বৃহস্পতিবার কালীঘাটের বাড়ি থেকেই ভার্চুয়ালি বেশকিছু দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ পিতৃপক্ষেই শুরু হবে পুজোর উদ্বোধন। আগে মহালয়ায় উদ্বোধনপর্ব শুরু হত। গতবার মহালয়ার দু’দিন আগে দেবীপক্ষ শুরুর আগেই পুজো উদ্বোধন শুরু করেছিলেন তিনি। যা নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। এবার পিতৃপক্ষে পুজো উদ্বোধন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, দুর্গাপুজো কোনও কালচারাল অনুষ্ঠান নয়, কিছু জালি হিন্দুর জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় পিতৃপক্ষে দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করবেন।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আজ দলের স্পোর্টস অ্যান্ড ক্লাব রিলেশন সেলের অনুষ্ঠানে বলেন, 'বাড়ি বসে পিতৃপক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ফিতে কাটবেন। দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১২ তারিখ থেকে উনি এসব করবেন। পারেও বটে। আমাদের দুর্গাপুজোয় পঞ্জিকা, সময় কিছু দরকার হবে না। ৬-৭ হাজার বছরের পুরনো সংস্কৃতি সনাতন। এটা কালচারাল অনুষ্ঠান নয়। সনাতন সংস্কৃতিতে দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট পঞ্জিকাতে দেওয়া হয়। বোধন, আরতি, পুষ্পাঞ্জলী ও বিসর্জন, সবটাই তারিখ ও দিন ধরে বলে দেওয়া আছে পঞ্জিকাতে। এটা বদলানোর ক্ষমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় কেন, ওনার ১৪ পুরুষেরও নেই। কিছু জালি হিন্দুর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় পিতৃপক্ষে দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করতে চলেছেন। গত বছরও করেছিলেন।'
এরপরই তিনি বলেন, 'অন্য ধর্মের সঙ্গে এসব করলে ট্রেন বন্ধ হয়ে যেত, বাসে ঢিল পড়ত। মারপিট লেগে যেত, সাঁতরাগাছিতে ৩৭টা বাস পুড়ত। হাজারদুয়ারিতে গোটা ট্রেন জ্বলে যেত। আমরা এগুলো সহ্য করছি। সহ্য করতে হবে কিছু করার নেই। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব। আমরা মনে করি দুর্গাপুজো শাত্রমতে, পঞ্জিকা মতে হবে। আমি যদি সঠিক হিন্দু হই, বিশুদ্ধ সনাতনী হই, বিশুদ্ধ রাষ্ট্রবাদী হই, তাহলে আমি এই পিতৃপক্ষে কোনও শুভ কাজ করব না। মহালয়ার পরে মাতৃপক্ষে শুভ কাজ করা যায়।'
স্পেন ও দুবাই সফর থেকে ফেরার পর বাড়িতেই রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদেশ সফরে গিয়ে তিনি পায়ে আঘাত পেয়েছিলেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ ছিল ১০-১২ দিন গৃহবন্দি থেকে বিশ্রাম নিতে হবে তাঁকে। ইতিমধ্যে সেই দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি মুখ্যমন্ত্রী। কাজেই এই অবস্থাতে তাঁকে গৃহবন্দি থাকতে হবে আরও কিছুদিন। ফলে তাঁর কালীঘাটের বাড়িতেই ১২ তারিখ মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই বৈঠকের পরেই তিনি ভার্চুয়ালি বেশকিছু পুজোর উদ্বোধন করবেন। তার মধ্যে বেশিরভাগ পুজো জেলার।