কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজ্য সরকার কী ভাবছে তা নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এই নিয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ।
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে রাজ্য়ের কলেজগুলোতে ছাত্র সংসদ ভোট হয় না। তা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে। এই মামলায় রাজ্যের অবস্থান জানতে চাইলে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যের কাজ শুধু বিজ্ঞপ্তি জারি করা। তা শুনে বিচারপতি সৌমেন সেন জানান, আগে বিজ্ঞপ্তিটা জারি করুক রাজ্য। বাকিটা কোর্ট দেখে নেবে।
এর আগের শুনানিতে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ি উপাচার্য নেই। সেজন্য নির্বাচন করা যাচ্ছে না। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিচারপতি বলেন, 'এমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে উপাচার্য রয়েছে। তাহলে সেগুলো নির্বাচন কেন হচ্ছে না?' তখন রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অস্থায়ী উপাচার্যদের নীতি নির্ধারণের ক্ষমতা নেই। তাই যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য রয়েছে সেখানে ভোট করানো কীভাবে যাবে? তার উত্তরে বিচারপতি সৌমেন সেন বলেন, 'রাজ্যের কাজ কি নির্বাচন করানো? তাদের তো কাজ শুধু বিজ্ঞপ্তি জারি করা। সেটাই করুন আপনারা। বাকিটা কোর্ট দেখে নেবে।'
গত ১০ বছর ধরে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন ছাত্র সংসদ ভোট হয় না তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। আগেও এই মামলার শুনানিতে হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবারের শুনানিতে কোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যকে ভোট করানোর বিষয়ে তৎপর হতে হবে। এবং নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। তাও ২ সপ্তাহের মধ্যে। বিচারপতি রাজ্যের আইনজীবীকে বলেন, 'আপনারা কীভাবে নির্বাচন করবেন, কী প্রস্তাব-এই সব কিছু কোর্টকে জানান দ্রুত।'
এদিকে মামলাকারী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় কোর্টে জানান, ১০ বছরের বেশি সময় হলে গেলেও ভোট হচ্ছে না। জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। রাজ্য সরকার উপাচার্যের কথা বলে অজুহাত দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, যে সব কলেজে ছাত্র সংসদ ভোট হয় না সেখানে ইউনিউন রুম বন্ধ করে রাখতে হবে। খোলা যাবে না। খুললেও সেটা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। সেজন্য লিখিত আবেদনও করতে হবে।