ডিএ (Dearness Allowance) মামলায় হাইকোর্টে ফের ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA দেওয়া নিয়ে হাইকোর্ট এর আগে যে রায় দিয়েছিল, তাই বহাল রাখল। আর সরকার সেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিল। তা খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এই রায় দেন মাননীয় বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ।
এই রায় নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুশি মলাকারী সরকারি কর্মচারি সংগঠনগুলি। তারা মনে করছেন, এর ফলে ডিএ পাওয়ার পথ প্রশস্ত হল। তাঁদের এও দাবি, রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ৩১ শতাংশ হারে যে DA বকেয়া আছে,তা পাওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
এখন প্রশ্ন কবে DA মিলতে পারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের? এই প্রশ্নের উত্তরও রয়েছে। তবে তার আগে আপনাদের জানাব,মামলা ঠিক পথে এগোল ও মাননীয় বিচারপতিরা রাজ্যের রিভিউ পিটিশনের যে আর্জি তা খারিজ করলেন।
আরও পড়ুন : পুজোর আগেই রাজ্যের DA-র নিয়ে বড় UPDATE
কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হওয়ার পর গত ২০ মে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ (DA) মিটিয়ে দিতে হবে। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। গত অগস্ট মাসেই সেই তিন মাসের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
আজ আদালতের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, 'রাজ্য সরকার যে আবেদন জানিয়েছে, তার কোনও কোনও মেরিট নেই। রাজ্যের দাবি মতো ডিএ সংক্রান্ত স্ক্রুটিনিরও আর প্রয়োজন নেই।' হাইকোর্ট আগে জানিয়েছিল, মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য। এটা তাদের অধিকার। তা থেকে তাঁদের বঞ্ছিত করা যাবে না। আজও একই কথা বলেন মাননীয় বিচারপতিরা।
কবে DA মিলতে পারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের? এই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল ও কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়। তাঁরা জানাচ্ছেন, DA দিতেই হবে সরকারকে। হয়তো সময় লাগবে কিছুটা। তবে আমাদের প্রাপ্য না দিয়ে সরকারের আর পালাবার পথ নেই।
দেবাশিস শীল বলেন, 'রায় দান যখন মাননীয়রা বিচারপতিরা করছেন তখনই সরকারের তরফে কার্যত বলে দেওয়া হয় তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। রাজ্য সরকাার সুপ্রিম কোর্টে যেতেই পারেন। তবে আমরাও তৈরি। কিন্তু গিয়ে লাভ হবে না। কারণ সুপ্রিম কোর্টে আমাদের তরফে ক্যাভিয়েট দাখিল করা আছে। আজকের মামলার রায় নিয়ে ফের ক্যাভিয়েট করা হবে দু-এক দিনের মধ্যেই। সেই কারণে রাজ্যের পথ আর খোলা নেই।'
কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, 'রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যেতেই পারে। সেটা তাদের সাংবাবিধানিক অধিকার। তবে আমরাও তৈরি। ৩ বার রাজ্য সরকারের রায় পুর্নবিবেচনার আর্জি খারিজ করল আদালত। এরপরও তারা যদি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে যায় তাহলে যাক। তবে সেখানেও লাভ হবে না বলে আমাদের বিশ্বাস।'
মলয় মুখোপাধ্যায় ও দেবাশিস শীল আরও জানালেন, ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মীরা পথে নামবেই। সেজন্য আন্দোলনের রূপরেখাও তৈরি হবে।
এখন আর একটি প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার গেলে কী হতে পারে? আইনজীবীদের একাংশ জানাচ্ছেন, মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে সময় দিতে পারে। সরকার চাইলেই স্টে অর্ডার নিয়ে আসলতে পারবে না। কারণ ক্যাভিয়েট দাখিল করে রাখছে সরকারি কর্মী সংগঠনগুলো। সুতরাং, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা চলতে পারে।
তবে সরকারি কর্মী সংগঠনগুলোর আশা, সুপ্রিম কোর্টও তাঁদের পক্ষেই রায় দেবে।