সংখ্যালঘু ভোট ফেরানোর জন্য আবারও বিভাজনের রাজনীতি শুরু করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সঙ্গে নবান্নে বসে মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন, সেই প্রশ্নও তুললেন। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নিরপেক্ষতা নিয়েও নিশানা করলেন শুভেন্দু। তাঁর কটাক্ষ, অবসরের পর তৃণমূলের মুখ্যসচিব হবেন।
২০১১ সালের পরিবর্তনের সময় থেকে রাজ্যের সংখ্যালঘুরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিই আস্থা রেখেছেন। সেই সংখ্যালঘুদের জন্য এই সরকার কিছুই করেনি বলেও অভিযোগ করেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর বক্তব্য,'চাকরি, শিক্ষা ও বাসস্থান দিতে পারেননি সংখ্যালঘুদের। কেউ চিকিৎসার সুযোগ পায় না। তিন মাসে মিজোরামে যে ৫ বাংলার শ্রমিক মারা গেল, তাঁরা সকলেই মুসলিম। যে ৫০ লক্ষ বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছে, এর মধ্যে ৩২ লক্ষই মুসলিম। কাজ দিতে পারেন না। স্বাস্থ্য, শিক্ষা কিছুই দিতে পারেননি। পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজ দিতে পারেন না। ভোটের জন্য আপনি আবার বিভাজনের রাজনীতি করতে চাইছেন। ২১ তারিখে আবার বিভাজনের রাজনীতি করবেন। আমরা এই রাজনীতির বিরোধিতা করি। আমরা চাই এই তোষণ বন্ধ হোক। নেতাজি ইন্ডোরে আপনি বেকার যুবক-যুবতীদের নিয়ে সভা করুন।'
সংখ্যালঘু ভোট ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী ইমাম-মোয়াজ্জেম ভাতা বাড়াতে পারেন পারেন বলে মনে করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন,'ভোটের রাজনীতি শুরু করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংখ্যালঘু মুসলিম ভোট গোছাতে হবে। বালিগঞ্জে ভেঙে গিয়েছে। ফাটল চওড়া হয়েছে সাগরদিঘিতে। তারপর ভাঙড়ে লোকে দেখেছে ভোট দিতে পারলে আমি আর নেই। ভোট দিতে পারলে সংখ্যালঘুরা মুসলিমরা কী করবে আপনি জেনে ফেলেছেন। সেজন্য আপনি ২১ তারিখ ইয়াম-মোয়াজ্জেমদের নিয়ে সভা করবেন।' তাঁর সংযোজন,'মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘু ভোট ফেরানোর জন্য হয়তো আড়াই হাজার টাকা থেকে তিন হাজার টাকা করে দিতে পারেন। আর মোয়াজ্জেম ভাতা হাজার থেকে বারশো টাকা হতে পারে। ভোট বড় বালাই!'
৫ অগাস্ট বুথে বুথে বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কর্মসূচি সংশোধন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ব্লকে ব্লকে বিজেপি নেতাদের বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান হবে। এই গোটা কর্মসূচিই বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,'৬ অগাস্ট ব্লকে ব্লকে কর্মসূচি করবে তৃণমূল।' নবান্ন থেকে কি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দলের কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন,'বিচারকব্যবস্থা চাপে ফেলে দিয়েছে ভাইপোকে। নবান্ন থেকে ৬ তারিখের রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করা যায় কি?'
ভাতা রাজনীতি নিয়েও মমতাকে বিঁধেছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়,'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরি দিতে চান না। ২৫ হাজার দিলে ৩ থেকে ৪টে ভোট পাব একটা পরিবারের। তার চেয়ে ২৫ হাজার টাকা ৫০০ পরিবারকে দিলে ২০০টি ভোট পাবেন। চাকরিপ্রার্থীরা এই বর্ষাতেও বসে রয়েছেন। তাও আন্দোলন দমাতে পারলেন না।'