দুর্গাপুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেল কার্যত। পুজো নিয়ে একাধিক ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুলিশ, প্রশাসন ও পুজো কমিটিগুলিকে নিয়ে বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের সব জেলাতেও সরাসরি বৈঠকের সম্প্রচার হয়। সেই বৈঠক থেকেও একাধিক ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। যেগুলো জেনে রাখা জরুরি।
১) ক্লাবগুলির অনুদান বাড়ানো হল : গতবার পর্যন্ত পুজো কমিটিগুলো ৬০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান পেতেন। এবার তা বাড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তিনি জানান, প্রথমে কমিটি পিছু ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হত। গত বছরে সেই টাকার পরিমাণ বেড়ে হয় ৬০ হাজার টাকা। ২০২২ সালে মোট ৪২ হাজার ২৮টি পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল। সেটাই বাড়িয়ে করানো হল ৭০ হাজার টাকা হল।
২) বিদ্যুতের বিলে ছাড় : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, সিইএসসি এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম উভয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই বছর পুজো কমিটিগুলিকে বিদ্যুতের বিলের এক চতুর্থাংশ দিতে হবে। আগে যা দিতে হত দুই তৃতীয়াংশ।
৩) আরও কোন কোন ক্ষেত্রে ছাড় : দমকলের অনুমতি থেকে দমকল পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে পুজো কমিটিগুলোকে কোনও টাকা দিতে হবে না। লাগবে না বিজ্ঞাপনের কোনও ট্যাক্সও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কোনওকিছু দিতে হবে না। আপনারা সুন্দর করে, ভাল করে পুজো করুন।'
৪) কার্নিভাল : এবার দুর্গাপুজোয় কার্নিভাল হবে। সেই কার্নিভালে থাকবে প্রতিমা। জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও জানান, এই কার্নিভাল হবে ২৭ অক্টোবর।
৫) বিসর্জনের দিন : দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন কবে করতে হবে তারও দিন নির্ধারণ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পুজো। বিসর্জন হবে ২৪ অক্টোবর অর্থাৎ দশমীর দিন থেকে। তা চলবে ২৫ ও ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত। তবে যারা কার্নিভালে অংশ নেবেন না, তাঁরাই এই দিনগুলিতে বিসর্জন করবেন।
৬) রাস্তা নিয়ে নির্দেশ : ভিড় এড়াতে আলাদা প্রবেশ পথ ও বের হওয়ার রাস্তা করার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি জানান, প্রতিটি মণ্ডপে বিদ্যুত সংযোগ, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, এসব নিয়ম মেনে করতে হবে। যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
৭) বিসর্জনে বিশেষ ব্যবস্থা :মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ, স্থানীয় প্রশাসনকে বিসর্জনের জায়গায় আলো,ব্যারিকেডের ব্যবস্থা করতে হবে। যারা জেলায় আছে, কলকাতা ছাড়াও সর্বত্র একই নিয়ম প্রযোজ্য। যদি কোনও ইমার্জেন্সি হয়, তার জন্যও তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক, নার্সের ব্যবস্থা হাতের কাছে রাখতে হবে। এর জন্য স্থানীয় হাসপাতাল, এমনকি বেসরকারি নার্সিংহোমের সঙ্গেও কথা বলে রাখতে হবে।
৮) সুজিত বোসকে ধমক : রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বোসকে ধমক দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধুমধাম করে শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়ের পুজোর জন্য যাতে এয়ারপোর্ট যাওয়ার রাস্তায় যানজট না হয়, সেই বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে, জানান মুখ্যমন্ত্রী।
৯) বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে নির্দেশ : মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এটা আমার একটি পরামর্শ, এলাকায় যত বৃদ্ধাশ্রম আছে, তাঁদের পুজোর কয়েকদিন একটু ভোগ খাওয়াবেন।'
১০) রাজ্যের প্রচার : মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, জনকল্যাণমূলক হোর্ডিং লাগাতে হবে পুজো কমিটিগুলোকে। ট্যুরিজম দফতর থেকে হোর্ডিং দেওয়া হবে। আমাদের খেল উৎসব, ইকোনমিক করিডর ইত্যাদির হোর্ডিংয়ের মাধ্যমে প্রচার করতে হবে। সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিতে হবে হোর্ডিংয়ে।