প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন ইডি আধিকারিকরা। আজ সাত সকালেই তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। লেকটাউনে মন্ত্রীর দুটি বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চলে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দিয়ে এলাকা ঘিরে চলে অভিযান। প্রায় ১৪ ঘণ্টা তল্লাশির পর বেরোলেন পর ইডি আধিকারিকরা। বেশ কিছু নথি ছাড়াও মন্ত্রীর মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।
এদিকে ইডি বের হতেই বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন দমকলমন্ত্রী। আসলে সুজিত বসুর বাড়িতে ইডি যাওয়ার পরেই এনিয়ে মন্তব্য করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনিই দাবি করেন যে সুজিত বসু একসময় রোল বিক্রি করতেন। সাংবাদিক বৈঠক করে সুকান্ত বলেন, 'এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে লোকটা আগে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঠেলা লাগিয়ে এগ রোল বিক্রি করতেন, সেই সুজিত বসু রাতারাতি কী ভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেলেন? সেটা তো মানুষের জানা দরকার।' সুজিতের বিরুদ্ধে শ্যালকের স্ত্রী ও তাঁর পরিবারকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও আনেন তিনি। এছাড়াও দাবি করেন যে দুর্নীতি করেই সুজিত বসু তাঁর দুই শ্যালিকার চাকরি করে দিয়েছেন। পাল্টা সুজিত বলেন, 'বলছে আমি রোল বিক্রি করতাম। হ্যাঁ রোল বিক্রি করতাম। গর্বের সঙ্গে বিক্রি করতাম। কিন্তু কারও পকেট কাটতাম না। চুরি করতাম না। প্রধানমন্ত্রী তো চা বিক্রি করতেন। নিজেই তো বলেছেন। নিজের প্রধানমন্ত্রীকেও আপনি অপমান করছেন!'
শুক্রবার সকাল ৭টা নাগাদ সুজিত বসুর বাড়িতে হানা দেন ইডি আধিকারিকেরা। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তেই এই তল্লাশি বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। শাসকদলের নেতা, তার উপরে আবার মন্ত্রী, সুজিত নিজের এলাকায় যথেষ্ট প্রভাবশালী। ফলে সন্দেশখালির মতো এখানেও সুজিতের সমর্থনেও লোকজন ভিড় করতে পারে, এমন সম্ভাবনা থেকেই প্রস্তুত হয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মন্ত্রীর বাড়ির গেটের সামনে রয়েছে রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। আশপাশের এলাকায় টহল দেওয়া হচ্ছে। বাহিনীর হাতে রয়েছে লাঠি, কাঁদে রয়েছে রাইফেল, আর মাথায় হেলমেট। জমায়েত দেখলেই সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ তো খানিক জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়েন। বেলা বাড়তে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের সামনেও মোতায়েন করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের।