রাজ্য সরকারকে সংবিধানের কথা মনে করিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। খগেন মুর্মুর উপর আক্রমণের পর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও একজন অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করেতে পারেনি পুলিশ। তা নিয়ে নিন্দায় সরব রাজ্যপাল। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন যদি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য সরকার কোনও পদক্ষেপ না করে তা হলে সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কী পদক্ষেপ তা পরিষ্কার করেননি তিনি।
গত সোমবার জলপাইগুড়ির নাগরাকাটাতে ত্রাণ বিলি করতে গিয়েছিল বিজেপির প্রতিনিধি দল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাঁদের উপর একদল লোক চড়াও হয়। মুখ ফেটে যায় মালদা উত্তরের সাংসদের। ঘটনার নিন্দা করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্নও তেলেন তিনি। পাল্টা আসরে নামেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, উত্তরবঙ্গের এই বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও রাজনীতি করছেন প্রধানমন্ত্রী। দুই দলের নেতা-নেত্রীরা একে অপরকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে জখম সাংসদকে দেখতে যান হাসপাতালে। যদিও তিনি জানান, সাংসদের নাকের কাছে চোট লেগেছে। তিনি ডায়াবেটিক।
এদিকে বিজেপির তরফে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। কিন্তু এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার সময় পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে অভিযোগ। এরইমধ্যে আজ রাজ্যপাল সাফ জানান ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশকে পদক্ষেপ করতে হবে। কারণ, আইন শৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ারে রয়েছে। রাজ্য সক্রিয় না হলে সংবিঘধান অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।
রাজ্যপাল বলেন, 'রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা পুলিশের কাজ। পশ্চিমবঙ্গে তা ভেঙে পড়ছে। একজন তপশিলি সাংসদকে নৃশংসভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। এভাবে তো চলতে পারে না। যারা অপরাধী তারা কোথায়? বাংলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও ভালো হওয়া প্রয়োজন। সাধারণ মানুষ গুন্ডাদের ভয় পাচ্ছে। আমরা তা সমর্থন করতে পারি না। রাজ্যের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে হবে। সবাইকে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে একজোট হতে হবে। যদি এই অরাজকতার মোকাবিলা না করা যায় তাহলে রাজ্যের মানুষই ফল ভোগ করবে, তাদের মূল্য চোকাতে হবে। সরকারকে পদক্ষেপ করতেই হবে।'
এদিকে খগেন মুর্মু যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সেখান থেকে জানা গিয়েছে,সাংসদের বাঁ চোখের নীচের হাড়ে আঘাত লেগেছে। সেজন্য অপারেশন করতে হবে। তবে তিনি ডায়াবেটিক। তাই এখনই অপারশন করা যাবে না। সময় লাগবে। ইতিমধ্যেই আক্রান্ত বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে। তবে তাঁর তাঁর ডান হাতের লিগামেন্টে আঘাত রয়েছে।