Advertisement

Bengal Congress and TMC Relation: মমতার সঙ্গে 'সখ্য' রাখতেই শুভঙ্কর? অধীর এবার কী করবেন? নজরে বাংলার কংগ্রেস

অধীররঞ্জন চৌধুরীকে সরিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি করা হয়েছে শুভঙ্কর সরকারকে। শুভঙ্করকে সভাপতি করার পর প্রশ্ন উঠছে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বাংলায় কংগ্রেসের সম্পর্ক এখন কেমন হবে? অধীর চৌধুরীর ভবিষ্যৎ কী হবে? আসুন জেনে নেওয়ার চেষ্টা করা যাক এই প্রশ্নগুলোর উত্তর।

মমতার সঙ্গে আপোস করতেই শুভঙ্কর?
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 23 Sep 2024,
  • अपडेटेड 12:51 PM IST

লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পারফরম্যান্স পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ কিছু ছিল না। এমনকি সদ্য প্রাক্তন হওয়া প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী নিজের গঢ়ও ধরে রাখতে পারেননিষ  লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের ৪ মাস  পর গত শনিবার রাতে বঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর জায়গায় বঙ্গ কংগ্রেসের নতুন সভাপতি করা হয়েছে শুভঙ্কর সরকারকে। শুভঙ্কর সরকারকে রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি করার পর বাংলার রাজনীতির সমীকরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে অধীরের মতো তিনিও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধিতা করবেন নাকি সুসম্পর্ক বজায় রাখবেন?

বামেদের সঙ্গে শুভঙ্কর সরকারের সম্পর্ক কেমন হবে? ৫ বারের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীর ভবিষ্যৎ কী হবে? তাঁর সামনে বিকল্প কী? শুভঙ্কর সরকার প্রদেশ সবাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

শুভঙ্কর সরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে  জোটের সমর্থনে ছিলেন এবং অধীর চৌধুরী যখন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে  জোটের বিরোধিতা করেছিলেন, তখন শুভঙ্কর সরকার এটির সমর্থনে ছিলেন।  মমতার প্রতি তার নরম মনোভাব এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তাঁকে রাজ্য কংগ্রেস সভাপতির চেয়াপ পেতে অনেকটাই সাহায্য করেছে।  রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর রবিবার রাজ্য কংগ্রেস কার্যালয় বিধান ভবনে যান শুভঙ্কর সরকার। কংগ্রেস অফিসে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে শুভঙ্কর সরকারকে ফুল ও মালা দিয়ে স্বাগত জানান কংগ্রেস সমর্থকরা। এই উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে শুভঙ্কর সরকার বলেন, রাজ্যে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধুমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে

শুভঙ্কর কি পারবে কংগ্রেসকে শক্তিশালী করতে?
তিনি বলেন যে মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী, বেনুগোপাল, সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং দায়িত্ব দিয়েছেন। আমরা জননেতা রাহুল গান্ধীর সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব সহকারে নেব এবং রাজ্যের জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করব। রাজ্য কংগ্রেসকে শক্তিশালী ও সংগঠিত করতে কাজ করবে। শুভঙ্কর সরকারকে আরও বলেন, “আমি কংগ্রেসের প্রতিটি নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি মনে করি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কংগ্রেসকে চায়। প্রাক্তন সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী, প্রদীপ ভট্টাচার্য তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমাকে গাইড করবেন। আগামী দিনে দলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করব, এটাই বড় কথা।

Advertisement

শুভঙ্করকে সভাপতি বানানোর অর্থ
কিন্তু শুভঙ্কর সরকারের নিয়োগ এবং অধীর চৌধুরীর পদত্যাগ অনেক প্রশ্ন রেখে গেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন,  অধীর চৌধুরী ৫ বারের সাংসদ ছিলেন। যেভাবে বিবৃতি দিয়ে তাকে সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। এটা তাঁর অপমান। প্রসঙ্গত, বর্তমানে  রাজ্য কংগ্রেসের দায়িত্ব এমন একজন নেতাকে দেওয়া হয়েছে যিনি কখনও নির্বাচন  জেতেননি এবং সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সেক্রেটারি এবং বেঙ্গল ইয়ুথ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি ছাড়া অন্য কোনও বড় দায়িত্ব পালন করেননি। বাংলা কংগ্রেসেও এতদিন তাঁর তেমন  প্রভাব চোখে পড়েনি। এমন পরিস্থিতিতে নামফলকে রূপান্তরিত কংগ্রেসে শুভঙ্কর সরকার কী পরিবর্তন আনতে পারবেন বা কংগ্রেসের বিভিন্ন মহল তাকে কতটা মেনে নিতে পারবে, এটা নিয়ে সন্দেহ আছে।

