নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনে এক যুবকের রহস্যমৃত্যু ঘিরে শোকের ছায়া। মৃত যুবক সৃঞ্জয় দাশগুপ্ত ওরফে প্রীতম, যিনি বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার-এর প্রথম পক্ষের সন্তান। তাঁর হঠাৎ মৃত্যুতে ধাক্কা খেয়েছে পরিবার ও বন্ধুরা। মঙ্গলবার সকালে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়ার পর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছেলের মুখে না বলা কথাও যেন মায়ের মন বুঝে গিয়েছিল আগেই। মঙ্গলবার আরজি কর হাসপাতালের মর্গে নিথর হয়ে পড়েছিল সৃঞ্জয় ওরফে প্রীতম। বাইরে ছেলের জন্য ভেঙে পড়েছিলেন মা— বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার। চোখের কোণে শুধু জল নয়, ছিল একরাশ না বলা আক্ষেপও।
কান্নায় গলা বুজে আসে রিঙ্কুর, তবুও বলছিলেন, “গতকাল রাতেই ওঁর (দিলীপ ঘোষ) সঙ্গে কথা বলব ভেবেছিলাম ছেলেকে নিয়ে আসার বিষয়ে। কিন্তু বলা হয়নি, উনি ব্যস্ত ছিলেন।” এক মুহূর্ত থেমে আবার বলেন, “ও মুখে বলত না, কিন্তু আমি মা— বুঝতাম, ওর ইচ্ছে ছিল আমার সঙ্গেই থাকবে। আমিই বলেছিলাম, ‘তুই আমার কাছে আয়।’ ও বলেছিল, ‘তোমাদের ঘর হলে তবে নিয়ে যাবে।’ তখন বলেছিলাম, কয়েকটা দিন অপেক্ষা কর, নিয়ে যাব তোকে।”
সৃঞ্জয় যে নিজের যত্ন নিত না, সেটাও বুঝে গিয়েছিলেন রিঙ্কু। বলেন, “ও ঠিকমতো খেত না, বাইরে খেত। অফিসে যাওয়ার আগে না খেয়ে বেরিয়ে যেত। ওষুধও নিয়মিত খেত না।” জানা যাচ্ছে, সৃঞ্জয়ের নার্ভের সমস্যা ছিল, নিউরো-সংক্রান্ত ওষুধ চলছিল। একবার প্রায় দেড় বছর আগে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল সে।
রিঙ্কুর দাবি, “একাই থাকত ও। আমি বুঝতাম, ও ভাল নেই। তাই বারবার ভাবছিলাম কাছে নিয়ে আসি। ওর সহকর্মীরা গতকাল রাত ১০টা ও ভোররাত ৩টেয় ফ্ল্যাটে আসে। তারাই সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে, সৃঞ্জয় অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে।”
যদিও পুলিশ কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি, তবুও প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন সূত্রে উঠে এসেছে যে সৃঞ্জয় ঘুমের ওষুধ নিয়মিত সেবন করতেন। অতিরিক্ত ডোজের কারণে মৃত্যু হতে পারে বলেও একটি সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তেই মিলবে এই প্রশ্নের উত্তর।