কসবাকাণ্ডে বিক্ষোভ দেখিয়ে শনিবার গ্রেফতার হন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। গ্রেফতারির পর জামিন নিতে নারাজ ছিলেন সুকান্ত মজুমদার। রাতভর লালবাজারে থাকার পরে রবিবার সকালে মুক্তি পেলেন সুকান্ত মজুমদার। প্রসঙ্গত, কসবার আইন কলেজের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার গড়িয়াহাটে মিছিল করে বিজেপি। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ ৩২ জনকে। তাঁদের দাবি, পুলিশ জামিন নেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু তাঁরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। বদলে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি রাখেন। রবিবার সকালে সেই নিঃশর্ত মুক্তিই দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। লালবাজার থেকে বেরিয়েই সুকান্ত বলেন, মহিলাদের ওপর লাগাতার অত্যাচার চলছে। গত আট মাসের ব্যবধানে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা ঘটল। একটিতে পরিণতি মৃত্যু, অন্যটিতে নির্যাতিতা কোনও ক্রমে প্রাণে বেঁচেছেন। কোথায় প্রশাসন? মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে সামনে আসতে পারেন? কীভাবে এগিয়ে বাংলা বলতে পারেন? তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
রাতভর সুকান্ত-সহ বিজেপির একাধিত নেতারা বসেছিলেন লালবাজারের সেন্ট্রাল লকআপে। আজ রবিবার সুকান্ত মজুমদার লকআপ থেকে বেরিয়ে বললেন, এবার বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা হলে, কেউ ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নেবেন না। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'আমি, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, তমোঘ্ন ঘোষ সহ ৩২ জন নেতা মিলে জামিন প্রত্যাখান আন্দোলন শুরু করলাম। এরপরে পশ্চিমবঙ্গের যেখানেই বিজেপির কর্মকর্তারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হবেন, আমরা জামিন প্রত্যাখান করব। আমরা দেখতে চাই, পুলিশের বেশি ক্ষমতা নাকি বিজেপি কার্যকর্তাদের। পশ্চিমবঙ্গে কত জেল রয়েছে, আমরা দেখতে চাই।'
পুলিশ প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, 'এরপর বিজেপির কার্যকর্তারা, গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে, পশ্চিমবঙ্গের যেখানে গ্রেফতার হবে, আমরা জামিন নেবো না, জামিন প্রত্যাখান আন্দোলন করব। আমরা দেখতে চাই, পুলিশের বেশি ক্ষমতা, নাকি বিজেপি কার্যকর্তাদের? কত জেল আছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের আমরা সেটা দেখতে চাই। গোটা রাত আমরা বসেছিলাম। প্রথমে আমাদেরকে বলা হয়, সই করে জামিন নিন। আমরা প্রত্যাখ্যান করি। পুলিশ তারপর বলে যে, আপনাদের সই করতে হবে না। আপনারা চলে যান। অর্থাৎ আমাদেরকে কেন নিয়ে আসা হয়েছে, কোনও তথ্য পুলিশ আমাদের জানায়নি। তাঁদের কাছেও নেই।' সুকান্ত মজুমদার প্রশ্ন তোলেন, 'পুলিশ প্রশাসন ৪-৫ ঘণ্টা বসিয়ে রাখল কেন, উত্তর নেই।' বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্নও তুলেছেন সুকান্ত। তাঁর মন্তব্য, ‘যে পুলিশ আমাদের বলপূর্বক গ্রেফতার করে এনেছিল, আশ্চর্যজনক ভাবে, তারাই আবার আমাদের লকআপ ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলল! শুধু তা-ই নয়, কোনও রকম সই না করিয়েই আমাদের মুক্তি দেওয়া হল। তা হলে কিসের ভিত্তিতে আমাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল?’
শনিবার দুপুরে গড়িয়াহাট চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ একাধিক বিজেপি নেতাকে। তারপর লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর সারারাত সেখানেই ছিলেন সুকান্তরা। প্রসঙ্গত, কসবার আইন কলেজে ছাত্রীকে কলেজের মধ্য়ে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। রবিবারও বিজেপির পক্ষে প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।