অধীর মমতার পথের কাঁটা হয়ে উঠেছিল
অধীর চৌধুরী ক্রমাগত তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করছিলেন। অধীর চৌধুরীর যুক্তি ছিল তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে ধ্বংস করতে কাজ করছে। তৃণমূলের সঙ্গে থেকে বাংলায় কংগ্রেস উঠতে পারবে না। তৃণমূল কংগ্রেস শুধু কংগ্রেস নেতাদের নিপীড়নই করছে না, তার দলও ভাঙছে। তিনি কংগ্রেসকে ক্রমাগত দুর্বল করে চলেছেন। অধীর চৌধুরীর বিরোধিতার কারণে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে জোট হতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি পদে এমন একজনকে নিয়োগ করেছে, যিনি শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সমঝোতার পক্ষে নন, যার অধীররঞ্জন চৌধুরীর মতো রাজনৈতিক মর্যাদাও নেই।

কংগ্রেস কি তৃণমূলের কাছে আত্মসমর্পণ করছে?
লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের শক্তি যেমন বেড়েছে এবার  হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডের প্রস্তাবিত বিধানসভা নির্বাচনেএ সেই ধারা বজায় থাকবে বলে দলটি  আশাবাদী। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রয়োজন হবে এবং শুভঙ্কর সরকারকে রাজ্য সভাপতি করে কংগ্রেস ভবিষ্যত রণকৌশলের প্রেক্ষাপট তৈরি করছে।  ভবিষ্যতে কংগ্রেসের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রয়োজন হলে যাতে তা সহজেই পাওয়া যায়। কারণ কংগ্রেস নেতৃত্ব বিশ্বাস করে যে, বর্তমানে কংগ্রেস বাংলায় নিজেদের প্রসার ঘটাতে পারবে না। তার দরকার তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভা নির্বাচনে জিতে তৃণমূল কংগ্রেস তা প্রমাণ করেছে। যদিও কংগ্রেস নেতা ঋজু ঘোষাস দাবি করেছেন, তৃণমূলের সঙ্গে ভবিষ্যতে জোট সমঝোতা ভেবে মোটেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। শুভঙ্করের সাংগঠনিক দক্ষতার কারণেই তাঁকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আর প্রদেশ সভাপতি হিসেবে অধীর চৌধুরীর ৪ বছরও হয়ে গিয়েছিল। তাই এই বদল নিয়ম মাফিক ছিল।


অধীর এখন কী করবেন? বিকল্পগুলি কী হতে পারে-
 রাজ্য কংগ্রেসের পদ থেকে অপসারণের পরে, অধীর চৌধুরীকে রবিবার হাওড়ায় আরজি কর ধর্ষণ মামলায় প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে এবং তার পুরনো অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন অধীর চৌধুরী। অধীর চৌধুরী কট্টর মমতা বিরোধী ছিলেন এবং তিনি বাম শিবিরে  ফিরতে পারবেন না। এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে সাংসদ শমীক  ভট্টাচার্য অধীর চৌধুরীর প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে বলেছেন যে তিনি ভুল দলে রয়েছেন। এমতাবস্থায় বর্তমানে অধীর চৌধুরীর সামনে একদিকে খাদ ও অপর পাশে কুয়ো রয়েছে। হয় তাঁকে  কংগ্রেসে থেকে সমঝোতা করতে হবে  অথবা বিজেপিতে যোগ দিয়ে রাজনীতির মূল স্রোতে ফিরে আসবেন। তবে অধীর কী সিদ্ধান্ত নেবেন? ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে চাইলে গেরুয়া শিবির তাকে রাজি হবে? এই প্রশ্নের জবাবে বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, পুরোটাই দল সিদ্ধান্ত নেবে। তবে অধীর চৌধুরীকে কংগ্রেসে থাকতে হলে মমতার সঙ্গে আপোস করতেই হবে।

Advertisement

শুভঙ্করকে সভাপতি করা নিয়ে কী বললেন অধীর? 
শুভঙ্কর সরাকরের নিয়োগের বিষয়ে কিছু বলতে চান কিনা জানতে চাইলে অধীর  চৌধুরী বলেন, “আমি কিছু বলতে চাই না। যে কেউ রাজ্য সভাপতি  হতে পারেন। রাজ্যের দলীয় সভাপতি নির্বাচনের অধিকার দলীয় হাইকমান্ডের। তিনি যদি দলের সভাপতি নির্বাচন করেন তাহলে সমস্যা হবে কেন? আমার কোনও আপত্তি নেই।" এই অবস্থায় বামপন্থীদের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্কের দিকেও নজর রাখছে বাম দলগুলো। যদিও সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলছেন, জাতীয় কংগ্রেস একটি সর্বভারতীয় দল। তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তারা কীভাবে দল চালাবেন এবং কে সভাপতি হবেন। এই বিষয়ে খুব বেশি চিন্তা করা, বেশি মতামত দেওয়া আমাদের কাজ নয়।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement