Advertisement

Kolkata Trams: মিলল হাইকোর্টের রক্ষাকবচ, তবুও ৩০ রুটের মধ্যে মাত্র একটিতেই চলছে ট্রাম

Kolkata Trams: হাইকোর্টের ‘রক্ষাকবচ’ পাওয়ার পরের দিনই ৮ মাসের জন্য স্থগিত হয়ে গেল দুই রুটের ট্রাম পরিষেবা। ফলে, ৩০টি রুটের মধ্যে এখন শুধুমাত্র একটি রুটেই চলছে ট্রাম। শেষ ৬ বছরে বন্ধ হয়েছে ট্রামের চারটি ডিপো-২২টি রুট।

মিলল হাইকোর্টের রক্ষাকবচ, তবুও ৩০ রুটের মধ্যে মাত্র একটিতেই চলছে ট্রাম।
সুদীপ দে
  • কলকাতা,
  • 09 Aug 2023,
  • अपडेटेड 2:55 PM IST

Kolkata Trams: কলকাতার ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ট্রাম। তাই ঐতিহ্যের এই গণপরিবহণকে তোলা যাবে না। এমনটাই কলকাতা হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ। তাই ট্রাম বাঁচাতে পরিকল্পনার জন্য কমিটি গড়ল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। দু'সপ্তাহের মধ্যে এই কমিটি প্রথম বৈঠক করবে। বৈঠকের পরে তাদের পরিকল্পনা আদালতে জানাবে। এই কমিটি পরবর্তিতে তাদের কাজের গতি বাড়াতে প্রয়োজনে এই বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করতে পারবে বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট।

আজ থেকে ৮ মাসের জন্য স্থগিত দুই রুটের ট্রাম পরিষেবা
কিন্তু, হাইকোর্টের ‘রক্ষাকবচ’ পাওয়ার পরের দিনই বন্ধ হয়ে গেল ৫ নম্বর রুটের শ্যামবাজার থেকে এস্প্লানেড এবং ২৫ নম্বর রুটের গড়িয়াহাট থেকে এসপ্ল্যানেডের ট্রাম পরিষেবা। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্যই আগামী ৮ মাসের জন্য এই দুই রুটের ট্রাম পরিষেবা বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে রুট নম্বর ১১ (শ্যামবাজার থেকে হাওড়া ব্রিজ) এবং রুট নম্বর ১৫/১২ (রাজাবাজার থেকে হাওড়া ব্রিজ)-এ চাইলে এখনই ট্রাম চালানো যেতে পারে বলে মনে করেন ট্রাম বাঁচিয়ে রাখার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। কারণ, এই দুই রুটে ট্রাম চালানোর পুরো পরিকাঠামো এখনও আছে। এই দুটি রুটই স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, বড়বাজারের বিক্রেতাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৩০টি রুটের মধ্যে এখন শুধুমাত্র একটি রুটেই চলছে ট্রাম
ট্রামের ৫ নম্বর এবং ২৫ নম্বর— এই দুই রুটে পরিষেবা দীর্ঘ ৮ মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যাওয়ায় আপাতত মাত্র একটি রুটই সক্রিয় রয়েছে। কলকাতার ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গণপরিবহণ মাধ্যমের মোট ৩০টি রুটের মধ্যে এখন শুধুমাত্র ২৪/২৯ রুটে টালিগঞ্জ থেকে বালিগঞ্জ পর্যন্তই চলবে ট্রাম।

শেষ ৬ বছরে বন্ধ হয়েছে ট্রামের ৪টি ডিপো-২২টি রুট
শহরের ঐতিহ্য-ইতিহাস মাখা ১৫০ বছরের এই গণপরিবহণ মাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন, সেই সংগঠনের একজন অন্যতম সদস্য সাগ্নিক গুপ্ত জানান, ২০১৭ সালে ট্রামের মোট ৬টা ডিপো এবং ২৫টি রুট সক্রিয় ছিল। বর্তমানে ট্রামের মাত্র ২টি ডিপো এবং ৩টি রুট কোনও রকমে চলছে। তার মধ্যেও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য ৯ অগাস্ট থেকে দীর্ঘ ৮ মাসের জন্য স্থগিত হয়ে গেল ৫ নম্বর এবং ২৫ নম্বর রুটের ট্রাম পরিষেবা।

