একরত্তি মেয়ের চিকিৎসার জন্য রক্ত চাইতে গিয়ে বাবাকে শুনতে হল 'ছাগল', 'চিড়িয়াখানায় খাঁচায় বন্ধ করে রাখা উচিত'! এমনই অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, বক্তা এক মহিলা চিকিৎসক। মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা। এই ঘটনার নিন্দা করেছে রক্তদাতাদের সংগঠন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁকে দুষেই ক্ষান্ত হননি ওই মহিলা চিকিৎসক, অসুস্থ মেয়ের বাবাকে রক্তদাতা আনারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তখন তাঁর দিশাহারা অবস্থা। কোথায় যাবেন, কী করবেন, কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না।
তাঁদের বাড়ি মেদিনীপুরে। ররিবার তাঁর ৫ মাসের মেয়ের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন। ওই কথোপকথন সংক্রান্ত একটি অডিয়ো রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। ওই অডিয়ো রেকর্ডের সত্যতা যাচাই করেনি আজতক বাংলা।
এদিন দুপুরে তিনি কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজের ব্ল্যাড সেন্টারে গিয়েছিলেন রক্তের জন্য। তিনি ওই চিকিৎসককে অনুরোধ করেন ফোনে কথা বলার জন্য। অভিযোগ, তখন সেখানে কর্তব্যরত এক মহিলা চিকিৎসক তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
অভিযোগ, তাঁকে বলেছেন, 'আমি কারও পার্সোনাল ফোন কথা বলব! তুমি কোথাকার কোন ছাগল তুমি গ্রামে! তুমি এক ডাক্তারকে হসপিটালে কাকে কী বলতে হয়, কী কথা বলতে হয় কিছুই জানো না। তোমাকে চিড়িয়াখানায় খাঁচায় বন্ধ করে রাখা উচিত!'
আরও অভিযোগ, তিনি বলেছেন,'ডোনার নিয়ে এখানে আসবে। রক্ত দেওয়ার লোক নিয়ে আসো, রক্ত পাবে। আর যদি রক্ত দেওয়ার লোক আনতে না পারো, তা হলে স্ট্যাম্প মেরে দেব, অন্য় জায়গায় রেফার করব।'
আরও অভিযোগ উঠেছে। ওই রোগীর পরিবারের দরকার ছিল প্লাজমা। হাসপাতালে সূত্রে খবর, যে সময় তিনি তা চাইতে গিয়েছিলেন, সে সময় হাসপাতালে পর্যাপ্ত প্লাজমা ছিল। তা তাঁর পেতে কোনও সমস্য়া হওয়ার কথা ছিল না।
জানা গিয়েছে, তাঁর দাদা রক্ত দেওয়ার পর তাঁদের রক্ত দেওয়া হয়। তাঁদের জানানো হয়েছে, আর সমস্যা হবে না।
এদিন ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ব্লাড ডোনার্ড অর্গানাইজেশনস (ফিবডো)-র সাধারণ সম্পাদক বিশ্বরূপ বিশ্বাস জানান, আমাদের কাছেও ওই অডিয়ো রেকর্ড রয়েছে, রেকুইজিশন রয়েছে। রোগী পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম।
তিনি জানান, ওই চিকিৎসক যা বলেছেন বলে শোনা যাচ্ছে, অত্যন্ত নিন্দনীয়। সংগঠনের তরফ থেকে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। জাতীয় রক্তদান নীতি পরিষ্কার করে বলা আছে, রক্ত জোগাড়ের দায়িত্ব হাসপাতালের। যিনি এই কাজ করেছেন, যদি তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়, তাঁর কড়া শাস্তি দরকার।