ধর্মের নামে রাজনীতি নিয়ে আজ অর্থাত্ বুধবার ফের উত্তাল হল বিধানসভা। বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বিজেপি বিধায়কদের মুখ্যমন্ত্রীর নিশানা, 'আমি হিন্দু, আপনাদের কাছে থেকে কি সেই সার্টিফিকেট নেব? আমি কী পুজো করব, কী খাব? কী পোশাক পরব আপনাদের কাছে জিজ্ঞাসা করব?' এরপরেই শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, 'মুসলমান বিধায়কদের কী করে বলতে পারেন, ছুড়ে ফেলে দেবেন?'
বিজেপি বিধায়করা চিত্কার করতে শুরু করেন
এদিন মমতা ভাষণ দিতে উঠতেই বিজেপি বিধায়করা চিত্কার করতে শুরু করেন। এতটাই অশান্ত পরিবেশ যে মমতা ভাষণ শুরু করতেই পারছিলেন না। সংসদের উদাহরণ টেনে মুখ্যমন্ত্রী তখন বলেন, 'সংসদে আমাদেরও ২ জন সাংসদ রয়েছেন। আমরা কিন্তু সংসদের কাজ সুষ্ঠু ভাবে এগোতে দিই। মনে রাখবেন, আমাদের দেশ কিন্তু ভীষণ সহিষ্ণু, আমাদের নানা জাতির নানা রকম খাদ্যাভ্যাস। আমরা বাংলায় পুজো করতে বাধা দিই? মিথ্যে কথা বলে যাচ্ছেন আপনারা। বাংলায় কোনও ভেদাভেদ নেই। মানবিকতাই হল সবচেয়ে বড় ধর্ম।'
বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করে বিরোধীরা
তুমুল হইহট্টোগোলের মধ্যে বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করে বিরোধীরা। বিধানসভার বাইরে তখন কালো জামা পরে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ সাসপেন্ড হওয়া বিজেপি বিধায়করা। ওই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রীর টিপ্পনি, 'যাঁরা কালো জামা পড়েছেন ভাল, আমি কালো রং পছন্দ করি! কিন্তু কালো জামা কাপড় পড়ে লাভ নেই, আপনারা অন্ধকারে থাকুন! আমাদের প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরব ইরান যখন যান, আমরা তো ধর্ম নিয়ে কোনও মন্তব্য করি না।'
'মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিম, হুমায়ুন কবীর সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেন'
শুভেন্দু অধিকারীর সাসপেনশনের ইস্যু তুলে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, 'যখন মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিম, হুমায়ুন কবীর সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেন, তখন তো তাঁদের সাসপেন্ড করা হয় না। আপনি চেয়ারের মর্যাদা রাখলে আমরাও আপনার চেয়ারের মর্যাদা রাখব, যদি আপনি সেটা না রাখেন তাহলে আমরাও রাখতে পারব না।' পাল্টা মমতা জবাব, 'ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র যা বলেছেন, সেজন্য তাঁদের সাবধান করা হয়েছে দলীয় স্তরে। কিন্তু আপনারা উল্টো করছেন।'