Advertisement

কোমায় শহরের ঐতিহ্যের গণপরিবহণ:
সাগ্নিক বলেন, “বর্তমানে গড়িয়াহাট এবং টালিগঞ্জ ডিপো চালু রয়েছে। সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে কালীঘাট, বেলগাছিয়া, পার্ক সার্কাস, রাজবাজার আর খিদিরপুর ট্রাম ডিপো। কালীঘাট, বেলগাছিয়া, রাজাবাজার, খিদিরপুরে ১০০টিরও বেশি ট্রাম পড়ে রয়েছে। বেলগাছিয়াতে ১৯৮২ সাল থেকে ২০১১ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ৩২টি ভাল স্টিল এবং ফাইবার বডির ট্রাম ২০১৮ সাল থেকে পড়ে রয়েছে৷ ২০১৭ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে কালীঘাট ট্রাম ডিপো। বর্তমানে কালীঘাট ডিপো বিভিন্ন মাদকের নেশা আর অসামাজিক কাজকর্মের ডেরা হয়ে উঠেছে। আগে কলকাতায় ১৬০ কিলোমিটার জুড়ে ট্রামলাইন ছিল। এখন যা কমতে কমতে মাত্র ৩৩ কিলোমিটারে এসে ঠেকেছে। ট্রামের ৩০টি রুটেই ট্রাম চালানোর প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো রয়েছে। তবুও নানা কারণে তার মধ্যে ২৭টি রুটেই ট্রাম চালানোর অনুমতি মেলে না পুলিশের থেকে।”

ট্রামের হিতাকাঙ্খিরাই কমিটিতে সংখ্যালঘু:
কলকাতার পরিবহণ ইতিহাসের অন্যতম সংগ্রাহক সৌভিক মুখোপাধ্যায় জানান, “কলকাতার ঐতিহ্য মুখে বললেও ট্রাম বাঁচানোর সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলেই এ ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের হস্থক্ষেপের প্রয়োজন হল। ট্রাম বাঁচাতে পরিকল্পনার জন্য কমিটি গড়া হলেও ওই কমিটির অধিকাংশ সদস্যই সরকার পক্ষের, সরকারি কর্মচারি। ট্রামকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন, তাদের মধ্যে থেকে ১২ জনের কমিটিতে মাত্র ২-৩ জনকেই এই কমিটিতে সামিল করা হয়েছে। ফলে ট্রামের হিতে কতটা ইতিবাচক উদ্যোগ নেওয়া যাবে, সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ, ট্রামের হিতাকাঙ্খিরাই এই কমিটিতে সংখ্যালঘু।”

কলকাতা ট্রামের ৩০টি রুট:
•    রুট ১ : বেলগাছিয়া থেকে ধর্মতলা।
•    রুট ২ : বেলগাছিয়া থেকে বিবাদী বাগ (বৌবাজার হয়ে)।
•    রুট ৪ : বেলগাছিয়া থেকে বিবাদী বাগ (চিৎপুর হয়ে)।
•    রুট ৫ : শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলা।
•    রুট ৬ : শ্যামবাজার থেকে বিবাদী বাগ (বৌবাজার হয়ে)।
•    রুট ৮ : বাগবাজার থেকে বিবাদী বাগ।
•    রুট ১০ : শ্যামবাজার থেকে বিবাদী বাগ (চিৎপুর হয়ে)।
•    রুট ১১ : শ্যামবাজার থেকে হাওড়া ব্রিজ।
•    রুট ১২ : রাজাবাজার থেকে ধর্মতলা।
•    রুট ১২/১ : বেলগাছিয়া থেকে ধর্মতলা (শিয়ালদহ হয়ে)।
•    রুট ১২/৭ : গালিফ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা।
•    রুট ১৪ : রাজাবাজার থেকে বিবাদী বাগ
•    রুট ১৫/১২ : রাজাবাজার থেকে হাওড়া ব্রিজ। 
•    রুট ১৬ : বিধাননগর থেকে বিবাদী বাগ।
•    রুট ১৭ : বিধাননগর থেকে ধর্মতলা।
•    রুট ১৮ : বিধাননগর থেকে হাওড়া ব্রিজ।
•    রুট ২০ : পার্ক সার্কাস থেকে হাওড়া ব্রিজ (শিয়ালদহ হয়ে)।
•    রুট ২১ : পার্ক সার্কাস থেকে হাওড়া ব্রিজ (ধর্মতলা, চিৎপুর হয়ে)।
•    রুট ২২ : পার্ক সার্কাস থেকে ধর্মতলা।
•    রুট ২৪ : বালিগঞ্জ থেকে ধর্মতলা।
•    রুট ২৫ : গড়িয়াহাট থেকে ধর্মতলা।
•    রুট ২৬ : গড়িয়াহাট থেকে হাওড়া ব্রিজ (শিয়ালদহ হয়ে)।
•    রুট ২৬/১৭ : গড়িয়াহাট থেকে বিধাননগর।
•    রুট ২৯ : টালিগঞ্জ থেকে ধর্মতলা।
•    রুট ২৪/২৯ : টালিগঞ্জ থেকে বালিগঞ্জ।
•    রুট ৩০ : কালীঘাট থেকে হাওড়া ব্রিজ।
•    রুট ৩১ : কালীঘাট থেকে ধর্মতলা।
•    রুট ৩২ : টালিগঞ্জ থেকে হাওড়া ব্রিজ।
•    রুট ৩৬ : খিদিরপুর থেকে ধর্মতলা।
•    রুট ২৪/৩৬ : বালিগঞ্জ থেকে খিদিরপুর।
•    রুট ২৯/৩৬ : টালিগঞ্জ থেকে খিদিরপুর।
•    রুট ৩০/৩৬ : কালীঘাট থেকে খিদিরপুর।

Advertisement

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement