বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দুটি মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে মুখ খুললেন বিজেপি নেতা ও সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'এটা বিচার বিভাগের ব্যাপার। প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন যে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করতে পারে না। ব্যাপারটা ক্রিটিকাল। মাসখানেক ধরে বাজারে রিউমার চলছিল, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের হাত থেকে মামলা কেড়ে নেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত যেটা নিয়ে টেনশন ছিল, সেটাই হল। মানুষ যার উপর ভরসা রেখেছিল, বাংলার মানুষ যাকে কেন্দ্র করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একজোট হতে শুরু করেছিল, তাদের মনোবল কমে যাবে। অন্যায়ের সাজা আজ না হোক কাল হবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যাবেন, অন্য কেউ আসবেন। কিন্তু এই ঘটনায় একটা চক্রান্তের গন্ধ সবাই পাচ্ছেন। যদি বিচার বিভাগকেও এর বাইরে না রাখা যায়, তাহলে চিন্তার বিষয়। তিনি একা যেভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই সামলেছেন, বাংলার সাড়ে ১০ কোটি মানুষ তাঁকে বিশ্বাস করে। উনি যেন বিষয়টা পার্সোনালি না নেন। উনি ন্যায়ের প্রতিমূর্তি এবং মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতীক। উনি ওনার কাজ চালিয়ে যান।'
শুক্রবার রাতে হাইকোর্ট থেকে বাড়ি ফেরার আগে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সংবাদমাধ্য়মের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, 'আজকে আমার মৃত্যুদিন।' এই বিষয়ে দিলীপের মত, 'এই কথার মধ্যে কিছুটা ইমোশন আছে। বিকাশবাবু বলেছেন, যে বিষয়ে উনি মামলা শুনেছেন, সেই বিষয়ে কিছু বলেননি। উনি প্রেসে যেটা বলতে চেয়েছেন, সেটা ঠিক কী? মানুষ তার পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত।'
ইন্টারভিউ দিয়েই কি সমস্যা হল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের?
এই বিষয়ে দিলীপ বলেন, 'উনি কি বলেছেন না বলেছেন ওই সাক্ষাৎকারে, তা বিচার্য বিষয়। তাঁর বক্তব্য অনুবাদ করে যখন দিল্লিতে চেয়ে পাঠানো হয়, তখনই সন্দেহ হয়েছিল। আমরাও শুনেছি। একবারও মনে হয়নি, কেস কে প্রভাবিত করছেন বা বিচারকের নীতি লঙ্ঘন করেছেন। আশা করব বাকি যে মমলাগুলি তাঁর কাছে রইল, অবসর নেওয়ার আগে সেগুলির বিষয়ে ন্যায় করবেন।'
দিলীপ নিশানা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুণাল ঘোষকে
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে দিলীপ নিশানা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুণাল ঘোষকে। দিলীপ বলেন, 'এগুলো ইঙ্গিত। জেলে থাকা আর বাইরে থাকা নেতাদের কথা মিলে যাচ্ছে। অভিষেক ও কুন্তলের কথা মিলে যাচ্ছে। পার্থ ও কুণালের কথা মিলে যাচ্ছে। মানে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। আগুন আছে বলেই তো ধোঁয়া বেরোচ্ছে।' অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সরে যাওয়া কি রাজনৈতিক লড়াইয়ের ফল? জবাবে দিলীপ বলেন, 'ধীরে ধীরে প্রকাশ হবে। আমরা অনেক কথা শুনছিলাম এক মাস ধরে, সেই দিকেই গেছে। সন্দেহ হচ্ছে, না হলে সাধারণ ব্যাপার, বিচারপতি যদি কোনও ভুল করে থাকেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে সাজা হওয়া উচিত, তাঁর পদের অবলুপ্তি হওয়া উচিত বা তাঁকে অন্য জায়গায় ট্রান্সফার করা উচিত। যে কেস নিয়ে, যেটার জন্য সারা বাংলার মানুষ চেয়ে আছে, সেই কেস তাঁর হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হল।'