সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরিহারা ২০১৬ সালের SSC প্যানেলের গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার সেই সিদ্ধান্তের বিরোধীতায় কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি হল। এই ভাতার সিদ্ধান্ত খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পরবর্তী কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত এই ভাতা দিতে পারবে না রাজ্য সরকার। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে হাইকোর্টের এই অন্তর্বর্তী রায়। গত সপ্তাহে ওই মামলার শুনানি শেষ হয়। রায় ঘোষণা স্থগিত ছিল।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরিহারা হয়েছিলেন ২০১৬ সালের SSC প্যানেলের প্রায় ২৬ হাজার। এই ২৬ হাজার জনের মধ্যে রয়েছেন গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীরাও। সেই চাকরিহারা SSC কর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। গ্রুপ সি কর্মীদের মাসে ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে। গত সপ্তাহে ওই মামলার শুনানি শেষ হয়। রায় ঘোষণা স্থগিত ছিল। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের তরফে জানানো হয়, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় রায় ঘোষণা করবেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
মামলাকারীদের আইনজীবী গোপা বিশ্বাস জানান, রাজ্যের এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী। মামলার শুনানিতে ভাতার অঙ্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তিনি বলেন, “টাকার পরিমাণ ২৫ হাজার এবং ২০ হাজার হল কেন? কীসের ভিত্তিতে এই অঙ্ক নির্ধারণ করা হল?' রাজ্যের উদ্দেশে তাঁর আরও প্রশ্ন ছিল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে কোনও রকম আলোচনা বা স্ক্রুটিনি ছাড়াই কেন তড়িঘড়ি এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? পাল্টা মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। মামলাকারীদের আইনজীবী সওয়াল করে বলেন, 'কে মামলা করবে, তা রাজ্য স্থির করে দিতে পারে না।'
গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আগেও হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। মামলা করেছিলেন ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীরা। সেই শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহাই ভাতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কোনও রকম আলোচনা বা স্ক্রুটিনি ছাড়া কেন তড়িঘড়ি এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? শুধু তা-ই নয়, তাড়াহুড়ো করে কেন ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হল, তা নিয়েও শুনানিতে প্রশ্ন উঠেছিল। মামলাকারীদের দাবি ছিল, রাজ্যের সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ জারি করুক হাইকোর্ট। যদিও সেই মামলাটির রায়ও দেননি বিচারপতি।