Advertisement

Mamata Banerjee: মমতার পুজো-রাজনীতির মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে বিরোধীরা

এই টাকা দেওয়ায় বিরোধীরা হই চই শুরু করে দিয়েছে। বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে, এই ধরনের অর্থনৈতিক নৈরাজ্য সৃষ্টির কোনও মানে হয় না। কেননা, তারা মনে করে, এই অনুদানের টাকাগুলো সঠিকভাবে ব্যয় হচ্ছে না।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
জয়ন্ত ঘোষাল
  • নয়াদিল্লি,
  • 24 Aug 2023,
  • अपडेटेड 5:47 PM IST

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজো ক্লাবগুলিকে দেওয়ার জন্য বিশেষ অনুদান এক লাফে দশ হাজার টাকা বাড়িয়ে দিলেন। গত বছর যে টাকার পরিমাণ ছিল ৬০ হাজার, এ বছর সেটা হয়ে গেল ৭০ হাজার টাকা। এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৮ কোটি টাকা। ২৮ হাজার ক্লাব এটার সুবিধে পাবে। কলকাতার তিন হাজার ক্লাব আর গোটা রাজ্যের পঁচিশ হাজার ক্লাবকে দেওয়া হবে এই অনুদান।

এই টাকা দেওয়ায় বিরোধীরা হই চই শুরু করে দিয়েছে। বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে, এই ধরনের অর্থনৈতিক নৈরাজ্য সৃষ্টির কোনও মানে হয় না। কেননা, তারা মনে করে, এই অনুদানের টাকাগুলো সঠিকভাবে ব্যয় হচ্ছে না। উন্নয়নের জন্য ব্যয় হচ্ছে না। দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ভোটের কথা ভেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনটা করছেন। অধীর চৌধুরী বলেছেন, রাজ্যে উন্নয়নে কোনও প্রকল্প নেই। সবটাই নির্বাচনের ফায়দা গ্রহণের জন্য করা হয়ে থাকে। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, সুষ্ঠুভাবে উন্নয়নের জন্য ব্যয়ের পরিকল্পনা নেওয়া উচিত।

এতদ সমালোচনা সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু ইমামদের পাশাপাশি পুরোহিতদেরও ভাতা বাড়িয়েছেন। একইভাবে সেইসব ভাতা বৃদ্ধির কথাও তিনি ঘোষণা করেছেন। প্রত্যেক বছর দুর্গাপুজোর আগে তিনি সমস্ত ক্লাবগুকে ডেকে নেতাজি ইনডোরে সভা করেন, বৈঠক করেন। সেখানে অনুদান বাড়ানোর ঘোষণা করেন। এই ক্লাবগুলো ক্রীড়া এবং যুবকল্যাণ দফতরের সঙ্গে যুক্ত থাকে। সেই ছাতার তলায় থাকে, যেটা অরূপ বিশ্বাসের দফতর।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের সমালোচনাকে তোয়াক্কা না করেই এই কাজটা করছেন। এটাকে তিনি যোজনা বহির্ভূত ব্যয় মনে করছেন না। তিনি মনে করছেন, এটার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের যুবসমাজকে তিনি আরও উৎসাহিত করছেন। আর ক্লাবগুলি শুধু দুর্গাপুজো নয়, দুর্গাপুজোর পাশাপাশি নানা ধরনের সামাজিক প্রকল্প গ্রহণ করে।

দুর্গাপুজো পশ্চিমবঙ্গে একটা বিরাট কার্নিভালে রূপান্তরিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইউনাইটেড নেশন’ পর্যন্ত সেটা স্বীকৃতি দিয়েছে। হেরিটেজের মূল্য পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।

এখানে পুজোকে কেন্দ্র করে একটা অর্থনীতি আছে। পুজোকে কেন্দ্র করে অনেক সময় সামাজিক প্রকল্প গ্রহন করা হয়। পুজোকে কেন্দ্র করে অনেক রকমের সাংস্কৃতিক বিকাশ হয়। প্রতিভার বিকাশ হয় পাড়ায় পাড়ায়। সুতরাং এটা পশ্চিমবঙ্গের বঙ্গসংস্কৃতিরই একটা অঙ্গ। কাজেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু এই ব্যাপারে সমালোচনার তোয়াক্কা না করে এগিয়ে যাচ্ছেন।

Advertisement

আসলে, নির্বাচনের আগে বিজেপি যদি খুব বেশি এ বিষয়ে সমালোচনা করে, তাহলে আবার হিন্দুত্বের ইস্যুতেও বিজেপির অসুবিধে। কেননা, মা দুর্গার যে আরাধনা, সেটা তো প্রত্যেক বছরের বিরাট একটা উৎসব। সেই উৎসবকে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর দিচ্ছেন, তখন বিজেপি যদি সমালোচনা করে, তার মানে তো মা দুর্গার পুজোকে কেন্দ্র করে উন্নতির প্রকল্প, যেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করছেন, সেটার বিরোধিতা করা হয়। সংখ্যালঘু তোষণ-নীতির বিরুদ্ধে বিজেপি বলে, কিন্তু বিজেপি মা দুর্গার পুজোর ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ইতিবাচক অনুপ্রেরণামূলক পদক্ষেপের সমালোচনা করলে, সেটা আবার বিজেপির উল্টো বিপত্তি হবে না তো?

সেই কারণে বিজেপির অনেক নেতা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে দুর্গাপুজোয় যে বিজয়া দশমীর বিসর্জন, সেখানে অনেক বাধা-নিষেধ করে দিয়েছিলেন। সে কারণে বিজেপি এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘হিন্দু-বিরোধী’ তকমা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাতে অবশ্য বিজেপির খুব একটা লাভ হচ্ছে না। কেননা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— তিনি নিজে প্রচুর দুর্গাপুজোর

উদ্বোধন করেন এবং দুর্গাপুজোর বিসর্জন নিয়েও রেড রোডে একটা মস্ত বড় কার্নিভাল হয়, যেটা এর আগে কখনও হয়নি। সুতরাং দুর্গাপুজো আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে গেছে। সেই রাজনীতিটার মোকাবিলা করতে কিন্তু বিরোধীরা হিমশিম খাচ্ছে।

Read more!
Advertisement
Advertisement