আগে তাঁর দোকানে বাজি কিনলে জবার চারা ফ্রিতে দিতেন। কিন্তু অনেকেই বিনামূল্যে পাওয়া সেই চারার মর্ম বুঝতেন না। ফেলে নষ্ট করতেন। যেকারণে আক্ষেপ হত হুগলীর পরিবেশবান্ধব বাজি বিক্রেতা সন্দীপ বসুর। তাই এবার দারুণ উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। আর চারাগাছ নয়, তাঁর বাজি পোড়ার পর তা থেকেই গজাবে গাছ। তবে এবার আর ফুলের গাছ নয়, সবজির গাছ গজানোর দুর্দান্ত উপায় বের করেছেন তিনি। পদ্ধতিটি সহজ, তবে বুদ্ধিদীপ্ত।
এবছর পরিবেশবান্ধব বাজির জয়জয়কার। এই বাজিগুলিতে ক্ষতিকারক রাসায়নিকের ব্যবহার কম হওয়ায়, সাধারণ বাজির তুলনায় প্রায় ৩০% কম দূষণ হয়। সন্দীপবাবু উত্তর কলকাতার টালা বাজি বাজারে দোকান খুলেছেন। তাঁর দোকানে মিলছে তুবড়ি, রংমশাল সহ একাধিক পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ বাজি। দাম ১০০ টাকা ও ৫০ টাকা। কিন্তু ওই বাজি থেকে কীভাবে গজাবে গাছ?
সন্দীপবাবু বললেন, 'বাজির নীচে যেমন, রঙমশালে যেখানে বালি থাকে তারমধ্যে আর কাগজের তুবড়ির নীচে, যেখানে বোর্ডের ক্যাপ দিয়ে বন্ধ করা হয় সেখানে বীজ কায়দা করে ভরা রয়েছে। কারণ বাজি পোড়ানোর পর ওই অংশটি না জ্বলে মাঠে-ময়দানে যেখানে খুশি পড়ে থাকে। ওই অংশটা জলে ভিজে গেলে বা বীজে জল পড়লে চারা বেরোবেই।'
সন্দীপবাবুর কথায়, 'বাজি পোড়ালে কিছুটা দূষণ তো হয়ই। পরিবেশবান্ধব বাজিতেও হয়। ভাবছিলাম কীভাবে এই দূষণের মাত্রা কিছুটা হলেও কমিয়ে আনতে পারি। সেই চিন্তা থেকে এর মধ্যে গাছের বীজ সংযোজনের উদ্যোগ নিই।'
এবার সব বাজিতে লঙ্কাগাছের বীজ দিয়েছেন তিনি। এর কারণ হিসেবে সন্দীপবাবু বললেন, 'লঙ্কাগাছ সকলেরই কাজে লাগবে। আর এই গাছের আলাদা করে কোনও যত্ন করতে হয় না। সহজেই বেড়ে ওঠে।'
ইতিমধ্যেই ক্রেতাদের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে এই পরিবেশবান্ধব বাজি। অনেকেই বলছেন। এরথেকে পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনা আর হতেই পারে না।
চলতি বছর কলকাতা পুলিশের এলাকায় চারটি বাজি বাজার বসছে। শহিদ মিনার সংলগ্ন মাঠ, উত্তর কলকাতার টালা, দক্ষিণ কলকাতার বেহালা ও ইএম বাইপাস লাগোয়া কালিকাপুর মাঠে বসতে চলেছে বাজির বাজার। কলকাতার সবক’টি বাজি বাজার চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত।