চলছিল অনুব্রত মণ্ডলের জামিন-আবেদনের শুনানি। সেই মামলাতেই লালন শেখের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে আনলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। সিবিআই-কে কাঠগড়ায় তুলে মনে করিয়ে দিলেন তাদের দায়িত্বের কথা। বিচারপতি বাগচীর প্রশ্ন, বিচারাধীন বন্দিকে নজরে রাখা কি সিবিআইয়ের কর্তব্য নয়?
গরু পাচার মামলায় বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার পর থেকে জেলেই দিন কাটছে অনুব্রতর। জামিন পেতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন কেষ্ট। শুক্রবার ওই মামলার বিচার চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই সময় অনুব্রতর জামিনের বিরোধিতা করেছেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। লালন শেখের মৃত্যুর পর সিবিআই আধিকারিকদের নামে এফআইআর করেছেন তাঁর স্ত্রী। সেই প্রসঙ্গ আদালতে তুলে সিবিআই আইনজীবী জানান, বগটুইকাণ্ডে অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুর পর তদন্তকারী অফিসারদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। তাই অনুব্রতের জামিন দেওয়া উচিত নয়। তখনই বিচারপতি বাগচীর প্রশ্ন,'হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। আত্মহত্যা বলছেন! তার পরও বলতে হবে সেটা কি স্বাভাবিক মৃত্যু?'
বিচারপতি বাগচীর পর্যবেক্ষণ,'যে কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যুতে এফআইআর দায়ের করা জরুরি। বিচারাধীন বন্দিকে নজরে রাখা কি সিবিআইয়ের কর্তব্য নয়? অন্যদের দোষ দিচ্ছেন কেন?'
বলে রাখি, গত সোমবার সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে বগটুইকাণ্ডে অভিযুক্ত লালন শেখের। ঘটনার পর থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সদ্য ভিন রাজ্য থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এই ঘটনায় সিবিআইয়ের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে স্বামীকে খুনের অভিযোগ করেছেন লালন শেখের স্ত্রী। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,'সিবিআই অনেক স্মার্ট। তা-ও কীভাবে সিবিআই হেফাজতে বন্দির মৃত্যু হয়?' এদিকে হেফাজতে লালনের মৃত্যু নিয়ে হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে একটি জনস্বার্থ মামলা। কোনও এক জন বিচারপতির নজরদারিতে তদন্তের আবেদন করেছেন মামলাকারী। বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানিতে সিবিআইয়ের অবস্থান জানতে চায় আদালত। সিবিআই জানিয়েছে,এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। এফআইআর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। উচ্চপদস্থ কর্তাদের নাম এসেছে। বিচারপতির নজরদারিতে তদন্তে আপত্তি নেই বলেও জানায় সিবিআই। তবে এ নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে দু’দিন সময় নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন- লালন মৃত্যু: CBI-এর বিরুদ্ধে এখনই কড়া পদক্ষেপ নয়, CID-কে নির্দেশ হাইকোর্টের