেন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। বনমন্ত্রীর বাড়িতে ইডির অভিযানকে 'ডার্টি গেম’ বলে মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘প্রত্যেকদিন আমাদের সব মন্ত্রীদের বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি করছে। তাহলে সরকারটা বাকি থাকে কেন? এটা ডার্টি গেম। এ ভাবে মুখ বন্ধ করা যাবে না।সুপ্রিম কোর্ট বলেছে উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া কোনও তদন্ত ও তল্লাশি হতে পারে না। তাও গায়ের জোরে কেন্দ্র এটা করাচ্ছে। তল্লাশির নামে শাড়ি, সাজগোজের জিনিসের ছবি তুলছে। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার পরিচয়।’ তাঁর প্রশ্ন কেন, ‘একটাও বিজেপির ডাকাতের বাড়িতে তল্লাশি হচ্ছে না?’